রোববার   ০১ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৬ ১৪৩১   ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্কুলছাত্রকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:১০ এএম, ১ ডিসেম্বর ২০২৪ রোববার

কক্সবাজারের টেকনাফ থানার ওসির বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে অস্ত্র দিয়ে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি, অস্ত্র হাতে ধরিয়ে জোর করে শিশুটির স্বীকারোক্তি আদায় করেছেন ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। এর পর মামলা দিয়ে তাকে আদালতে তোলা হয়। আদালত শিশুটিকে কারাগারের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন।

ওসিকে প্রত্যাহার ও শিশুটির মুক্তি চেয়ে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেছেন উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থীরা।

পুলিশের করা মামলায় বলা হয়েছে, গত ২৬ নভেম্বর ভোরে পুলিশ খবর পায়, হ্নীলার দরগাহপাড়া এলাকায় দুই ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় একজনকে তার হাতে থাকা শপিং ব্যাগসহ আটক করা হয়। ব্যাগে কী আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অস্ত্র ও গুলি আছে। সাক্ষীদের সামনে ব্যাগ তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি ও ৪০ রাউন্ড কার্তুজ পাওয়া যায়।

তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ওই স্কুলছাত্রকে তাদের চোখের সামনেই আটকের নাটক মঞ্চস্থ করে পুলিশ। তার বাড়িতে তল্লাশি করে কিছুই পায়নি। একজনের বাড়ি থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। তখন এলাকাবাসী ১৪ বছরের শিশুটিকে দাঁড়িয়ে কান্না করতে দেখেন। এর পর তার বাবার অস্ত্র বলে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয় পুলিশ।

এক সাক্ষী বলেন, ‘আমি ফজরের নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে যাচ্ছিলাম। এ সময় একজন ওসি পরিচয় দিয়ে দাঁড় করান। তখন এক শিশুকে তার বাড়ি থেকে নিরস্ত্র অবস্থায় বের করে আনতে দেখি। ওসি অস্ত্রসহ তাকে আটক করার কথা বলে সাদা কাগজে আমাকে সই দিতে বলেন। আমি সই করতে না চাইলে ধমক দেন।’

ভুক্তভোগীর বাবা উপজেলা যুবলীগের সদস্য। তিনি বলেন, ‘মূলত রাজনৈতিক এবং নির্বাচন নিয়ে একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে আমাকে না পেয়ে আমার শিশুপুত্রকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তার কাছ থেকে জোর করে অস্ত্র উদ্ধারের স্বীকারোক্তি নিয়েছে পুলিশ। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। আমার ছেলে তিনবার বৃত্তি পেয়েছে। চলমান বার্ষিক পরীক্ষায় আমার ছেলে অংশ নিতে পারল না। এ ঘটনায় সরকারের কাছে তদন্তপূর্বক মামলা প্রত্যাহার ও আমার সন্তানের মুক্তি দাবি করছি।’
 
ওসি গিয়াস উদ্দিনের দাবি, সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ওই শিশুর কাছ থেকে অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের স্বীকারোক্তি আদায়ের ভিডিও কীভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

এদিকে ওসি গিয়াস উদ্দিনকে প্রত্যাহার, শিশুটির মুক্তিসহ ১০ দাবিতে আজ রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাবিতে পড়ুয়া উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। তাদের সংগঠন ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব উখিয়া-টেকনাফ (ডুসাট)’ মানববন্ধন আয়োজন করে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।