জাতীয় ডেটা সেন্টারের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু এপ্রিলে
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৭:১৬ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার
আসছে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় ডেটা সেন্টারের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পরে দ্রুতই বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বুধবার বিকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই টেক সিটিতে জাতীয় ডেটা সেন্টার পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চীনের সহযোগিতায় প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ডেটা সেন্টারের ৯৯ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
এই তথ্যভাণ্ডারের জন্য নির্মিত দুই লাখ বর্গফুট আয়তনের ভবনে ইতোমধ্যে আমদানি করা যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন সেখানে চলছে পরীক্ষামূলক কাজ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আশা করা যায়, আগামী এপ্রিলে কমার্শিয়াল অপারেশন শুরু করা যাবে।”
সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি খাতের তথ্য সংরক্ষণের জন্য বড় পরিসরে ডেটা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ‘ফোর টিয়ার ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার’ স্থাপনের এই প্রকল্প হাতে নেয়। ২০১৫ সালের ৬ নভেম্বর একনেকের অনুমোদন পায় এ প্রকল্প।
চীনের এক্সিম ব্যাংকের ১৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং বাংলাদেশ সরকারের ৪ কোটি ডলার অর্থায়নে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম এই ডেটা সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং যৌথভাবে ডেটা সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ডেটা সেন্টারের ভেন্ডর হিসেবে কাজ করছে চীনের জেডটিই করপোরেশন। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা আপটাইম ইনস্টিটিউট ডেটা সেন্টারের মান পর্যবেক্ষণ করে সনদ দিয়েছে।
পলক বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ডিজিটাল কনটেন্ট এক জায়গায় রাখার সুযোগ সৃষ্টি হবে। তথ্যের নিরাপত্তার পাশাপাশি উন্নত ই-সেবা নিশ্চিত করা সহজ হবে।
“দেশে আধুনিক ডিজিটাল কার্যক্রম, সেবা প্রদান ও ই বিজনেসের মূল ভিত্তি হবে এই ডেটা সেন্টার । এর মাধ্যমে বছরে আনুমানিক ১৬৮০ কোটির টাকার বেশি রিটার্ন আসবে বলে আমাদের ধারণা।”
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক বঙ্গবন্ধু হাই টেক সিটির বিনিয়োগকারী ও ডেভেলপারদের নিয়ে পুরো প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন। কালিয়াকৈরে ৩৫৫ একর জমির উপর ‘বঙ্গবন্ধু হাই টেক সিটি’ দেশের হাই টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের প্রথম প্রকল্প।
হাই টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে সেখানে ‘অফসাইট’ অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ করেছে। গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর নয়টি কোম্পানিকে ২০.৫০ একর এবং পরে আরো ৯টি কোম্পানিকে ২৮ একর জমির প্লট বরাদ্দ করেছে।
হাই টেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম জানান, রবি, জেনেক্স, বিজেআইটি সফটওয়্যার, ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স, কেডিএস গ্রুপ, ইন্টারক্লাউড, বিজনেস অটোমেশন, নাসডাক টেকনোলজিস বঙ্গবন্ধু হাই টেক সিটিতে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে।
“কোম্পানিগুলো সেখানে প্রায় ১৪০.৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করার এবং ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।”
এছাড়া ডেটা সফট, আমরা হোল্ডিংস, স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম, ইউ ওয়াই সিস্টেম, এসবি টেল এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভ ফর জবস-শীর্ষক প্রকল্প এখানে দক্ষ জনশক্তি তৈরির কাজ করবে।
হোসনে আরা বেগম পরে বলেন, ইতোমধ্যে এই পার্ক থেকে আইটি পণ্য রপ্তানি শুরু হয়েছে। শিগগিরই এখান থেকে মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন হার্ডওয়্যার উৎপাদন শুরু হবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “হাই টেক পার্কে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আমরা তিন বছর ট্যাক্স মওকুফ করে দিচ্ছি। পাশাপাশি স্টার্ট-আপদের জন্য আমরা এখানে বিনামূল্যে স্পেস দিচ্ছি, যেন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হয়। বিনিয়োগে নতুন মাত্রা নিয়ে আসবে বঙ্গবন্ধু হাই টেক সিটি।”