বাংলাদেশ সোসাইটির অভিষেক
ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান মেয়র এডামসের
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৩:২২ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ শনিবার
বাংলাদেশের ৫৪ তম বিজয় দিবস গত ১৬ ডিসেম্বর দায়িত্ব নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাদার সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচিত নতুন কমিটি। সোসাইটির ১৯ সদস্যের নতুন কমিটি সেলিম-আলী পরিষদের (২০২৫-২০২৬) অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামস। তিনি ভেদাভেদ ভুলে বাংলাদেশী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলেনের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরে সংগঠনের প্রয়াত সকল নেতৃবৃন্দ ও সদস্যকে স্মরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে মেয়র এডামস ছাড়াও সিনেটর জন ল্যু, নিউইয়র্ক স্টেটে অ্যাসেম্বলি ওম্যান জেনিফার রাজকুমার, বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা, কম্যুনিটি লিডার ও আজকাল সম্পাদক শাহ নেওয়াজ, সোসাইটির নতুন সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী এবং সিটি মেয়রের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মীর বাশার অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তেব্য রাখেন।
নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে গঠিত নতুন কার্যকরী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে হাজার খানেক প্রবাসীর উচ্ছ্বল উপস্থিতিতে আয়োজন হয়ে প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠে। মেয়র এডামসের উপস্থিতি তাদের উচ্ছাস আরো বাড়িয়ে দেয়।
অতিথির বক্তব্যে মেয়র এডামস কমিউনিটির কল্যাণে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। একই সঙ্গে বহুজাতিক সমাজে নিজেদের মর্যাদা ও অধিকার আদায়ের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে সোসাইটিকে সাইটেশন প্রদান করেন। অভিষিক্তদের প্রত্যাশার পরিপূরক সকল কাজে সিটির সহযোগিতা অব্যাহত থাকার কথা জানান তিনি।
এডামসের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিবাদ-বিভক্তি পরিহার করে পরস্পরের সহযোগী হয়ে কমিউনিটির সার্বিক কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার করেন নতুন সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম। এছাড়া নিউইয়র্কে একটি বাংলাদেশ সেন্টার প্রতিষ্ঠার সংকল্পও করে নতুন কমিটি।
নিউইয়র্ক স্টেটে প্রথম দক্ষিণ এশিয়ান-নারী জেনিফার রাজকুমার বলেন, তিনি সবসময়ই বাংলাদেশিদের পাশে রয়েছেন। সেই সুবাদে সামনে নিউইয়র্ক সিটি কম্পট্রোলার পদে লড়ার সময়েও বাংলাদেশিদের অকুণ্ঠ সমর্থন আশা করেন। সিটি, স্টেট, ফেডারেল পর্যায়ের সকল নির্বাচনে কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি।
অভিষেক অনুষ্ঠান শেষে নতুন কমিটির আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল। আলোচনায় বিজয় দিবসের তাৎপর্যসহ সাংগঠনিক আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম বলেন, আমরা ৩ বার বিজয় অর্জন করেছি ৩ রকমের। এক সময় স্বাধীন দেশে কথা বলার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। সেবা দাসের একটি গোষ্ঠিতে পরিণত করা হয়েছিলো। যারা লুন্টন করেছে, নারী নির্যাতন করেছে, গুম হত্যা করেছে, দেশে অর্থ বিদেশে পাচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে এই বিজয়।
তার বক্তব্যের সময় আওয়ামী লীগ নেতা-সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। তারা চিৎকার চেচামেচির পাশপাশি মঞ্চের দিকে তেড়ে যায়। এক পর্যায়ে বিএনপি সমর্থকরাও প্রতিবাদ করে। অনুষ্ঠানস্থলে ধাক্কাধাক্কি- হাতাহাতিও ঘটে। নব নির্বাচিত সভাপতি আতাউর রহমান সেলিমসহ আয়োজকরা বারবার অনুরোধ করলেও তারা শান্ত হয়নি। এক পর্যায়ে মেয়র এরিক অ্যাডামস আসার খবরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
দুই পর্বে ছিলো এই অনুষ্ঠানে প্রথম পর্বে বিজয় দিবস উপলক্ষে কুইজ ও ব্রুকলীন বাংলা স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা কবিতা পাঠ করে।
দ্বিতীয় পর্বে ছিল অভিষেক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী সভাপতি আব্দুর রব মিয়া। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সদস্য সচিব মাইনুল উদ্দিন মাহবুব। নির্বাচিতদের শপথ বাক্য পাঠ করান নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান এডভোকেট জামাল আহমদ জনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য আব্দুল হাকিম মিয়া, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মান্নান, মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান বাদল, আহবাব চৌধুরী খোকন।
অভিষিক্তরা হলেন- সভাপতি- আতাউর রহমান সেলিম, সিনিয়র সহ সভাপতি- মহি উদ্দিন দেওয়ান, সহ সভাপতি- কামরুজ্জামান কামরুল, সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী, সহ সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ভুইয়া, কোষাধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম ভুইয়া (রুমি), সাংগঠনিক সম্পাদক ডিউক খান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অনিক রাজ, জন সংযোগ ও প্রচার সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জামিল আনসারী, সাহিত্য সম্পাদক মোহাম্মদ আখতার বাবুল, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক আশ্রাব আলী খান লিটন, স্কুল ও শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান (জিলানী), কার্যকরি সদস্য মোহাম্মদ সিদ্দিক পাটোয়ারী, হারুন চেয়ারম্যান, আবুল কাশেম চৌধুরী, জাহাঙ্গীর শহিদ সোহরাওয়ার্দী, মুনসুর আহমদ ও হাছান খান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধান সমন্বয়কারী ফারহানা চৌধুরী, ফারুক চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদব আব্দুর রহিম হাওলাদার, সাবেক সেক্রেটারী মোহাম্মদ হোসেন খান, সাবেক সভাপতি আখতার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, অভিষিক্ত কোষাধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম ভুইয়া রুমী, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম এ আজিজ প্রমুখ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, বিদায়ী সহ সভাপতি ফারুক চৌধুরী, বিদায়ী কার্যকরি সদস্য ফারহানা চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আখতার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন খান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার, লায়ন্স ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহসান হাবীব।