গাজার ঘটনায় বিশ্ব নেতাদের সমালোচনা করলেন জয়া আহসান
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৩:৫৮ এএম, ৭ এপ্রিল ২০২৫ সোমবার

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েল। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে গাজায় ফের ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েলি সেনারা। ওইদিন থেকে এখন পর্যন্ত দিনে গড়ে ১০০ শিশুকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী।
গাজার স্বাস্থ্য সেবা খাত ভেঙে পড়েছে। দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হাত থেকে সাধারণ মানুষই নয়, চিকিৎসকেরাও রক্ষা পাননি। তাদেরকেও হত্যা করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এত মানুষ আহত হয়েছেন যে হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছে। এছাড়া সাধারণ মানুষকে যে চিকিৎসা দেওয়া হবে সেটির সুযোগ নেই। কারণ চিকিৎসা সরঞ্জামেরই ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গত ১২ ঘণ্টায় দখলদাররা খান ইউনিস এলাকা লক্ষ্য করে সবচেয়ে বেশি হামলা চালিয়েছে। সেখানে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনারা খান ইউনিসের কয়েকটি আবাসিক ভবন ও অস্থায়ী তাঁবুতে হামলা চালিয়েছে। এতে অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন। যারা সেখান থেকেই বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন। ধ্বংসস্তূপে মানুষ আটকে থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ইসরায়েলের এই বর্বরতার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন সর্বশ্রেণি পেশার মানুষ। বিশেষ করে আরব ও বিশ্ব নেতাদের সমালোচনায় মেতে উঠেছেন সাধারণ মানুষ থেকে তারকারাও।
দুই বাংলার নন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান বিশ্ব নেতাদের সমালোচনা করে এক ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। রোববার (৬ এপ্রিল) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, ‘দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি সেনারা ১৫ জন জরুরি চিকিৎসাকর্মীকে হত্যা করেছে। গাজায় যে নিষ্ঠুর আর হৃদয়হীন গণহত্যা ইসরায়েল চালিয়ে আসছে, এটা তারই অংশ। পৃথিবীকে তারা ফিলিস্তিনিশূন্য করার নিয়ত নিয়ে নেমেছে।’
জয়া প্রশ্ন ছুঁড়ে লেখেন, ‘বিশ্ববাসীর প্রতিবাদে ইসরায়েল ভ্রূক্ষেপ করবে না, সেটা জানি। কিন্তু বাকি বিশ্ব? বিশ্বের বড় বড় নেতারা? এভাবে বেশুমার শিশুহত্যা, নারীহত্যা, গণহত্যা সবার চোখের সামনে চলতে থাকবে?’
সবশেষ হৃদয়ভাঙা আকুতি নিয়ে জয়া লেখেন, ‘মানুষের হৃদয়ের ওপর থেকে পর্দা সরুক। ফিলিস্তিনিরা মানুষের মতো বাঁচার সুযোগ পাক।’
এর আগে ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ রোববার নিজের ফ্রি প্যালেস্টাইন স্যুটের একটি ছবি প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আমি যখন এই পোস্ট লিখছি ততক্ষণে গাজার অস্তিত্ব কী মুছে গেছে? আমরা কি পারলাম না এই শহরটাকে, এই দেশটাকে বাঁচাতে? ফিলিস্তিনের এই ধ্বংসাবশেষের দায় কি আমরা কেউ এড়াতে পারবো?’
সিয়াম আরও লেখেন, ‘ফিলিস্তিনের জন্য আমার মনের কান্না কখনো থামাতে পারিনি। যখন ‘জংলি’র গল্প লেখা হচ্ছিল তখনও পাখির জায়গায় আমি বারবার ফিলিস্তিনি শিশুদেরকেই কল্পনা করতাম। আমরা কি শিশুদের জন্য একটা সুন্দর পৃথিবী উপহার দিয়ে যেতে পারবো না? যখন যুদ্ধবিরতি চলছিল তখনও আমি শান্তি পাচ্ছিলাম না। শুধু মনে হতো, এই বিরতি কতক্ষণের? কতক্ষণ এই মানুষগুলো বাঁচবে আসলে? এই যে ঈদের পরপরই তাদের ওপর নরক নেমে আসলো, তার দায় কি এই পৃথিবী নেবে না?’
হতাশা প্রকাশ করে এই নায়ক লেখেন, ‘এই বিশ্ব লিডারস, ইসলামিক স্কলারস, নোবেল লরিয়েটস, সাধারন মানুষ, আমরা কেউ কি এড়াতে পারবো এর দায়? আল্লাহ, তুমি জান্নাতের দরজা খুলে দাও। এই পৃথিবী আর গাজাবাসীর জন্য নয়। আমরা পারিনি, আমরা পারলাম না।’