বাংলাদেশের অস্থিতিশীলতায় চাঙ্গা হচ্ছে ভারতের তৈরি পোশাক খাত
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:৪৮ এএম, ২২ অক্টোবর ২০২৪ মঙ্গলবার
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কাজে লাগিয়ে ভারতের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত শক্তিশালী হচ্ছে। এমনকি বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি অংশীদারিত্বও ভারতীয় রপ্তানিকারকদের দখলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ চিত্র পরিষ্কারভাবে উঠে এসেছে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের ভারতের রপ্তানির পরিসংখ্যানে, যেখানে দেখা যায়, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ভারতের পোশাক রপ্তানি ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে ভারতে অর্ডার দিচ্ছে। খবর টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার।
সোমবার (২১ অক্টোবর) ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, এমন সময় এই প্রবৃদ্ধি ঘটেছে যখন বেশিরভাগ রপ্তানিকারক দেশ মন্দার মুখোমুখি। মুদ্রাস্ফীতি, সরবরাহ চেইনের বিঘ্নসহ বৈশ্বিক নানা সংকট থাকা সত্ত্বেও ভারতের এই অগ্রগতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার বড় ভূমিকা রয়েছে।
ভারতের অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (এইপিসি) চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি বলেন, ‘‘বিশ্বজুড়ে নানা সংকটের মধ্যেও ভারতীয় পোশাক রপ্তানি দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে অন্য দেশগুলো মন্দার মুখে পড়েছে।’’
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক হলেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে কিছু কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। *কেয়াররেটিংস* এক প্রতিবেদনে সতর্ক করেছে, এই অস্থিরতা দীর্ঘ হলে রপ্তানি কার্যক্রমে সময়মতো ডেলিভারি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। এতে ভারত প্রতিমাসে ২০০ থেকে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত অর্ডার পেতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারতীয় রপ্তানিকারকদের অপারেশনাল দক্ষতার কারণে তারা স্থায়ীভাবে বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান দখল করতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতি ভারতকে বৈশ্বিক বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও প্রসারিত করার সুযোগ এনে দিয়েছে।
এই সুযোগ কাজে লাগাতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ এবং *ভারত টেক্স-২০২৫* আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। সুধীর সেখরি জানান, বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ও কেনাকাটার পরামর্শকদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক করেছেন তারা, যা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক গড়ার আগ্রহ নির্দেশ করে।
এইপিসি জানিয়েছে, ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও ঐতিহ্য তুলে ধরতে তারা স্পেন ও নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক রোডশো আয়োজন করবে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মিথিলেশ্বর ঠাকুর বলেন, ‘‘বর্তমানে ভারতকে পছন্দের সোর্সিং গন্তব্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আমাদের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্ক ছাড়িয়েছে।’’
ভারতের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করা দেশগুলোতেও এই প্রবৃদ্ধি উৎসাহিত হয়েছে। এফটিএ অংশীদার দেশগুলো ভারতের তৈরি পোশাক খাতের জন্য নতুন বাজারের পথ তৈরি করছে, যা খাতটির টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করছে।