যুদ্ধের উসকানি দিল্লির
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৮:১৩ এএম, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

- বিগ ব্রাদারে বিগ ডিল
- মোদি-মমতার অভিন্ন অবস্থান
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে। হোটেলগুলোতে বাংলাদেশি পর্যটকদের থাকা নিষিদ্ধ করা, খাবার বিক্রি বন্ধ করা, এমনকি কিছু হাসপাতালে চিকিৎসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর আলু-পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের হুমকি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
প্রশ্ন হলো, এসব কি শুধু কথার কথা, নাকি ভারত আরও কিছু গভীর পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে? অতীতে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, এবং মিয়ানমারে ভারতের সামরিক হস্তক্ষেপের নজির থাকায় বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ সরকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে কূটনৈতিক পরিপক্বতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। কিন্তু ভারতের রাজনৈতিক অবস্থান ও কৌশল নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকারকে চাপের মুখে ফেলতে এবং বাংলাদেশের ভেতরে বিভেদ তৈরিতে ভারত যেন নিয়ত সক্রিয়।
ভারতের বর্তমান হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কোণঠাসা করার কৌশল নিচ্ছে। চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার পেছনে ইসকনের সম্পৃক্ততা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরির প্রচেষ্টা তারই উদাহরণ। এতে দুই দেশের উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোকে প্ররোচিত করার চেষ্টা স্পষ্ট।
অন্যদিকে, বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নিয়েছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি এবং ক্ষমতাসীন দলের সুবিধাভোগী চক্রগুলোর মধ্যে বিভাজন ক্রমশ গভীর হচ্ছে। শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানালেও সরকারের ভূমিকা এ বিষয়ে অস্পষ্ট।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি স্পষ্ট করেছে যে, বাংলাদেশে সরকারের কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরি। ভারতীয় উসকানি ও অভ্যন্তরীণ চাপে কেবল সময় ক্ষেপণ করলে দীর্ঘমেয়াদে সংকট আরও ঘনীভূত হবে। জাতীয় সংহতি বজায় রাখা এবং কূটনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থান নেওয়াই এ উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চাবিকাঠি।