বিএনপি- জামায়াত প্রেমে রণভঙ্গ?
আজকাল রিপোর্ট -
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৬:৩৯ এএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ শনিবার

- জামায়াতে ইসলামী মুনাফেক:রিজভী
- রিজভীর বক্তব্য জাতীয় ঐক্য বিরোধী:জামাত নেতা মতিউর
বিএনপি ও জামায়াতের মধুচন্দ্রিমা সাঙ্গ হবার পথে। পথ পরিক্রমায় রাজনীতির এই ২ মিত্রশক্তি ভিন্ন পথে হাঁটতে শুরু করেছে। আর এর মূল কারণ আগামীতে শাসন ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতা। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অনুপস্থিতিতে এ দুটি শক্তিই মুখোমুখি। জামায়াতে ইসলামী ধীর গতিতে প্রশাসন ও দল গঠনে এগিয়ে যাচ্ছে। গত ৫৩ বছরের মধ্যে এ বারই দলটি পাওয়ার এক্সারসাইজের চুড়ান্ত সুবিধা ভোগ করছে। রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল সেক্টরে তাদের এখন সরব উপস্থিতি। দলটিকে আরও গুছিয়ে তারা নির্বাচনের পক্ষে। কিন্তু বিএনপি যতদ্রুত সম্ভব নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চায়। তাদের ধারণা, এ বছর নির্বাচন হলে বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত। জাস্টিম ডিলে, জাস্টিস ডিনাই কনসেপ্টের উপর তারা জোর দিচ্ছে। নির্বাচনী ম্যাপ নিয়েই এই দু’দলের দূরত্ব বাড়ছে। নির্বাচন কমিশনের সাথে বিএনপির বৈঠকের ১ দিনের মাথায় জামায়াত নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছে।
১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করে জামায়াতে ইসলামীর সর্মথন নিয়ে। কিন্তু ২ বছর না যেতেই তাদের সখ্যতায় চিড় ধরে। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে জামায়াত ও আওয়ামী লীগ যুগপদ আন্দোলন শুরু করে। একাধিকবার জামায়াতের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত আমীর মাওলানা নিজামী বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ও ১৫ দলীয় নেতাদের সাথে বৈঠক করেন। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওযামী লীগ জাতীয় পার্টির সর্মথনে সরকার গঠন করে। ভোটের রাজনীতিতে জামায়াতের ধ্বস নামে। সংসদের মাত্র ৩টি াাসনে জয়লাভ করে তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়। এই ভরাডুবির পর আবার বিএনপির সাথে জামায়াতের সখ্যতা গড়ে ওঠে। গত ২৮টি বছর বিএনপি ও জামায়াত গাঁটছাড়া হয়ে রাজনীতি করেছে। আওযামী দু:শাসনের খড়গ নেমে এসেছে এই ২ শক্তির উপর। জামায়াতের সকল শীর্ষ নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
আবার ২৮ বছর পর এই দুটি রাজনৈতিক দল একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা বাকযুদ্ধে লিপ্ত। তাদের সহযোগী দুটি সংগঠন ছাত্রদল ও ছাত্র শিবির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে মারমুখি।
বিএনপি ও জমায়াত প্রায়ই বিভিন্ন ইস্যুতে পাল্টাাল্টি বক্তৃতা ও বিবৃতি দিচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামী কড়া ভাষায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সমালোচনা করেছে। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ এক বিবৃতিতে বলেছেন, রিজভী জামায়াতকে ‘মোনাফেক’ বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন’- তা জাতীয় ঐক্যবিরোধী এবং দুরভিসন্ধিমূলক ।
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, রিজভী জামায়াতের বিরুদ্ধে এসব কথা উচ্চারণ করে আসলে কী অর্জন করতে চান, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে দেশকে যখন ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা, সেই মুহূর্তে তার এই বক্তব্য জাতীয় ঐক্যবিরোধী এবং দুরভিসন্ধিমূলক। দেশবাসী মনে করে, এ ধরনের বক্তব্য সৌজন্যতা ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।
তিনি বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার এক স্মরণ সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ‘আমরা জামায়াতকে সমর্থন করিনি। বিএনপির উদারতার কারণে তারা বাংলাদেশে প্রথম রাজনীতি করার সুযোগ পায়। কিন্তু সব সময় এই দলটি মুনাফেকি করেছে। মুনাফেকি ছাড়া তারা কিছু করেনি।’ আমরা তার এই বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।