সোমবার   ০৭ এপ্রিল ২০২৫   চৈত্র ২৪ ১৪৩১   ০৮ শাওয়াল ১৪৪৬

ফিলিস্তিনি শিশুদের ‘মৃত্যুদণ্ড’র পরামর্শ, ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতের

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:২১ এএম, ২৭ মার্চ ২০২৫ বৃহস্পতিবার

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘বন্দুক’ বা ‘গ্রেনেড’ হাত দিয়ে ধরার জন্য ফিলিস্তিনি শিশুদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরামর্শ দিয়েছেন অস্ট্রিয়ায় নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ডেভিড রোয়েট।

এই বিতর্কিত পরামর্শ তিনি ইউরোপের দেশ ইনসব্রুকে ইহুদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উত্থাপন করেন। বৈঠকটি ছিল একটি বন্ধ পরিবেশে, যেখানে রোয়েটের বক্তব্য গোপনে রেকর্ড করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে তা ফাঁস হয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত দাবি করেন, গাজার শিশুদের হাতে অস্ত্র বা গ্রেনেড বহনের কোনো প্রমাণ তিনি উপস্থাপন করতে পারেননি, কিন্তু তবুও তিনি এমন একটি পরামর্শ দিয়েছেন, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে চরম বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

রোববার (২৩ মার্চ) মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর এই ভিডিও প্রকাশ করে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮ মার্চ ভোরে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ভয়াবহ হামলার দুই দিন পর এই ভিডিওটি রেকর্ড করা হয়।

ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত এই সময় বেসামরিক হতাহতের বিষয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগকে অগ্রাহ্য করে, সাফ জানিয়ে দেন, ‘আপনি বিশ্বাস করছেন যে ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করছে, যা সঠিক নয়।’

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল (ইউনিসেফ) এর এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গণহত্যা শুরুর পর থেকে ইসরাইলি বাহিনী গাজায় সাড়ে ১৪ হাজারেরও বেশি শিশুকে হত্যা করেছে। বর্তমানে এই সংখ্যাটি বেড়ে ১৫ হাজার ৬১৩ জনে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটির রেকর্ডিংটি ফাঁসকারী অজ্ঞাতনামা কর্মীকে উদ্ধৃত করে জানায়, ‘রোয়েট যখন এই বক্তব্য দিয়েছিলেন, তার কণ্ঠস্বর ছিল শান্ত। তিনি যখন শিশুদের মৃত্যুদণ্ডের পরামর্শ দেন, তখন উপস্থিত অন্যরা কোনো প্রতিবাদ করেনি। এটি আমাকে গভীরভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করেছে যে, যখন কিছু মানুষ যুদ্ধাপরাধের পরামর্শ দেন, তখন বিষয়টি কতটা কলুষিত হতে পারে।’

রোয়েটের বক্তব্যের পর আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষোভের ঝড় ওঠে এবং এই মন্তব্যের জন্য তাকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের বক্তব্য কেবল একে অপরের প্রতি ঘৃণা এবং সহিংসতার মন্ত্রই প্রচার করে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।