স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে গড়িমসি
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৭:৪০ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ শনিবার

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়নের (২০১০ সালে) পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য ৫১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তত ৫ বার সময় দেয় সরকার। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়েছে। বাকি ৩১টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আসাদ এভিনিউতে ১৯৯৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। ২০ বছর পরে এসেও পুরোপুরি স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি এই বিশ্ববিদ্যালয়।
২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি স্থায়ী ক্যাম্পাস করেছে বিরুলিয়ায়। কিন্তু এখনো সোবহানবাগ ও উত্তরায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পরেও পুরোপুরি স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি। একই অবস্থা নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির। ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনো অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের ধানমন্ডিজুড়ে ক্যাম্পাস। ভাড়া করা ভবনে ক্লাস চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টির।
তবে পুরোপুরি স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নতুন কোনো প্রোগ্রাম অনুমোদন বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপ-পরিচালক জেসমিন পারভীন। এই কর্মকর্তা বলেন, যারা স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি তাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য আমরা নিয়মিত তাগিদ দিয়ে আসছি।
ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, স্থায়ী কাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো: আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউসিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, লিডিং ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি-চট্টগ্রাম, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, আইইউবিএটি, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, গণবিশ্ববিদ্যালয়, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, সিটি ইউনিভার্সিটি, পুন্ড্রু ইউনিভার্সিটি ও বিইউবিটি।
সূত্র জানায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়নের আগে ৫১টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে আইনে বলা হয়েছে, ‘এই আইনে যাই থাকুক না কেন এই আইন কার্যকর হওয়ার পূর্বে সাময়িক অনুমতিপ্রাপ্ত কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এরইমধ্যে সনদ গ্রহণপূর্বক স্থায়ী না হইয়া থাকিলে এই আইন কার্যকর হওয়ার পর উক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধারা ৯ এর শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে সনদপত্র গ্রহণ করিতে হইবে। কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদপত্র গ্রহণ না করিলে উক্ত সময়সীমার পর সরকার উক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতি বাতিল করে উহা বন্ধ করবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার বিষয়ে তাগাদা দেয়া হয়। আইন পাস হওয়ার পর একই বছর ‘রেড এলার্ট জারি’ করে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু ওই সময় অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার উদ্যোগই নেয়নি। পরে দ্বিতীয় দফায় ২০১২ সালে, তৃতীয় দফায় ২০১৩ সালে, চতুর্থ দফায় ২০১৫ সালের জুন এবং পঞ্চম দফায় ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। এভাবে বারবার সময় বেঁধে দেওয়ার পরও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।