বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

হর্ন অব আফ্রিকা শরণার্থী পাচারের ভয়ংকর রুট

নিউজ ডেস্ক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৫:৩৩ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০১৯ শনিবার

অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের প্রধান রুট হর্ন অব আফ্রিকা খ্যাত ইথিওপিয়া। কিন্তু এই পথে তাদের জন্য ওঁৎ পেতে রয়েছে মহাবিপদ ও ঝুঁকি। শরণার্থী পাচারের ভয়ংকর রুট হয়েছে পারস্য উপসাগর ও এডেন উপসাগরের পারের এই অঞ্চল।

 

প্রতি বছর মানব পাচারকারীদের শিকারে পরিণত হয় ১৫ শতাংশ শরণার্থী। সেই হিসেবে প্রতি ৯ জনের একজনই হয় অপহরণের শিকার। মূলত মুক্তিপণ আদায়, নারী ও কিশোরীদের যৌন ব্যবসা করানো, অঙ্গচ্ছেদ করা প্রভৃতি উদ্দেশ্যে বারবার ফিরে হানা দিচ্ছে পাচারকারীরা। অভিবাসন সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ এক গবেষণায় আশঙ্কাজনক এসব তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণা সংস্থা মিক্স মাইগ্রেশন সেন্টার (এমএমসি) পরিচালিত গবেষণাটি বুধবার প্রকাশিত হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

দারিদ্র্য, যুদ্ধ ও সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে ক্রমেই বাড়ছে শরণার্থী মানুষের সংখ্যা। একটু নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ও ভালোভাবে বেঁচে থাকার আশায় অজানার পথে বেরিয়ে পড়ছে লাখ লাখ মানুষ। সংঘাত কবলিত মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল ও এশিয়ার দেশগুলো থেকে পালিয়ে আসছে বহু নিরীহ ও অসহায় শরণার্থী। গন্তব্য প্রধানত উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো এবং ভূমধ্যসাগরের অপর পাড়ের ইউরোপ।

কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই পাচারের শিকার হচ্ছে শরণার্থীরা। অপহরণ ও পাচারের প্রকৃত সংখ্যা ও মাত্রা বুঝতে এমএমসির গবেষকরা অন্তত ২০টি দেশ এবং অভিবাসনের ৭ প্রধান রুটের ১১ হাজার ১৫০ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তারা হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শরণার্থী অপহরণ ও পাচার আরও বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে হর্ন অব আফ্রিকা ইথিওপিয়ার মধ্য দিয়ে জিবুতি হয়ে উত্তর আফ্রিকা ও ইউরোপের উদ্দেশে গমনকারী শরণার্থীরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

সংস্থাটির আগের রিপোর্টগুলোতে বারবারই শরণার্থী অপহরণ ও পাচারের বিষয়টিকেই হাইলাইট করা হয়েছে, যা অনেকটা বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে যা অনেকটাই ধারণাপ্রসূত। কিন্তু বর্তমান রিপোর্টটি ব্যাপক ও বিস্তৃত জরিপের মাধ্যমে করা হয়েছে।

প্রথমবারের মতো এবারই পাচারের শতকরা পরিসংখ্যান যোগ করা হয়েছে, যা গুরুত্বপূর্ণ এই ইস্যুটিতে বিশ্ব নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। এমএমসির প্রধান গবেষক ব্রাম ফ্রাউস বলেন, দেশে দেশে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের শরণার্থীরা আরও বেশি করে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রীয় ও সরকারি কর্মকর্তাদের পরোক্ষ সমর্থনেই তৎপর রয়েছে পাচারকারীরা। ফ্রাইস বলেন, সাধারণত অপহরণের পর ভুক্তভোগীর ওপর মুক্তিপণের দাবিতে ব্যাপক অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়। এরপর পাচারকারীরা পরিবারের কাছে মুক্তিপণের জন্য ফোন দেয়। কখনও কখনও পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তির কণ্ঠ শোনায়। নির্যাতন থেকে বাঁচাতে ও জীবন্ত ফিরে পেতে টাকা দিতে বাধ্য দিতে বাধ্য হয় পরিবার।’ তিনি জানান, ইউরোপে সীমান্ত কড়াকড়ি করায় শরণার্থী সংখ্যা কমে আসছে।

ফলে সেখানে পাচারকারীরা খুব একটা সুবিধা করতে পারছে। নতুন রুট হিসেবে ইথিওপিয়াকে বেছে নিয়েছে তারা। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) এক প্রতিবেদন মতে, বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে ৬ কোটি ৮৫ লাখে দাঁড়িয়েছে।