শনিবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ১৩ ১৪৩২   ২৭ শাওয়াল ১৪৪৬

পাক আকাশ বন্ধ : সংকটে ভারতীয় বিমান সংস্থা

আজকাল রিপোর্ট -

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:২২ এএম, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ শনিবার


 

 
ভারতের কাশ্মিরে ২৮ পর্যটক হত্যাকে ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পাকিস্তান তার আকাশ সীমায় ভারতীয় বিমান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। তাতে ভারতের বিমানগুলো পড়েছে মহা সংকটে। তাদের বহু পথ ঘুরে আমেরিকা, কানাডার মতো পশ্চিমা দেশগুলোতে যেতে হবে। তাতে তাদের খরচ বেড়ে যাবে অনেক এবং পুরো সিডিউল তছনছ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। ঘুরে যাবার কারণে যাত্রীদের এবার গুণতে হবে বাড়তি ভাড়া। দিল্লিসহ উত্তর ভারতের যে কোনও শহর থেকে পশ্চিমা কোনও দেশে যেতে পাকিস্তানের আকাশ ব্যবহার করা হয়। ওই পথে আন্তর্জাতিক বিমান চালায় এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস এবং স্পাইস জেটের মতো সংস্থা।
কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ ঘোষণা করে ভারত সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার তারই পাল্টা জবাব হিসেবে  পাকিস্তান সরকার আটটি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে। ভারতীয় বিমানসংস্থাগুলির জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। এবার থেকে ভারতের মালিকানাধীন বা ভারতে নিয়ন্ত্রিত কোনও বিমান পাকিস্তানের ওপর দিয়ে যেতে পারবে না। বিমান চলাচলের জন্য পাকিস্তানের আকাশ ভারতকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস এবং স্পাইসজেটের মতো সংস্থার জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা আসতেই সমস্যার কথা জানিয়েছে তারা। তাদের বক্তব্য, পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করতে না পারলে উত্তর আমেরিকা, ব্রিটেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং পশ্চিম এশিয়ার দিকে বিমান চালাতে সমস্যা হবে। বিকল্প পথে যাত্রার সময়ও হবে দীর্ঘ।
পাকিস্তানের উপর দিয়ে না গেলে উত্তর ভারত থেকে পশ্চিমের দিকে বিমানগুলিকে যেতে হবে আরব সাগরের ওপর দিয়ে। এটিই প্রধান বিকল্প পথ। তবে এ ছাড়াও কয়েকটি বিকল্প খোলা থাকবে ভারতীয় সংস্থাগুলির সামনে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছেন, আমেরিকা এবং ইউরোপের বিমানগুলি বিকল্প পথ ধরলে গন্তব্যে পৌঁছোতে স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা বেশি সময় লাগবে। তবে বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন রকম বিকল্প পথ খুঁজে নিতে পারে। এই সংক্রান্ত তালিকা প্রকাশ করা হলেই যাত্রার সময় সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে।
আরব সাগর দিয়ে ঘুরে যেতে হলে বাড়তি জ্বালানি খরচ হবে বিমানগুলির। এর ফলে যাত্রার খরচও আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যাবে। মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তানের সিদ্ধান্তের ফলে ভারতে বিমান ভাড়া ৮ থেকে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে চলেছে। এই পরিস্থিতি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে আগামী দিনে ভাড়া আরও বাড়তে পারে।
সমস্যা এখানেই শেষ নয়। বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে হলে বিমানগুলিতে আরও বেশি জ্বালানি রাখতে হবে। তার ফলে সার্বিকভাবে বিমানের ভারসাম্য বজায় রাখতে হয় যাত্রীসংখ্যা, নয়তো জিনিসপত্রের ওজন কমাতে হবে। যাত্রীসংখ্যা কমিয়ে দিতে হলে বিমানসংস্থাগুলির আয় কমবে। ফলে সেগুলি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে।