সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খরগোশের গোশত খাওয়া কি হারাম?

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০১:২০ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার

খরগোশের গোশত খাওয়া হারাম কি-না এই ভেবে অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যান! তবে জেনে রাখুন, খরগোশের গোশত খাওয়াহারাম নয়। আল্লাহ তায়ালা খরগোশ হারাম করেননি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম নিজে খরগোশের ভুনা গোশত খেতেন এবং সাহাবীদের খরগোশের মাংস খেতে নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিস শরীফে এসেছে, হযরত সাহাবায়ে কিরাম (রদ্বিয়াল্লাহুতায়ালাআনহুম) আমাদের প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামকে খরগোশের গোশত হাদিয়া প্রদান করলে তিনি তা গ্রহণ করেছেন,তা খেয়েছেন এবং খেতেও বলেছেন। শরীয়তের দলিল দ্বারা এটি স্পষ্ট ,খরগোশের গোশত হালাল।

 

নাসায়ী শরীফের আরেক হাদীসে এসেছে, এক গ্রাম্য ব্যক্তি ভূনা করা খরগোশের গোশত সঙ্গে রুটি নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লামের সামনে এনে বললো, নবীজি আমি এর হায়েজ হতে দেখেছি। তখন প্রিয় নবী তার সাহাবীদের বললেন, কোনো সমস্যানেই, তোমরা খাও এবং গ্রাম্য ব্যক্তিকে বললেন, খাও। (নাসায়ী, হাদীস নং ২৪২৭)

খরগোশ নিরীহ একটি প্রাণী। এরা অধিক উৎপাদনশীল যা প্রতি মাসেই বাচ্চা দিতে সক্ষম এবং দ্রুত বর্ধনশীল মাত্র তিন মাস বয়সেপূর্ণ বয়স্ক হয়ে বাচ্চা জন্মদানে সক্ষম হয়ে থাকে। অল্প মূলধন এবং কম পরিশ্রমে খরগোশ পালন অধিক লাভজনক। তৃণভোজীপ্রাণী হওয়ার কারণে এদের খাদ্য অনেক সহজলভ্য এবং এদের খাদ্যে চাহিদাও অল্প। বহির্বিশ্বে এর মাংস ও চামড়ার ভালো চাহিদারয়েছে। তাই এটি লালন পালনের মাধ্যমে অতিরিক্ত লাভ এবং বেকারদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের পথ সৃষ্টি করা যেতে পারে।অন্যান্য পেশার পাশাপাশি চাইলে খরগোশ লালন পালনের মাধ্যমে যে কেউ অতিরিক্ত আয় করতে পারে। খরগোশ পালন সংক্রান্তযেকোনো তথ্য স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায়ে পশু কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে ও যুব উন্নয়নঅধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে সংগ্রহ করা যায় এবং যেকোনো ধরনের সহযোগিতা নেয়া যায়।

 

খরগোশ গৃহপালিত হওয়ায় খুব সহজে লালন পালন করা সম্ভব। বলতে দ্বিধা নেই খরগোশের গোশত খাওয়া শুধুমাত্র হালাল নয়,সুন্নত ও বটে। বর্তমানে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের দেশসমূহেও এই মাংস দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।খরগোশের গোশত প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারে। বর্তমানে অনেক খামারে আধুনিক প্রক্রিয়ায় খরগোশ লালন পালন করা হচ্ছে।খরগোশের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রোটিনের চাহিদা মেটানো হচ্ছে এবং বেঁকারদের নতুন কর্মসংস্থানের মাধ্যম হচ্ছে। মহানআল্লাহ তায়ালা আমাদের হালাল খাবার গ্রহণ করার এবং হালাল রুটি রুজির ব্যবস্থা করার তৌফিক দান করুক। আল্লাহুম্মা আমিন।