বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম মানায় শুধু বিবেক কী যথেষ্ট?

নিউজ ডেস্ক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১০:৪৫ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

যুক্তি, বিদ্যা, বিবেক। এসবের ওপরই গোটা বিশ্বের আদর্শ প্রতিষ্ঠিত। সেক্যুলার রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে নিয়ে ধর্মীয় রাষ্ট্রব্যবস্থায়ও এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

তবে কোনো কোনো আদর্শে শুধু বিবেককেই একমাত্র মানদণ্ড দাড় করানো হয়েছে। যার স্থান ইসলামে নেই। ইসলাম যুক্তি, বিবেক ও অহির জ্ঞানকে প্রাধান্য দিয়েছে। কোনো বিষয়ে যুক্তি বা বিবেক কাজ না করলেও আল্লাহর নির্দেশকে মানার কথা বলা হয়েছে।

সেক্যুলার রাষ্ট্রব্যবস্থায় বিবেক, অভিজ্ঞতা এবং পর্যবেক্ষণকে আইন ও সংবিধান প্রণয়নের সর্বশেষ মানদণ্ড স্থির করা হয়েছে। এ মানদণ্ড কতটা মজবুত? এ মানদণ্ড কী কিয়ামত পর্যন্ত আগত মানবজাতির পথনির্দেশনা দানের উপযুক্ত? এ মানদণ্ড কী শুধু বিবেক নির্ভর হয়ে, শুধু পর্যবেক্ষণ এবং অভিজ্ঞতা নির্ভর হয়ে আমাদের সমস্যা সমাধান করতে পারে? এ নিয়ে দুটি কথা।

জ্ঞানের মাধ্যম:

এ প্রশ্নের উত্তরে সর্বপ্রথম আমরা যে বিষয়টি দেখি তা হলো, কোনো মতবাদ বা রাষ্ট্রব্যবস্থা কোনো জ্ঞানভান্ডারের ওপরে ভিত্তিশীল না হয়ে সফল হতে পারে না। আর যে কোনো বিষয়ে জ্ঞানার্জনের জন্য আল্লাহ তায়ালা মানুষকে কিছু মাধ্যম দান করেছেন। সেই মাধ্যমগুলোর প্রতিটিরই নির্ধারিত কর্মপরিধি রয়েছে। এ কর্মপরিধির আওতায় ব্যবহার করা হলে উক্ত মাধ্যমটি কাজ দেয় এবং তা দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় কিন্তু এ আওতার বাইরে তাকে ব্যবহার করলে তা কাজ দেয় না এবং তা দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় না।

পঞ্চইন্দ্রিয়ের কর্মপরিধি:

উদাহরণ হিসেবে বলছি, মানুষকে সর্বপ্রথম জ্ঞান অর্জনের যে মাধ্যম দান করা হয়েছে তা হলো পঞ্চইন্দ্রিয়, চোখ, নাক, কান, জিহ্বা এবং ত্বক। চোখে দেখার দ্বারা অনেক জিনিস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জিত হয়। জিহ্বা দিয়ে স্বাদ নেওয়ার দ্বারা কিছু জিনিস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জিত হয়। নাক দিয়ে ঘ্রাণ নেওয়ার দ্বারা কিছু জিনিস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জিত হয়। হাত দিয়ে স্পর্শ করার দ্বারা কিছু জিনিস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জিত হয়।

জ্ঞান অর্জনের এ পঞ্চমাধ্যমের প্রতিটির নির্ধারিত কর্মপরিধি আছে। উক্ত কর্মপিরিধির বাইরে উক্ত মাধ্যটি কাজ করে না। চোখ দেখতে পারে কিন্তু শুনতে পারে না। কান শুনতে পারে কিন্তু দেখতে পারে না। নাক ঘ্রাণ নিতে পারে কিন্তু দেখতে পারে না। যদি কোনো ব্যক্তি চায়, আমি চোখ বন্ধ করে থাকব আর কান দিয়ে দেখব তা হলে সারা পৃথিবী তাকে নির্বোধ বলবে। কারণ কানকে এ কাজের জন্য বানানো হয়নি। যদি কেউ বলে, তোমার কান দেখতে পারে না তাই কান দিয়ে দেখতে তুমি সম্পূর্ণ ব্যর্থ এবং তোমার কান ঠিক নেই, তা হলে তাকে পুরা দুনিয়া নির্বোধ বলবে। মোটকথা, কানের দ্বারা চোখের কাজ নেওয়া যায় না।

জ্ঞানের অপর একটি মাধ্যম আকল বা বিবেক:

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে জ্ঞান অর্জনের জন্য যে পঞ্চইন্দ্রিয় দান করেছেন, একটি পর্যায়ে পৌঁছে সেগুলোর কর্মক্ষমতা শেষ হয়ে যায়। সে পর্যায়ে চোখও কাজ দেয় না, কানও কাজ দেয় না, জিহ্বাও কাজ দেয় না, হাতও কাজ দেয় না। এটি সেই পর্যায়, যেখানে সরাসরি প্রত্যক্ষদর্শনের দ্বারা বিষয়টিকে অনুধাবণ করা যায় না। এ পর্যায়ে কাজ করার জন্য আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে জ্ঞান অর্জনের একটি অভিন্ন মাধ্যম দান করেছেন। তা হল বিবেক।

পঞ্চইন্দ্রিয়ের কাজ যেখানে শেষ হয়, বিবেকের কাজ সেখান থেকে শুরু হয়। উদাহরণত, আমার সামনে এই টেবিলটি রাখা আছে। আমি চোখে দেখে বলতে পারি এর রঙ কি? হাত দ্বারা স্পর্শ করে বলতে পারি এটা কতটা মজবুত? কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শনের দ্বারা এই কথা বলতে পারি না যে, টেবিলটি কীভাবে অস্তিত্ব লাভ করেছে? এটা আমি চোখে দেখেও বলতে পারি না, কানে শুনেও না, হাতে স্পর্শ করেও না। কারণ, এ টেবিলটির অস্তিত্ব-লাভ আমার সামনে হয়নি। এ পর্যায়ে আমার বিবেক আমাকে রাস্তা দেখায় যে, এ টেবিলটি এত চমৎকারভাবে নিজে নিজে অস্তিত্ব লাভ করেনি। একে কোনো মিস্ত্রি বানিয়েছে এবং মিস্ত্রি অবশ্যই অভিজ্ঞ এবং দক্ষ।

 

সুতরাং এ টেবিলটি কোনো মিস্ত্রি বানিয়েছে, এ বিদ্যা আমার বিবেকের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। অতএব, যে পর্যায়ে আমার পঞ্চইন্দ্রিয়ের কাজ শেষ হয়েছে, সেখান থেকে আমার বিবেক কাজ করেছে এবং আমার সামনে একটি জ্ঞান উন্মোচিত করেছে।

বিবেকের কর্মপরিধি:

কিন্তু যেভাবে পঞ্চইন্দ্রিয়ের কর্মপরিধি সীমাহীন নয় বরং একটি পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে তার সীমা শেষ হয়ে যায়, এমনিভাবে বিবেকের কর্মপরিধিও সীমাহীন নয়। বিবেকও একটি পর্যায় পর্যন্ত মানুষকে কাজ দেয়, একটি পর্যায় পর্যন্ত রাস্তা দেখায়। এ সীমার বাইরে যদি বিবেককে ব্যবহার করা হয় তা হলে বিবেক সঠিক উত্তর দেবে না, সঠিক রাস্তা দেখাবে না।

জ্ঞানের তৃতীয় মাধ্যম আল্লাহ তায়ালার অহি:

যে পর্যায়ে এসে বিবেকের ক্ষমতা শেষ হয় সেখানে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে তৃতীয় একটি জ্ঞানের মাধ্যম দান করেছেন। সেটা হলো আল্লাহপ্রদত্ত অহি এবং ঐশী জ্ঞান। এ জ্ঞান-মাধ্যমটির সূচনাই হয় সেই জায়গা থেকে যেখানে বিবেকের দৌড় শেষ হয়। সুতরাং যে বিষয়ে আল্লাহ পক্ষ থেকে অহি আসে, সে বিষয়ে বিবেককে ব্যবহার করা সেরূপ, যেরূপ চোখের কাজের জন্য কানকে ব্যবহার করা এবং কানের কাজের জন্য চোখকে ব্যবহার করা। এর অর্থ এটা নয় যে, বিবেক কাজের জিনিস নয় বরং বিবেক খুবই কাজের জিনিস; তবে শর্ত হলো, তাকে তার কর্মপরিধির ভেতরে ব্যবহার করতে হবে। যদি বিবেককে তার কর্মপরিধির বাইরে ব্যবহার করা হয় তা হলে এটা সেরূপই হবে, যেরূপ কোনো ব্যক্তি চোখ এবং কান দ্বারা ঘ্রাণ নেওয়ার কাজ করতে চায়।

ইসলাম ও সেক্যুলার ব্যবস্থায় পার্থক্য:

ইসলাম এবং সেক্যুলার জীবনব্যবস্থায় মৌলিক পার্থক্য হলো, সেক্যুলার জীবনব্যবস্থায় জ্ঞানের প্রথম দুটি মাধ্যমকে ব্যবহার করা হয়। তাদের দৃষ্টিতে মানুষের কাছে জ্ঞান অর্জনের তৃতীয় মাধ্যম নেই। ব্যস, আমাদের চোখ, কান, নাক এবং আমাদের বিবেকই জ্ঞানের মাধ্যম; এ ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যম নেই। পক্ষান্তরে ইসলাম বলে, এ দুটি জ্ঞান-মাধ্যমের পরে তোমাদের কাছে আরো একটি জ্ঞানের মাধ্যম বা উৎস আছে। আর সেটা হল, আল্লাহপ্রদত্ত অহি।

আল্লাহ তায়ালার অহির প্রয়োজনীয়তা:

এখন দেখতে হবে, বিবেকের মাধ্যমে সব বিষয়ে জ্ঞান অর্জিত হতে পারে না বরং ঐশী নির্দেশনার প্রয়োজন আছে, আল্লাহ প্রদত্ত অহির প্রয়োজন আছে, পয়গম্বর এবং রাসূলগণের প্রয়োজন আছে এবং আসমানি কিতাবের প্রয়োজন আছে, ইসলামের এ দাবি আমাদের বর্তমান সমাজব্যবস্থা অনুসারে কতটা সঠিক?

বিবেক ধোঁকা দেয়:

বর্তমানে বিবেকপূজা হচ্ছে বেশ জোরেশোরে এবং বলা হয়ে থাকে, প্রতিটি জিনিসকে বিবেকের মানদন্ডে পরখ করে এবং মেপে গ্রহণ কর কিন্তু বিবেকের কাছে এমন কোনো বিধিবদ্ধ নীতিমালা বা কোনো সুনির্ধারিত মূলনীতি নেই, যা চিরন্তন সত্য, যা সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে স্বীকৃত এবং যার মাধ্যমে তারা নিজেদের ভালো-মন্দ এবং মঙ্গল ও অমঙ্গলের পরিমাপ করতে পারে যে কোন জিনিস ভালো এবং কোন জিনিস মন্দ? কোন জিনিস গ্রহণ করা চাই এবং কোন জিনিস বর্জন করা চাই?

এ ফয়সালা যদি আমরা বিবেকের হাওয়ালা করি, তা হলে ইতিহাস থেকে দেখা যায়, এ বিবেক মানুষকে এত ধোঁকা দিয়েছে যে, এর সীমা-পরিসীমা নেই। যদি বিবেককে এভাবে স্বাধীন ছেড়ে দেওয়া হয়, তা হলে মানুষ কোথা থেকে কোথায় পৌঁছবে, আমি ইতিহাস থেকে কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরছি-

বোনকে বিবাহ করা বিবেকবিরুদ্ধ নয়:

আজ থেকে প্রায় আটশত বছর পূর্বে ইসলামি বিশ্বে একটি ফেরকার অভুদ্যয় ঘটেছিল, যাকে বাতেনি ফেরকা বলা হয়। এ ফেরকার একজন প্রসিদ্ধ নেতা ছিল যার নাম উবায়দুল্লাহ ইবনে হাসান কাযবিনি। সে তার অনুসারীদের কাছে পাঠানো এক পত্রে লিখেছিল; পত্রটি ছিল বড় হৃদয়গ্রাহী। পত্রটিতে সে অনুসারীদেরকে জীবনযাপনের জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছে।

সে তাতে লিখেছিল, আমার কাছে এটি অবিবেচনাপ্রসূত মনে হয় না যে, মানুষের নিজেদের ঘরে খুব রূপবতী এবং গুণবতী যে মেয়ে বোনরূপে আছে, যে ভাইয়ের মন-মানসিকতা ভালো বুঝে, তার পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কেও ভালো জানে, অথচ বেকুব মানুষগুলো সেই বোনের হাত অপরিচিত এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেয়। অথচ সেই পুরুষ সম্পর্কে এটুকুও জানা নেই যে, তার সঙ্গে বনি-বনো হবে কিনা? আর নিজের জন্য অধিকাংশ সময় এমন মেয়েকে ঘরে তুলে আনে, যে রূপ-সৌন্দর্যের হিসাবে এবং গুণগরিমার ক্ষেত্রে এবং স্বভাব-তবিয়ত বোঝার ক্ষেত্রে সেই বোনের সমকক্ষ হয় না।

 

আমার বুঝে আসে না, এ নির্বুদ্ধিতা কতটুকু সিদ্ধ যে, নিজ ঘরের দৌলতকে অন্যের হাতে তুলে দেবে আর নিজের কাছে নিয়ে আসবে এমন এক জিনিস যা তাকে পুরোপুরি শান্তি ও আনন্দ দিতে পারে না। এটা অবিবেচকের কাজ, এটা বিবেকবিরুদ্ধ বিষয়। আমি আমার অনুসারীদেরকে উপদেশ দিই যে, তারা অবশ্যই এ ধরনের অবিবেচকের কাজ পরিহার করবে এবং নিজের ঘরের দৌলতকে নিজের ঘরেই রাখবে।

বোন ও যৌনশান্তি:

অন্য এক স্থানে উবায়দুল্লাহ ইবনে হাসান কাযবিনি বিবেকের ওপর ভিত্তি করে নিজ অনুসারীদেরকে নিন্মোক্ত পয়গাম দিয়েছিল। সে লিখেছিল, এক বোন যখন তার ভাইয়ের জন্য খাবার রান্না করতে পারে, তার ক্ষুধা দূর করতে পারে, তার আরামের জন্য তার পোশাক-পরিচ্ছদ ধৌত করতে পারে, তার বিছানা প্রস্তুত করতে পারে, তা হলে কেন সে তার যৌনশান্তির মাধ্যম হতে পারে না? এটা কি বিবেকবিরুদ্ধ বিষয়?

এর বিবেকপ্রসূত জবাব সম্ভব নয়:

আপনি যত ইচ্ছা এ কথার জন্য তাকে অভিসম্পাত দিতে পারেন, কিন্তু আল্লাহপ্রদত্ত অহির পথ-নির্দেশনা থেকে মুক্ত এবং ঐশী শিক্ষার আলো বঞ্চিত স্বাধীন বিবেকের ওপর ভিত্তি করে যদি আপনি তার এ কথার জবাব দিতে চান, তা হলে কেয়ামত পর্যন্ত তার উপস্থাপিত প্রমাণকে খন্ডন করা যাবে না।

বিবেকের বিচারে এটা চরিত্রহীনতা নয়:

যদি কোনো ব্যক্তি বলে, এটা তো মারাত্মক চরিত্রহীনতা, খুবই ঘৃণার বিষয়, তা হলে এর উত্তর হলো, চরিত্রহীনতা এবং ঘৃণার বিষয়টি পরিবেশ ও সমাজের সৃষ্টি। আপনি এমন এক পরিবেশে জন্মগ্রহণ করেছেন, যেখানে এ বিষয়কে দোষ মনে করা হয়, এ জন্য আপনার কাছে এটাকে দোষ মনে হচ্ছে। তা না হলে আপনি যদি এমন পরিবেশে জন্ম নিতেন, যেখানে এটাকে দোষ মনে করা হয় না, তা হলে এটা আপনার কাছেও দোষ মনে হত না।

বংশরক্ষা কোনো বিবেকসম্মত নীতি নয়:

যদি আপনি বলেন, এর দ্বারা বংশের ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যায়, তা হলে তার জবাব হলো, বংশের ধারা নষ্ট হয় হোক, তাতে মন্দের কি আছে? বংশরক্ষা এমন কোননো বিবেকসম্মত নীতি যে, তার কারণে বংশরক্ষা করা জরুরি।

এটা মানবাধিকারের অংশ:

যদি আপনি বলেন, এটা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ক্ষতিকর কারণ ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা গেছে, নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে মিলনে দৈহিক ক্ষতি হয়। কিন্তু আজকের পশ্চিমা দুনিয়ায় এ বিষয়ে বহু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে যে, নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে দৈহিক মিলন স্বভাবগত চাহিদা ও মানবাধিকারের একটি অংশ এবং তার দৈহিক ক্ষতির যে কথা চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয়, তা সঠিক নয়। আজ থেকে আটশত বছর পূর্বে উবায়দুল্লাহ ইবনে হাসান কাযবিনি যে আওয়াজ তুলেছিল তাই প্রতিধ্বনিত হয়ে আজকের পশ্চিমা বিশ্বে গুঞ্জরিত হচ্ছে এবং তা পালন করাও হচ্ছে।

আল্লাহপ্রদত্ত অহি থেকে স্বাধীনতার পরিণতি:

এগুলো কেন হচ্ছে? কারণ বিবেককে সেই জায়গায় ব্যবহার করা হচ্ছে, যা বিবেকের কর্মপরিধির আওতায় নয়। যেখানে আল্লাহপ্রদত্ত অহির পথ-নির্দেশনা প্রয়োজন। বিবেককে আল্লাহপ্রদত্ত অহির পথ-নির্দেশনা থেকে মুক্ত করার পরিণতি হলো, আজ বৃটেন ও ভারতে সমকামিতা বিল পাশ করছে। এখন তো বিষয়টি একটি স্বতন্ত্র শাস্ত্রের রূপ লাভ করেছে। অতএব, বিষয় যত খারাপই হোক না কেন এবং অপরাধ যতই মারাত্মক হোক না কেন, বিবেক তার জন্য কোনো না কোনো দলিল এবং বৈধতার প্রমাণ উপস্থাপন করে থাকে।

আজকে সারা দুনিয়া ফ্যাসিবাদের সমালোচনা করে। রাজনীতির ময়দানে হিটলার এবং মুসেলিন একটি গালিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আপনি যদি তাদের চিন্তা-দর্শন ও দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অধ্যয়ন করেন তা হলে দেখবেন তারা ফ্যাসিবাদকে কত চমৎকার দার্শনিক ভঙ্গিতে উপস্থাপন করেছে। একজন সাধারণ শিক্ষিত মানুষ যদি ফ্যাসিবাদের দর্শন সম্পর্কে অধ্যয়ন করে তা হলে অবশ্যই সে স্বীকার করবে, বক্তব্য তো যুক্তিসঙ্গত এবং বিবেকসম্মত। তা হলে দেখুন, বিবেক ফ্যাসিবাদকে একটি উপকারী ও ভালো মতবাদ হিসেবে পেশ করছে

 

অথচ আজকের পৃথিবী ফ্যাসিবাদকে চরমভাবে ধিক্কার জানাচ্ছে। মোটকথা, পৃথিবীতে যত নিকৃষ্ট ও মন্দ বিষয় হোক না কেন, তাকে ভালো ও সঠিক বলে উপস্থাপনের জন্য যুক্তি ও বিবেকসম্মত প্রমাণ পেশ করা হচ্ছে। অথচ এ বিবেক মানুষকে ভুল পথও দেখায়। এ জন্যই ইসলামে শুধু বিবেকের স্থান নেই। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।