রোববার   ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   মাঘ ১৯ ১৪৩১   ০৩ শা'বান ১৪৪৬

‘আইস’ পুলিশ অভিযানে কাঁপছে জনপদ

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ১০:৩৩ এএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ শনিবার

  •     দিনে ১৮শ’ গ্রেফতারের টার্গেট
  •     ৪ বাংলাদেশি গ্রেফতার

 

 
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশনার পর যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে অবৈধ এবং তালিকাভুক্ত অপরাধিদের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট ‘আইস’ পুলিশের সাঁড়াশি গ্রেফতার অভিযান জোরদার করা হয়েছে। অভিযানে ফেডারেল বিভিন্ন এজেন্সি ‘আইস’কে সহযোগিতা দিচ্ছে। অব্যাহত ‘আইস’ অভিযানের ফলে এখন কাঁপছে জনপদ। আগের মতো কমিউনিটির আড্ডা আর দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না জ্যাকসন হাইটস এবং জ্যামাইকা এলাকায়। যারা আনডকুমেন্টেড অভিবাসি হিসেবে রয়েছেন তাদেরকে চলাচল করতে হচ্ছে অনেকটা সাবধানতার সাথে। জরিমানার ভয়ে মালিকপক্ষ আনডকুমেন্টেড অভিবাসিদের কাজে যোগ দিতে নিষেধ করছেন বলে জানা যায়। এর ফলে বাংলাদেশি কমিউনিটিসহ অন্যান্য কমিউনিটিতে জেঁকে বসেছে আতঙ্ক। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অসংখ্য মানুষ এখন দুশ্চিন্তায় প্রহর কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। নিউইয়র্কে স্কুল, চার্চ এবং হাসপাতালে অবৈধ অপরাধিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবার জন্য সিটি কর্তৃপক্ষের সবুজ সংকেত রয়েছে। ফলে ‘আইস’ পুলিশ এসব স্পর্শকাতর স্থানে জিজ্ঞাসাবাদ জোরদার করতে পারে। ইতোমধ্যে ৭ হাজার ৫শ’ অবৈধদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত অবৈধ অপরাধি অভিবাসিদের সামরিক বিমানে করে কলম্বিয়া, মেক্সিকো এবং গুয়েতেমালায় তাদের নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে। তবে মেক্সিকো সরকার তাদের অবৈধ নাগরিকদের গ্রহণ করতে অপারগতা জানায়। একইভাবে কলম্বিয়া সরকার তাদের নাগরিকদের গ্রহণ করতে চায়নি। ফলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই দেশের বিরুদ্ধে  ট্যারিফ আরোপ করা এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে বলে এমন ঘোষণা দিলে কলম্বিয়া সরকার নমনিয়তা প্রকাশ করে। যদি কোন দেশ তাদের অবৈধ অপরাধি অভিবাসিকে গ্রহণ না করে তবে তাদেরকে পানামার দুর্গম দ্বীপে নির্বাসিত করা হবে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর দ্বারা পরিচালিত কিউবার ভয়ঙ্কর গোয়ান্তানামো বে কারাগারে পাঠাবার নির্দেশ ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দিয়েছেন।
গত ২৮ জানুয়ারি এবং ২৯ জানুয়ারি রাতে নিউইয়র্কের ব্রঙ্কস, ম্যানহাটন এবং জ্যাকসন হাইটস এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। এক রাতে ব্রঙ্কসের পাঁচ স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। এ সময় ‘এমএস থার্টিন’ গ্যাং সদস্যসহ অনেক অপরাধিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির প্রধান ক্রিসটি নঈম অভিযানের সময় নিউইয়র্কে ঘটনাস্থলে থেকে তা পর্যবেক্ষণ করেন বলে জানা গেছে। এক রাতের অভিযানে ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। নিউইয়র্কে অভিযানে প্রথম দিনই বাংলাদেশি যুবক সাব্বির আহমদকে গ্রেফতার করা হয়েছে জ্যাকসন হাইটস এলাকায় তার বাসা থেকে। গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য মতে সাব্বিরকে রাখা হয়েছে পেনসিলভানিয়ার একটি শেল্টারে। এছাড়া নিউইয়র্ক থেকে তিনজন ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। যারা স্টুডেন্ট ভিসার বিধি লঙ্গন করে কাজ করছিলেন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকী একজনকে ‘আইস’ পুলিশ ডিটেনশন সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। যাদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে না গিয়ে নিয়মিত কাজ করছিলেন। এমন তথ্য জানিয়েছেন আমেরিকান বার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এবং আমেরিকা সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী।
অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এমন সিটিগুলো হয়েছে- ডালাস, হিউস্টন, ডেনভর, নিউ অরলিন্স, মায়ামি, শিকাগো, নিওয়ার্ক, নিউইয়র্ক সিটি, আটলান্টা, সানএন্টানিউ, লসএঞ্জেলেস, বোস্টন, হার্লিনজেন, ফেলাডেলফিয়া। একটি নিরাপদ স্থান গড়ার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে অপরাধিদের বিরুদ্ধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউস সেক্রেটারি ক্যারলিন ল্যাভিটি।