বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩১   ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণকাজ শেষ

ডেস্ক রিপোর্ট

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৫:৩৫ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সেতু চালুর জন্য সড়ক ও জনপথের (সওজ) প্রধান প্রকৌশলী বরাবর সোমবার চিঠি দিয়েছেন সেতুর প্রকল্প পরিচালক। স্থানীয় লোকজনও সেতুটি দ্রুত চালুর দাবি জানিয়েছেন।

কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুর প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর ১৯৭৭ সালে প্রথম সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি পুরোনো হওয়ার পরও এ সেতু দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে।

তাই সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতু, মেঘনা দ্বিতীয় সেতু ও মেঘনা গোমতী দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। এর মধ্যে মেঘনা দ্বিতীয় সেতু ও মেঘনা গোমতী দ্বিতীয় সেতুর কাজ ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে। তবে কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুর কাজ গত সপ্তাহে শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে এই সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজও শেষ হয়েছে। শুধু সেতুর পূর্ব প্রান্তের কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে উড়ালসেতুর কাজ এখনো চলছে।

সেতুর প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, সেতুটির ভিত্তি কংক্রিটের ঢালাইয়ের হলেও পাঁচটি পিলারের ওপর নির্মিত নতুন এই সেতুটি স্টিল গার্ডারের। ১০০ বছরের স্থায়িত্ব নির্ধারণ করে নির্মাণ করা সেতুটির প্রধান ঠিকাদার ছিল যৌথভাবে জাপানি চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান—ওবায়শি করপোরেশন, শিমিজু করপোরেশন, জেএফআই ও আইএইচআই। সেতুর উপঠিকাদার বাংলাদেশের মীর আকতার হোসেন। মূল সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয় ১ হাজার ২১৫ কোটি টাকা।

কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ প্রকল্পের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাফিউল ইসলাম জানান, সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সেতুটিকে দ্রুত উদ্বোধন করে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করে সোমবার সেতুর প্রকল্প পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে উদ্বোধনের সময় নির্ধারণ করা হবে। উদ্বোধনের পর যেকোনো দিন সেতুর ওপর যানবাহন চলাচল শুরু হবে।

তিনি আরও জানান, সেতুটি উদ্বোধনের পর পুরোনো সেতুটির মেরামত কাজ শুরু হবে। দুটি সেতু একসঙ্গে চালু থাকলে এবং উড়াল সেতুর কাজ শেষ হলে কাঁচপুর সেতুর ওপর ও দুই পাশে কোনো যানজট থাকবে না। নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট পথে চলাচলরত সব ধরনের যানবাহন।

গতকাল দুপুরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুর ওপর গিয়ে দেখা যায়, সব ধরনের নির্মাণকাজ শেষ। উদ্বোধন না হওয়ার কারণে সেতুর দুই পাশ আটকে রাখা হয়েছে। আনসার সদস্যসহ নিরাপত্তাকর্মীরা সেতুর ওপর পাহারা দিচ্ছেন।

এদিকে দ্রুত এই সেতু উদ্বোধন করে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন পরিবহন মালিক, শ্রমিক সংগঠনের নেতা ও এলাকাবাসী। কাঁচপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য নুরে আলম খান বলেন, সেতুটি খুলে দিলে কাঁচপুরে কোনো যানজট থাকবে না। মানুষের দুর্ভোগ কমবে।

সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া থেকে ঢাকার গুলিস্তানগামী দোয়েল পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলজার হোসেন বলেন, ‘সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে, তাই আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাব, দ্রুত সেতুটি দিয়ে যাতে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।’