সোসাইটির নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:৪৪ এএম, ১২ অক্টোবর ২০২৪ শনিবার
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন ২৭ অক্টোবর রোববার। প্রায় ১৯ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এ নির্বাচনে সেলিম-আলী ও রুহুল-মিন্টু প্যানেল সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ঘুম হারাম করে প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের আঙ্গিনায়। টেলিফোন কল, ডোর টু ডোর নক চলছে সমান্তরালে।অবশ্য ফোন কল নিয়ে ভোটাররা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। একাধিক ভোটার সোশাল মিডিয়ায় বলেছেন, সোসাইটির নির্বাচন নিয়ে রোবো কল নিযে আমরা অতিষ্ঠ।তাদের সময় জ্ঞান নাই। মধ্যরাতে কল আসে ভোট চেয়ে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় প্রচারমূলক সভাতো আছেই।
বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত ব্রুকলিনের চার্চ ম্যাকডোনাল্ডস, জামাইকা, ওজন পার্ক. জ্যাকসন হাইটস, ব্রংকসের পার্ক চেষ্টার এখন নির্বাচনী ডামাঢোলে জমজমাট। চায়ের কাপে ঝড় উঠছে নির্বাচনের চুলছেড়া বিশ্লেষনে। সভাপতি প্রার্থী আতাউর রহমান সেলিম ও রুহুল আমিন সিদ্দিকী উভয়েই সংগঠনের সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আতাউর রহমান সেলিম সিলেটের সন্তান। তাকে নিয়ে প্রবাসী সিলেটবাসীর মধ্যে নির্বাচনী আবেগ কাজ করছে। সিলেটের ভোট সেলিমের বাক্সে যাবে তা অনেকেরই ধারনা। তা ঠেকাতে রুহুল-মিন্টু প্যানেল সিলেটের সন্তান ও সোসাইটির সাবেক সভাপতি মরহুম কামাল আহমেদের মেয়ে রুমানা আহমেদকে তাদের প্যানেলে সম্পাদকীয় পদে প্যানেলে দাঁড় করিয়েছেন। তাদের এই কৌশল কতটুকু কার্যকর হয় তা দেখার জন্য ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
অন্যদিকে রুহুল আমিন সিদ্দিকী বৃহত্তর ঢাকার বাসিন্দা (মুন্সীগঞ্জ)। এ অঞ্চলের মানুষের ভোট ক্যাশ করতে তিনি মরিয়া। তাকে সরাসরি সর্মথন করেছেন সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ। কমিউনিটিতে বলাবলি আছে, ১ যুগ ধরে তিনি সোসাইটিকে নিয়ন্ত্রন করছেন। তার সর্মথন ছাড়া নাকি নেতৃত্ব নির্বাচিত হতে পারে না। তার ভূমিকা নিয়ে পক্ষ বিপক্ষ সমালোচনা রয়েছে। রুহুল-মিন্টু প্যানেলের বিপরীতে সেলিম-আলী পরিষদের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আলী। কমিউনিটির পরিচিত মুখ। বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কোষাধ্যক্ষ। গত নির্বচনেও সাধারন সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন। অল্পভোটের ব্যবধানে হেরে যান। অতীত অভিজ্ঞতার বিচারে তিনি একজন শক্তিশালী প্রার্থী। বৃহত্তর ঢাকার অধিবাসী (নারায়নগঞ্জ) হিসেবে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের ভোট টানতে তিনিও মরিয়া। এলাকার আবেগকে তিনি কাজে লাগাতে চান। মূলধারার রাজনীতির সাথে তিনি জড়িত। কমিউনিটি বোর্ড সদস্য। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। তিনি আজকালকে বলেন, এই নির্বাচনে ৬ বার ভোটার লিস্ট পরিবর্তন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান কমিটির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আমরা একটি অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি।
মোহাম্মদ আলীর বিপরীতে সাধারন সম্পাদক পদে লড়ছেন জাহিদ মিন্টু। বৃহত্তর নোয়াখালীর বাসিন্দাদের মধ্যে তিনি জনপ্রিয়। গত নির্বাচনে রব-রুহুল প্যানেলের বিজয়ের কারিগড় ছিলেন তিনি। ব্রুকলিন কেন্দ্রের ভোট ক্যারিসমায় তিনি বিজয়ের মালা পড়িয়ে দিয়েছিলেন রব-রুহুলের গলায়। নোয়খালী অঞ্চলের অধিকাংশ ভোটার কেন্দ্রে আনতে তার পরিশ্রম ছিল লক্ষ্যনীয়। এবার জাহিদ মিনটু নিজেই সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী। কমিউনিটিতে ব্যাপকহারে তার পরিচিতি নেই। কিন্তু ব্রুকলিন ও নোয়াখালীর ভোটারদের মধ্যে তার গ্রহনযোগ্যতা ব্যাপক। ব্রংকস, জামাইকা ও জ্যাকসন হাইটস এলাকায় তিনি ব্যাপক প্রচারনা চালাচ্ছেন। তিনি নোয়াখালি সমিতির সাবেক সফল সাধারন সম্পাদক। তিনি বলেছেন, সোসাইটিতে নির্বাচিত হলে ৩ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ কমিউনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেবেন।
প্রতিবেদক বাংলাদেশি ভোটারদের সাথে কথা বলেছেন। ব্যাপক উৎসাহ রয়েছে ভোটারদের মধ্যে। বেশীর ভাগ ভোটার সেলিম-আলী প্যানেলের বিজয়ের সম্ভাবনা দেখছেন। তাদের মতে, সেলিম-আলী প্যানেলের অধিকাংশ প্রার্থীই সৎ ও যোগ্য।