ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের তাণ্ডব
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০২:৪২ এএম, ২২ এপ্রিল ২০২৫ মঙ্গলবার

রাজধানীর বনানী ১১ নম্বর রোডে বেশ কয়েকজনকে লাঠিপেটা করেছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরা। গুলশান ও বনানী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে এই সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালান তারা। গতকাল দুপুরে বনানী এলাকায় তাদের বিক্ষোভের ছবি বা ভিডিও যারাই তুলতে গিয়েছেন, তাদেরই তারা ধাওয়া দিয়ে লাঠিপেটা করেছেন। বনানী থানার পুলিশ জানায়, কয়েক দিন আগে গুলশান সোসাইটি ঘোষণা করে সেখানে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না। কিন্তু সোসাইটির এই সিদ্ধান্ত মেনে নেননি চালকরা। কয়েক দিন ধরেই গুলশানের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন তারা। গতকাল সোসাইটির বাসিন্দারা গুলশানের শেষ মাথায় এবং বনানী এলাকার শুরুর রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক করছিলেন। এতে চালকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় তারা বনানী ১১ নম্বর সড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের আন্দোলনের ভিডিও এবং ছবি যারাই তুলতে গিয়েছেন, তাদেরই লাঠিপেটা করেন রিকশাচালকরা।
স্থানীয় লোকজন জানান, ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা দুই থেকে তিনজন মোটরসাইকেলের চালককে লাঠিপেটা করেন। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। জানা যায়, বেলা ১১টায় বনানী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে বাধা দেওয়ায় পুলিশের একটি বক্সে হামলা চালানো হয়েছে। কয়েকজন পথচারীও মারধরের শিকার হন। এরপর গুলশান লেকে প্যাডেলচালিত দুটি রিকশা ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। একটি রিকশা ফেলে দেওয়া হয় বনানী ১১ নম্বর ব্রিজ থেকে। আরেক রিকশা ব্রিজের পাশ থেকে ফেলে দেওয়া হয়।
বিক্ষুব্ধ ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের দাবি, ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে না পারলে অন্যরাও (প্যাডেলচালিত রিকশা) চালাতে পারবে না। তাই তারা প্যাডেলচালিত দুটি রিকশা গুলশান লেকে ফেলে দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জিয়াউর রহমান বলেন, গুলশান সোসাইটি এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে সোসাইটি কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশন ও পুলিশ মিলে যৌথভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। সেখানকার নির্ধারিত নিবন্ধিত কিছু প্যাডেলচালিত রিকশা আগে থেকেই চলাচল করে। বাইরের রিকশার প্রবেশ ঠেকাতে ১১ নম্বর ব্রিজে পুলিশের ক্রাইম বিভাগের একটি চেকপোস্ট ছিল। সেখানে ব্যাটারিচালিত রিকশা আটকানো থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। এরপর ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা জমায়েত হলে এবং সোসাইটির প্যাডেলচালিত রিকশাচালকরাও জড়ো হলে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ১১ নম্বর সড়কে যান চলাচল বিঘ্ন ঘটলেও কিছু সময় পরেই যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়। এদিকে ব্যাটারিচারিত রিকশাচালকদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেককে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। তাদের শেয়ার করা একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, ১১ নম্বর ব্রিজের ট্রাফিক পুলিশের বক্সে লাঠিপেটা করা হচ্ছে। পুলিশের ব্যারিকেড টেনে সরিয়ে ফেলতে দেখা গেছে সেসব ভিডিওতে। এ ছাড়া একাধিক মোটরসাইকেল আরোহীর ওপর লাঠি হাতে হামলা চালাতেও দেখা গেছে রিকশাচালকদের। এর আগে শনিবার সকাল থেকে গুলশান এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধ করার উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। এদিন বনানী ১১ নম্বর, বাড্ডা-গুলশান লিংক রোড, গুলশান ২, কালাচাঁদপুর, পুলিশ প্লাজাসহ কয়েকটি স্থানে সকাল থেকে অবস্থান নেয় পুলিশ ও সোসাইটির নিরাপত্তাকর্মীরা। ফলে এসব এলাকা দিয়ে গুলাশানে ঢোকা বন্ধ হয়ে যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা।