রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নারায়ণগঞ্জে মহাসড়কে দিনভর যানজট-যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:৪৭ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ শনিবার

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে ১২ কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে শুক্রবার দিনভর তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে আটকা পড়ে দূরপাল্লার শত শত যাত্রীবাহী বাস, কাভার্ড ভ্যান, পণ্যবাহী ট্রাকসহ নানা ধরনের যানবাহন। যানজটের কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় জেলাগুলোর যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হন।

অবশ্য ট্রাফিক পুলিশ বলছে, একটানা তিনদিনের ছুটি হওয়ায় শুক্রবার মহাসড়কে যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যায়। একই সময়ে দ্বিতীয় কাঁচপুর ও মেঘনা সেতুর নির্মাণকাজের কারণে এক লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল করায় মেঘনাঘাট থেকে যানজট শুরু হয়। এ যানজট শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে শুরু হয়। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সোনারগাঁ অংশে যানজট অব্যাহত ছিল বলে সোনারগাঁ থানার ওসি জানান।

ট্রাফিক পুলিশ ও ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে মেঘনা সেতু এলাকায় শুরু হয় যানজট। তা ধীরে ধীরে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা, মদনপুর, কাঁচপুর, শিমরাইল মোড়, মৌচাক, সানারপাড় ও সাইনবোর্ড পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে ক্ষেত্রবিশেষে ১০ মিনিটের রাস্তা পার হতে হয় ৩-৪ ঘণ্টায়। নারায়ণগঞ্জ অংশে যানজটের খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জের হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ এসে যানজট নিরসনে কাজ করে। যানজটের কারণে নির্ধারিত দূরপাল্লার বাস সময়মতো আসতে না পারায় শিমরাইল মোড়ের টিকিট কাউন্টারগুলোয় যাত্রীর ভিড় বেড়ে যায়। কাউন্টারগুলোয় যাত্রীদের বাসের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

চট্টগ্রামগামী যাত্রীবাহী বাসের চালক আলমগীর হোসেন বলেন, যানজটের কারণে ঢাকা থেকে মেঘনাঘাট পৌঁছতে ৬ ঘণ্টা সময় লেগেছে। চট্টগ্রামে যেতে কত সময় লাগে আল্লাহ জানেন। ফেনীর যাত্রী আবু বকর বলেন, সকাল ৭টায় ফেনী যাওয়ার জন্য শিমরাইল মোড়ে এসেছি। কিন্তু ৭টার গাড়ি দুপুর ১২টায়ও যানজটের কারণে আসতে পারেনি। এভাবেই যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থেকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ট্রাফিক পুলিশের টিআই (প্রশাসন) মোল্যা তাসলিম হোসেন জানান, শুক্রবার ভোরে সোনারগাঁর মেঘনাঘাট থেকে যানজট শুরু হয়। তা ধীরে ধীরে মেঘনাঘাট থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। তবে বিকালের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। তিনি আরো জানান, শুক্র, শনি ও রোববার একটানা তিনদিন অফিস-আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মহাসড়কে যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। এছাড়া দ্বিতীয় কাঁচপুর ও দ্বিতীয় মেঘনা সেতু নির্মাণের কারণে এক লেন দিয়ে পুরনো সেতুতে একটি করে যানবাহন উঠতে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে যানজট।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, শুক্রবার ভোর থেকেই মহাসড়কে প্রচণ্ড যানজট সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সোনারগাঁ অংশে যানজট অব্যাহত ছিল। তিনি বলেন, সেতু নির্মাণের কারণে রাস্তার প্রশস্ততা কমে এসেছে। তাই একটি করে যানবাহন সেতুতে উঠতে গিয়ে এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাইয়ুম আলী সরদার বলেন, ভোর থেকে গাড়ির চাপ রয়েছে। গাড়ি মহাসড়কে থেমে ছিল না। এখনো গাড়ির চাপ রয়েছে। শুক্রবার হওয়ায় গাড়ি ও যাত্রীর সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে। গন্তব্যে যাওয়ার জন্য অসংখ্য যাত্রী এখনো কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছে।