মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আমিন ধ্বনিতে শেষ হলো মাইজভাণ্ডারের ওরশ

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ বৃহস্পতিবার

লাখো ভক্তের আমিন ধ্বনিতে ও উপস্থিতিতে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী হযরত মওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.) প্রকাশ হযরত কেবলার ১১৩তম ওরশ শরীফ। 

বুধবার রাতে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)।মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)।

আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভাণ্ডারী (শাহ এমদাদীয়া) কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সচিব শেখ মুহাম্মদ আলমগীরের পরিচালনায় ওরশে মিলাদ পরিচালনা করেন দারুততায়ালীম প্রধান শিক্ষক মওলানা জয়নাল আবেদীন ছিদ্দিকী।
 
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, খান এগ্রো প্রোডাক্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দুল হক খান, মাইজভাণ্ডারী ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন সৈয়দ সোহেল হাসনাত, কো-চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম চৌধুরী।

সোমবার থেকে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী এ ওরশ। ওরশ উপলক্ষে পুরো মাইজভাণ্ডার এলাকাকে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সাজানো হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিদেশ থেকে ওরশে এসেছেন আশেকান-ভক্তরা।

গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন শাহ ছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)’র আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় ভক্তরা মাজারের আশপাশ ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্পে অবস্থান নেন। মাজার জিয়ারত, বিশেষ মোনাজাত, জিকির, জিকিরে ছেমাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সময় পার করেন ভক্তরা।

বাংলাদেশ ছাড়াও এ বছর ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ওমানসহ নানা দেশ থেকে অসংখ্য ভক্ত-অনুরক্ত অংশ নিয়েছেন।

 
ওরশ উপলক্ষে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রুটে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। আগত ভক্তদের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার এবং মাইজভাণ্ডার ওরশ শরীফ সুপারভিশন কমিটির বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও মাইজভাণ্ডারী স্পেশাল ফোর্স (এমএসএফ) দায়িত্ব পালন করে।

ওরশ উপলক্ষে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা, গাড়ি পার্কিংসহ অতিথিদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে থাকা, সময়মতো জামাত সহকারে নামাজ আদায়, বিশুদ্ধ পানীয় জল, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন, আলোকসজ্জা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসহ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ব্যবস্থা করা হয়।

গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের নায়েব সাজ্জাদানশীন ও মাইজভাণ্ডারী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.) ওরশ শরীফের সার্বিক বিষয় তত্ত্বাবধান করেন।

সুষ্ঠুভাবে ওরশ সমাপ্ত করতে সহযোগিতা করায় ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, স্বেচ্ছাসেবকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)।

 
এছাড়া ওরশ উপলক্ষে রক্তদান কর্মসূচী, শিক্ষামেলা, বৃত্তিপ্রদান, গ্রিন ও ক্লিন মাইজভাণ্ডার, সুধী সমাবেশ ও তাসাউফ সংলাপসহ ১০ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভাণ্ডারী (শাহ এমদাদীয়া), মাইজভাণ্ডারী ফাউন্ডেশন, মাইজভাণ্ডারী শাহ এমদাদীয়া ব্লাড ডোনার্স গ্রুপ, মাইজভাণ্ডারী শাহ এমদাদীয়া সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কমিটি।

মোনাজাতে সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী বলেন, ইসলামের ক্রান্তি লগ্নে সবসময় ছুফী সাধকরাই ধর্মের আধ্যাত্মিক ও শরীয়তের অবকাঠামোর রক্ষকের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ করেছেন এবং ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারের পাশাপাশি ইসলামের মৌলিক আদর্শ ও বিশ্বাসের সাথে সমাজ সংস্কৃতির নৈতিক সংস্কারে আধ্যাত্মিক পূর্ণতা লাভের কারিগর হিসেবে কাজ করে আসছেন।