হ্যারিকেন মিল্টনের তান্ডবে ফ্লোরিডায় বিদ্যুৎহীন ৩০ লাখের বেশি
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:১৩ এএম, ১১ অক্টোবর ২০২৪ শুক্রবার
ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ নিয়ে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের পশ্চিম উপকূলে আছড়ে পড়েছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় মিল্টন। রাজ্যটির পশ্চিম উপকূলে সারাসোটা কাউন্টির সিয়েস্তা কি এলাকায় আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড়টি।
স্থানীয় সময় ৯ অক্টোবর বুধবার সকালে হারিকেন মিল্টন ক্যাটাগরি ৫ থেকে কিছুটা দুর্বল হয়ে ফ্লোরিডায় ক্যাটাগরি ৩ ঝড় হিসাবে আঘাত হানে। তবে কিছুটা দুর্বল হলেও ফ্লোরিডাতে তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টি।
ফ্লোরিডায় হারিকেন মিল্টনের প্রভাবে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন ৩০ লাখের বেশি গ্রাহক। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের তথ্য পর্যবেক্ষক পাওয়ারআউটেজ ডট ইউএস এ তথ্য জানিয়েছে। সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছেন হারডি কাউন্টির বাসিন্দারা। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী সারাসোটা ও মানাটি কাউন্টিতে এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
হারিকেন মিল্টনের আঘাতে রাজ্যটিতে বড় রকমের হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ফ্লোরিডা জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কেভিন গুথরি বলেছেন, হারিকেনটি স্থলভাগে আঘাত হানার আগেই প্রায় ১২৫টি বাড়ি লন্ডভন্ড করে দেয়। এর মধ্যে অনেকগুলো বাড়ি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য তৈরি করা।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানায়, ৯ অক্টোবর বুধবার রাতে স্থলভাগে আঘাত হানার প্রায় ৯০ মিনিট পরে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের অবস্থান ছিল সারাসোটা কাউন্টি থেকে প্রায় ২০ মাইল (৩০ কিলোমিটার) উত্তর-পূর্বে। এ সময় কিছুটা দুর্বল হয়ে ২ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় মিল্টন। এটির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ মাইল (১৭৫ কিলোমিটার), যা ঘণ্টায় ১৬ মাইল (২৬ কিলোমিটার) বেগে পূর্ব-উত্তর পূর্বে অগ্রসর হচ্ছিল।
ফ্লোরিডার বন্দরনগরী ফোর্ট শেয়ারে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর জলোচ্ছ্বাসের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সেখানকার রাস্তাঘাট।
ফ্লোরিডার আটলান্টিক উপকূলে ফোর্ট পিয়ার্সের কাছে স্পেনিস লেকস কান্ট্রি ক্লাব এলাকায় তাণ্ডব চালায় হারিকেন মিল্টন। ধ্বংস হয়ে যায় অনেক ঘরবাড়ি। এতে সেখানকার কয়েকজন বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে।
সেন্ট লুচি কাউন্টির শেরিফ কেইথ পিয়ারসন ডব্লিউপিবিএফ নিউজকে বলেন, ‘আমরা কিছু প্রাণ হারিয়েছি।’ তবে তিনি মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করেননি।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস জানায়, হারিকেন মিল্টনের প্রভাবে ফ্লোরিডাজুড়ে ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিধ্বংসী বৃষ্টি ও বিপজ্জনক বাতাস হতে পারে। তবে রাতে ঘূর্ণিঝড়টি আটলান্টিক মহাসাগরে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
অন্যদিকে ফেডারেল ইমার্জেন্সির মুখপাত্র জ্যাকলিন রোথেনবার্গ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে জানিয়েছেন, ফ্লোরিডায় ইতিমধ্যে ১৪০০ জন উদ্ধারকর্মী রয়েছেন। সাতটি ব্যবস্থাপনা দল, ৪০০টি অ্যাম্বুলেন্স, ২০টি হেলিকপ্টার এবং ৬০টি নৌযান প্রস্তুত রয়েছে।
এদিকে, রাজ্যের বৃহত্তম ইউটিলিটি কোম্পানি ফ্লোরিডা পাওয়ার অ্যান্ড লাইট জানিয়েছে যে প্রায় ১৭ হাজার কর্মী নিযুক্ত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে ১ জুন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত হারিকেনের মৌসুম। এবারের মৌসুমে এখন পর্যন্ত নয়টি হারিকেন আঘাত হেনেছে যার মধ্যে পাঁচটিই আঘাত হেনেছে সেপ্টেম্বরের মধ্যভাগের পরে।