বৃহস্পতিবার   ৩০ জানুয়ারি ২০২৫   মাঘ ১৭ ১৪৩১   ৩০ রজব ১৪৪৬

‘আমার বাড়িটা আর নেই’, ঘরে ফেরা ফিলিস্তিনির আর্তনাদ

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৪১ এএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ বুধবার

বিধ্বস্ত গাজার উত্তরে ফিরতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা। তবে সেখানে আর ঘর নেই। আছে শুধু ধ্বংসের স্তূপ। তবুও যুদ্ধ বন্ধের পরপরই নিজ ভূমিতে ছুটে এসেছেন বাস্তচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। ফিরেই নিজের মিশ্র অনুভূতি প্রকাশ করেছেন ৪৪ বছর বয়সি সাবরাইন জানুন। বিবিসিকে বলেছেন, আমরা আবার আমাদের পরিবার ও স্বজনদের দেখতে পেয়ে খুশি। তবে সেই সঙ্গে কান্নাও আসছে। কারণ আমার বাড়িটা আর নেই।

সোমবার উত্তর গাজায় নিজেদের ভিটেতে ফেরা লাখো ফিলিস্তিনিরই একজন সাবরাইন। সম্প্রতি ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর গাজার বিভিন্ন অংশে আশ্রয় নেওয়া মানুষরা নিজ এলাকায় ফিরতে শুরু করেন। ১৫ মাস ধরে যুদ্ধ চলার পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় এ যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর গাজার অন্যান্য বাসিন্দাদের মতো সাবরাইনও কয়েকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তিনি সর্বশেষ মধ্য গাজার দেইর আল–বালাহ এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হন।  যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার পর সোমবার সকালে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফিরতে উপত্যকার উপকূলীয় সড়ক ‘আল–রশিদ স্ট্রিট’ খুলে দেয় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। এ সময় বাড়িমুখী মানুষের ঢলে শামিল হন সাবরাইন।

গাজার একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, দুই ঘণ্টায় দুই লাখের বেশি ফিলিস্তিনি এ সড়ক ধরে উত্তরাঞ্চলে ফিরেছেন। ওই এক দিনেই তিন লাখ ফিলিস্তিনি ধ্বংস হওয়া ফিরেছেন বলে জানা গেছে।

যুদ্ধবিরতি হলেও চরম সংকটে আছেন বাসিন্দারা। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশুরা। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ এবং কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে সেখানকার গর্ভবতী নারী ও নবজাতকদের জীবন চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরাইলি বাহিনীর হামলা এবং এর সঙ্গে যুক্ত অবরোধের কারণে স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য ও পানীয় জলের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। গর্ভবতী নারীরা হাসপাতাল থেকে দ্রুত বেরিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। আর নবজাতকরা প্রয়োজনীয় যত্ন পাচ্ছে না। নবজাতক শিশুদের জন্য ইনকিউবেটর এতটাই কম যে এক ইনকিউবেটরে চার থেকে পাঁচটি শিশু রাখতে হচ্ছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই শিশুগুলোর বেশিরভাগই পর্যাপ্ত চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে। শীতের তীব্র ঠাণ্ডায় আশ্রয়ের অভাবে অনেক নবজাতকের মৃত্যু হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, ইসরাইল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করছে।