শনিবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ১৩ ১৪৩২   ২৭ শাওয়াল ১৪৪৬

২৫ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী উদ্বিগ্ন

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০১:৩৩ এএম, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ শনিবার

সামারের ছুটিতে দেশে না যাবার পরামর্শ

 

 
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে নিষেধ করছে। এমনকি গ্রীষ্মকালীন (সামার) ছুটিতে যেন ছাত্রছাত্রীরা দেশে না যান সে ব্যাপারে পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্বদ্যিালয় ও কলেজগুলো। কোন অজুহাত ছাড়াই গত ৩ মাসে ৫ হাজার বিদেশী (ইন্টারন্যাশনাল) শিক্ষার্থীর স্টুডেন্ট ভিসা (এফ-১) বাতিল করায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অনেককে কোন কারণ ছাড়াই আইস পুলিশ গ্রেফতার করে বিদেশি শিক্ষার্থীদের দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। হার্ভার্ড সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ইমিগ্র্যান্ট প্রশ্নে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বিভিন্ন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনী আশ্রয় নিয়েছে। গণহারে স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করায় যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত ১০ লাখ বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।  এর মধ্যে রয়েছে ভারতের সাড়ে ৩ লাখ ও  চীনের প্রায় ৩ লাখ।  বাংলাদেশের রয়েছেন ২৫ হাজার শিক্ষার্থী।  উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন তারা। যারা খন্ডকালীন কাজ করতেন তারা কাজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।  যার মধ্যে ২০ হাজার এসেছে গত ৩ বছরে।  অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই এখন হোস্টেল/ডর্ম ও ক্যাম্পাসের বাইরে যাচ্ছেন না। যার প্রভাব পড়েছে নিউইয়র্ক সিটির ক্লাব ও বারগুলোর উপর। আগে শুক্র ও শনিবার (উইকেন্ড নাইট) রাতে ক্লাবগুলো কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পদভারে মুখরিত থাকতো। এখন প্রায় জনশূন্য।
গত শুক্রবার ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময়ও যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ না করার জন্য সতর্ক করেছে। ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সতর্কতা জারি করেছে, তাদের পরামর্শ দিয়েছে যে তারা একেবারে প্রয়োজন না হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ না করার জন্য। দ্য ডিউক ক্রনিকল অনুসারে, শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ, শিক্ষার্থী এবং কর্মীদের উদ্দেশ্যে পাঠানো একটি ইমেলে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

মানবসম্পদ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা অ্যান্টওয়ান লফটন এবং ছাত্র বিষয়ক ভাইস প্রোভস্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মেরি প্যাট ম্যাকমাহন কর্তৃক প্রেরিত ইমেলটিতে "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুনঃপ্রবেশের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বৃদ্ধি" উল্লেখ করে একটি বিজ্ঞপ্তি ছাত্র ছাত্রীদের কাছে পাঠানো হয়।

ডিউক ভিসা সার্ভিসেস শুক্রবার এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে এবং ডিউক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সকল সদস্যকে "প্রয়োজনীয় না হলে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এড়াতে" পরামর্শ দিয়েছে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে নিজ দেশে বেড়াতে গিয়ে আমেরিকায় প্রবেশকালে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় নি। বিমান বন্দরেই ভিসা বাতিল করে ফেরত পাঠিয়েছে। সীমান্ত ক্রসিংয়ে বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের ফোন ও ট্যাবলেট সহ ডিজিটাল ডিভাইসগুলো নজরদারিতে রাখছে। কে কখন কোথায় যায় তাও ট্রাক করার অভিযোগ উঠছে।
বাংলাদেশি এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে বলেন, গত ১১ এপ্রিল আমার কলেজ ( কুইন্স কমিউনিটি কলেজ) থেকে একটি ইমেইল পাই। এতে সন্দেহজনক গতিবিধির কারণে আমার এফ-১ ভিসা বাতিলের কথা বলা হয়েছে। আমি কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করি। তারা এমনকি কলেজে যেতেও মানা করেন। তবে একজন ্এটর্নির তথ্য দিয়ে বলেছেন তার সাথে যোগাযোগ করতে। আগামী ৯ মে এটর্নির সাথে এপোয়েন্টমেন্ট করেছি। সুনির্দিষ্ট কোন কারন ছাড়াই ভিসা বাতিল যুক্তরাষ্ট্রের আইন বিরোধী। আগামী জানুয়ারিতেই কম্পিউটার সায়েন্সের ওপর আমার ডিগ্রী হতো। এদেশে পড়তে এসে প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ করেছি। এখন কোথায় যাব। দেশে চলে গেলেও হাতে ডিগ্রিটাও নেই।