এভারেস্টে আবিষ্কৃত পায়ের খণ্ডাংশে লেখা ‘এসি আরভিন’ কে?
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:৫৮ এএম, ১৪ অক্টোবর ২০২৪ সোমবার
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের একটি দল সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে মাউন্ট এভারেস্টের গলিত হিমবাহ থেকে বেরিয়ে আসা একটি বুট এবং মোজা আবিষ্কার করে। যার গায়ে সেলাই করা লাল অক্ষরে লেখা ছিল ‘এসি আরভিন’। তখন তারা এটিকে শতাব্দী প্রাচীন রহস্যের সূত্র হিসেবে মনে করে।
তাদের ধারণা এতে ২২ বছর বয়সী অ্যান্ড্রু কোমিন আরভিনের দেহাবশেষ থাকতে পারে। ইংল্যান্ডের বার্কেনহেডের প্রতিভাবান প্রকৌশলী কিন্তু অনভিজ্ঞ পর্বতারোহী আরভিন, যিনি স্যান্ডি নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন।
এই ব্রিটিশ পর্বতারোহী ১৯২৪ সালের ৮ জুন স্বদেশি জর্জ ম্যালোরির সঙ্গে এভারেস্টে আরোহনে গিয়ে নিখোঁজ হন। তারা এভারেস্টে পৌঁছাতে পেরেছিলেন কিনা তা এখনো অজানা। ১৯৯৯ সালে ম্যালোরির মৃতদেহ আবিষ্কৃত হলেও, আরভিনের দেহ বা যে ক্যামেরাটি বহন করছিলেন তার কোনোটিই খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে তারা শিখরে পৌঁছেছে কিনা তা প্রকাশিত হয়নি আজও।
বছরের পর বছর অনেকেই আরভিনের লাশের সন্ধান করেছেন। এর আংশিক কারণ ছিল, সম্ভবত ২২ বছর বয়সী ওই পর্বতারোহীর কাছে থাকা ক্যামেরায় কিছু ভিডিও ছিল। তাতে তার আর ম্যালোরির এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার ছবি থাকতে পারে।
আবিষ্কৃত এ জুতাটির সূত্র ধরে পাওয়া যেতে পারে পর্বতারোহণের বৈশ্বিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর একটির সমাধান। ১৯৫৩ সালে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের বুকে প্রথম পা রাখেন এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নরগে। কিন্তু এরও ২৯ বছর আগেই আরভিন ও ম্যালোরি এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিলেন কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া যেতে পারে জুতাটির সূত্র ধরে।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের প্রামাণ্য চলচ্চিত্রনির্মাতা দলের নেতৃত্বে ছিলেন পর্বতারোহী জিমি চিন। তিনি বলেন, জুতাটির ভেতরে একটি পায়ের খণ্ডাংশ ছিল। এ আবিষ্কারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জিমি বলেন, ‘এটি ছিল স্মরণীয় ও আবেগঘন মুহূর্ত।’ চিন বলেন, ‘স্যান্ডি কোথায় গিয়ে থেমেছিল, তার প্রথম বাস্তব প্রমাণ এটি।
তাদের আবিষ্কারের অল্প সময়ের মধ্যেই দলটি আরভিনের পরিবারকে অবহিত করেছিল। যার মধ্যে তার ভাতিজি জুলি সামার্সও ছিল, যিনি পর্বতারোহী সম্পর্কে একটি বই লিখেছেন।
পিএ মিডিয়া নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়, বুটের অস্তিত্বের কথা জানতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন সামার্স। তিনি বলেন, ‘সাত বছর বয়স থেকে বাবা যখন এভারেস্টে স্যান্ডি আঙ্কলের রহস্য সম্পর্কে আমাদের বলেছিলেন, তখন থেকেই আমি এই গল্পের সঙ্গে বসবাস করছি।’