সাওয়াব লাভে নারী-পুরুষে বৈষম্য আছে কি?
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৩:০৪ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার
আল্লাহ তাআলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। ফরজ ইবাদতগুলো নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সমান। একই ইবাদত বা নেক কাজ করলে নারী-পুরুষ উভয়ে সমান প্রতিদান পাবে নাকি সাওয়াব প্রদানে বৈষম্য করা হবে? সাওয়াবে কি কম-বেশি করা হবে?
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা কুরআনে আয়াত নাজিল করে নারী-পুরুষ উভয়কে বিষয়টি সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন। নেক আমলের সাওয়াব নারী-পুরুষ সবার জন্য সমান।
মুমিন মুসলমান নর-নারী যখন আল্লাহর কাছে দোয়া করে, তখন আল্লাহ তাআলা মুমিন নর-নারীর ডাকে সাড়া দেন। তাদের দোয়া কবুল করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘অতঃপর তাদের প্রতিপালক তাদের ডাকে সাড়া দিলেন (এবং বললেন) আমি তোমাদের মধ্যে কোনো কর্মনিষ্ঠ পুরুষ কিংবা নারীর কর্ম বিফল করি না। তোমরা পরস্পর সমশ্রেণিভূক্ত। সুতরাং যারা হিজরত (ধর্মের জন্য স্বদেশ ত্যাগ) করেছে, নিজ নিজ ঘর থেকে উৎখাত হয়েছে, আমার পথে নির্যাতিত হয়েছে এবং যুদ্ধ করেছে ও নিহত হয়েছে, আমি তাদের মন্দ কাজগুলো অবশ্যই গোপন করব। আর অবশ্যই তাদেরকে বেহেশতে প্রবেশ করাব; যার নিচে দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত। এ হল আল্লাহর দেয়া পুরস্কার; বস্তুত আল্লাহর কাছেই রয়েছে উত্তম পুরস্কার।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯৫)
এ আয়াত থেকে কয়েকটি বিষয় সুস্পষ্ট। আল্লাহ তাআলা যা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন। আর তাহলো-
> বান্দা (নারী-পুরুষ) আল্লাহর কাছে দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা তা কবুল করেন বা তাদের ডাকে সাড়া দেন।
> নারী ও পুরুষ উল্লেখ করা কারণ-
ইসলাম কোনো কোনো বিষয়ে নারী ও পুরুষের মধ্যে তাদের উভয়ের প্রাকৃতিক গুণাবলীর ভিন্নতার কারণে বিধান পালনে ভিন্নতা করেছেন। যেমন-
- নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব;
- পরিবারের জীবিকা উপার্জনের দায়িত্ব;
- জিহাদে অংশগ্রহণ
- ইমামতি করা; এবং
- অর্ধেক মিরাস পাওয়া ইত্যাদি।
এ পার্থক্যগুলো দেখে যেন কোনো নারী এ কথা মনে না করেন যে, নেক কাজের প্রতিদান প্রদানেও নারী-পুরুষের মধ্যে পার্থক্য করা হবে। এ আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট করে তা বলে দিয়েছেন যে- না, এমনটি হবে না।
বরং প্রত্যেক নেকির যে প্রতিদান একজন পুরুষ পাবে, সেই নেকি যদি কোনো নারী করে, তবে সেও অনুরূপ প্রতিদান পাবে।
> আয়াতে ‘তোমরা পরস্পর সমশ্রেণিভুক্ত’-এ কথার দ্বারা আগের কথাটিকে মজবুত করা। অর্থাৎ নেকি ও আনুগত্যে নারী-পুরুষ উভয়েই সমান। অন্য বর্ণনায় এসেছে-
হজরত উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! মহান আল্লাহ তাআলা হিজরতের ক্ষেত্রে কোনো নারীর নাম নেননি। তাঁর এ কথার ভিত্তিতে বিষয়টি সুস্পষ্ট করতে এ আয়াত নাজিল হয়।
সুতরাং নারীদের জন্য নেক কাজের প্রতিদান লাভে হতাশার কিছু নেই। বরং নেক কাজের সাওয়াব বা বদলা প্রদানের ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা নারী ও পুরুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য করবেন না। বরং সমান সাওয়াব বা প্রতিদান দান করবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনের বিষয়ে সঠিক বিষয়গুলো জানার, বুঝার এবং সে আলোকে যথাযথভাবে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।