হজযাত্রীদের বিমানভাড়া ১০ হাজার টাকা কমছে
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০২:১০ পিএম, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বুধবার
২০১৯ সাল থেকে হজযাত্রায় বিমানভাড়া ১০ হাজার টাকা কমছে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি হজযাত্রীপ্রতি বিমানভাড়া ছিল এক লাখ ৩৮ হাজার ১৯১ টাকা। এ বছর তা কমিয়ে এক লাখ ২৮ হাজার ১৯১ টাকা ধার্য করা হচ্ছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ১৭-০১-২০১৯ সচিবালয়ে হজযাত্রীদের বিমানভাড়া কমানোর ঘোষণা দেন। এর আগে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে হজসংক্রান্ত আন্ত মন্ত্রণালয়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে গণমাধ্যমকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, হজযাত্রীদের সাশ্রয়ের কথা ভেবে বিমানভাড়া ১০ হাজার টাকা কমানো হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, চলতি বছর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হজ অধিকতর সুচারুভাবে পালনের লক্ষ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে সর্বাত্মক সহায়তা করা হবে। হাজিরা আল্লাহর ঘরের মেহমান। তাদের যেন কোনো ধরনের কষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় খেয়াল রাখেন এবং পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
সচিবালয়ে ওই সভায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ, ধর্মসচিব মো. আনিছুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক, হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি আবদুস সোবহান, মহাসচিব এম শাহাদাত হোসেন তসলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবারের হজব্যবস্থাপনাকে সবচেয়ে ভালো করা হবে। পবিত্র হজ পালনের জন্য বাংলাদেশ থেকে রওনা হওয়া থেকে শুরু করে হজ পালন শেষে ফিরে আসা পর্যন্ত সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে।
২০১৮ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাত হাজার ১৯৮ ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার বাংলাদেশি হজব্রত পালন করেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ৫০ ভাগ ও সৌদি এয়ারলাইনস অবশিষ্ট ৫০ ভাগ যাত্রী পরিবহন করে।
৩৭ হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২০১৭ সালে হজ কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ ও সৌদি আরবে অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত শেষে চূড়ান্তভাবে ৩৭ হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
জামানত বাজেয়াপ্ত, হজ লাইসেন্স বাতিল, স্থগিত, সর্বনিম্ন এক লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আর্থিক জরিমানা, হজযাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরত ও নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখাসহ নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ৩৫টি হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ১৭টি এজেন্সির হজ লাইসেন্স বাতিল ও ছয়টি এজেন্সির লাইসেন্স বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিত করা হয়েছে। এই ২৩টি এজেন্সিকে আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে। আর ১২টি এজেন্সিকে শুধুই আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা না দিলে এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এসব বিষয়ে গত ১৬ জানুয়ারি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
২০১৭ সালে হজে অনিয়মের জন্য বাংলাদেশ ও সৌদি আরবে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের পরই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হাজিরা হলেন আল্লাহর মেহমান। এই আল্লাহর মেহমানদের নিয়ে যারা অনিয়ম করবে, তাদের কোনোভাবেই ছাড়
দেওয়া হবে না। আগে যারা অনিয়ম করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মধ্য দিয়েই এই কঠোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে।’
ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগের উন্মুক্ত সুযোগ
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ সর্বসাধারণের উন্মুক্ত যোগাযোগের জন্য সম্প্রতি নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বই-পত্র স্ক্রিন কপি প্রস্তুত করার পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করার কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য জানার জন্য এবং যেকোনো সেবা ও পরামর্শের জন্য ফেসবুক, টুইটার, ই-মেইল ও ফোন নম্বর উন্মুক্ত করা হয়েছে।