সোমবার   ১৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৩ ১৪৩১   ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অনথিভুক্ত অপরাধীদের বহিষ্কার করবে যুক্তরাষ্ট্র

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৫৫ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ সোমবার

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অন্তত এক কোটি ৩০ লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসী এখন এক অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন এবং তার গণনির্বাসনের প্রতিশ্রুতির পর অনেকেই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে এমন অভিবাসীরা যারা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত নন, তাদের মধ্যে ভয় এবং বিভ্রান্তি বিরাজ করছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা বলিভিয়ার অভিবাসী গ্যাব্রিয়েলা মনে করেন, এই নির্বাসন কেবল অপরাধীদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রে দুই দশক ধরে বসবাসকারী এই গৃহকর্মী বলেন, ‘আমি কর দিই এবং সৎ পথে কাজ করি। এটি অপরাধীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমি একটুও ভীত নই।’

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনথিভুক্ত অভিবাসীরা বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তাদের সম্প্রদায়, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে। গ্যাব্রিয়েলার মতো কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, এটি তাদের মোটেও প্রভাবিত করবে না।

তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, বাস্তবে এমন অভিবাসীরাও ঝুঁকিতে পড়তে পারেন, যারা অপরাধমূলক রেকর্ড ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের পলিসি ডিরেক্টর অ্যারন রেইচলিন-মেলনিক বলেছেন, আমরা আগেও দেখেছি যে কর্মক্ষেত্র বা বাড়িতে অভিযান চালানোর সময় অনেক অনথিভুক্ত অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে সরকারের প্রধান লক্ষ্য ছিলেন না।

সদ্য নির্বাচনী প্রচারণায় অভিবাসনকে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে দেখা গেছে। ট্রাম্প তখন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি যদি প্রেসিডেন্ট পদে ফিরে আসেন তাহলে প্রথম দিন থেকেই ব্যাপকভাবে অভিবাসীদের নির্বাসিত করবেন। কিন্তু নির্বাচনে জয়লাভের প্রায় দুই সপ্তাহ পরও এই অভিবাসন এনফোর্সমেন্ট অপারেশনগুলো ঠিক কেমন হবে তা স্পষ্ট নয়।

ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা এবং সীমান্ত থেকে দূরবর্তী অঞ্চলে অভিবাসন আইনের প্রয়োগ। ইতোমধ্যে নির্বাচনের পর বন্দিশিবির পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ট্রাম্পের রানিংমেট জেডি ভ্যান্স এর আগে বলেছিলেন, প্রায় ১ মিলিয়ন লোককে নির্বাসিত করার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

মার্কিন কর্তৃপক্ষের অভিবাসীদের বিতাড়িত করার ঘটনা নতুন কিছু নয়। কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন জো বাইডেন প্রশাসনের আমলে দেড় মিলিয়নেরও বেশি লোককে বহিষ্কার করা হয়েছে। বারাক ওবামার আট বছরের প্রশাসনের সময় প্রায় ত্রিশ লাখ লোককে নির্বাসিত করা হয়েছিল।