বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম ১০টি দেশ
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:৪৯ এএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শনিবার
বিশ্বের ১৯৫ টি স্বাধীন দেশের প্রত্যেকটিরই নিজস্ব কিছু ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একটি স্বাধীন রাষ্ট্র মানেই বিশাল আয়তন জুড়ে অবস্থিত সকল উচ্চ পর্যায়ের সুযোগসুবিধা সম্পন্ন হতে হবে তা কিন্তু নয়। কোন কোন দেশ একটি শহরের চেয়েও আয়তনের দিক থেকে ছোট হয়ে বিশ্ব ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। এমনকি এই ছোট্ট দেশগুলোর জীবনযাত্রার মানও বেশ ঈর্ষণীয় পর্যায়ের। আজকে আমরা বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দশটি দেশ সম্পর্কে জানবো যেগুলো মানচিত্রে হয়তো খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হলেও নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস, প্রাচুর্য নিয়ে সেগুলো স্বমহিমায় উজ্জ্বল। তো চলুন সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাক-
১. ভ্যাটিকান সিটি (Vatican City)
আয়তন: ১১০ একর। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশ ভ্যাটিকান সিটি ইতালির রোম শহরের ভিতরে অবস্থিত স্বাধীন একটি রাষ্ট্র। পোপ এখানকার রাষ্ট্রনেতা। এটি রোমান ক্যাথলিক গির্জার বিশ্ব সদর দপ্তর হিসেবে কাজ করে। সম্পূর্ণভাবে রোমের অভ্যন্তরে অবস্থিত দেশটি ১১০ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত৷ দেশের জনসংখ্যা প্রায় ১ হাজার। আয়তন ও জনসংখ্যার বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ এটি। স্বাধীন দেশ বলে স্বীকৃত হলেও ভ্যাটিকান সিটিকে বিশ্বের অন্যান্য ক্ষমতাসীন রাষ্ট্র ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করতে চায় না ভ্যাটিকানবাসীরা। যে কারণে এই দেশের কোনো সেনাবাহিনী নেই। তবে ইতালির ১১০ সেনা ভ্যাটিকান সিটির পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। ধর্মগুরু পোপ ভ্যাটিকানের ‘সেরিমোনিয়াল চিফ’ হিসেবে অভিহিত হয়ে থাকেন। এখানকার শাসন ব্যবস্থায় নিজস্ব একটি পদ্ধতি ও রীতি রয়েছে। দেশ হিসেবে যতই ছোটো হোক বিশ্বের সবচেয়ে বড় গির্জা সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা কিন্তু ভ্যাটিকান সিটিতেই রয়েছে। আর বিখ্যাত ইতালিয়ান চিত্রকর মাইকেল এঞ্জেলোর ‘পিয়েতা’ ও ‘দ্য ক্রিয়েশন অফ অ্যাডাম’ রাখা আছে সেই গির্জাতেই। ১৯২৯ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করলেও এখনো জাতিসংঘের সদস্য হতে পারেনি। সারা বিশ্বের অন্যতম পবিত্র স্থান বলে ঘোষিত ভ্যাটিকান সিটিকে ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘ ‘বিশ্ব ঐতিহাসিক স্থান’ হিসেবে ঘোষণা করে।
২. মোনাকো ( Monaco)
আয়তন: ২ বর্গ কিলোমিটার। মাত্র ২ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ইউরোপ মহাদেশের দেশটিতে জনসংখ্যা প্রায় ৩৮,৪০০ জন। এই রাষ্ট্র আয়তনে পৃথিবীর ২য় ক্ষুদ্রতম এবং পৃথিবীর সর্বোচ্চ জনবহুল রাষ্ট্র। মোনাকোর তিন পাশেই আছে ফ্রান্স, অন্যদিকে ভূমধ্যসাগর। ফ্রান্সের নিকটবর্তী দেশ হওয়াতে ফ্রান্সের বেশ আধিপত্য রয়েছে দেশটির উপর। দেশটির সরকারি ভাষাও ফরাসি। এখানে রয়েছে বিখ্যাত মন্টি কার্লো ক্যাসিনো। এই ক্যাসিনোকে ঘিরে পৃথিবীর ধনী মানুষের আগ্রহের অন্ত নেই, কেননা এই ক্যাসিনোকে পৃথিবীর সবচাইতে নিরাপদ ক্যাসিনো হিসেবে ধরা হয়। তবে মজার ব্যাপার হলো, মোনাকোর স্থানীয় বাসিন্দাদের এই ক্যাসিনোতে ঢোকার অনুমতি নেই। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্র গুলোর মাঝে মোনাকো অন্যতম। ধনকুবের ও তারকাদের প্রাসাদের ছড়াছড়ি এই দেশে। মোনাকোকে ধনীরা বেছে নিয়েছেন বিনোদন আর আয়েশের আবাসস্থল হিসেবে। দেশের মূল আকর্ষণ হলো কর ব্যবস্থা। মোনাকো সম্পূর্ণ কর মুক্ত একটি দেশ। দেশটির সবচাইতে চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, ধন সম্পদে পরিপূর্ণ হলেও নিরাপত্তার দিক দিয়ে এটি বেশ শক্তিশালী। কোনোরকম অপরাধের কথা শোনা যায় না বললেই চলে। মোনাকো এতটা নিরাপদ হওয়ার মূল কারণটি হলো দেশটির চারপাশ ঘিরে রয়েছে হাজার হাজার ক্যামেরা। পুরো দেশটিই ক্যামেরার আয়ত্তে রয়েছে।
৩. নাউরু ( Nauru)
আয়তন: ২১ বর্গ কিলোমিটার। বিশ্বের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ নাউরু অস্ট্রেলিয়ার পূর্বে অবস্থিত মাত্র ২১ বর্গ কিলোমিটারের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দ্বীপ রাষ্ট্রও এটি। এর পাশাপাশি এটি বিশ্বের ক্ষুদ্রতম স্বাধীন প্রজাতন্ত্র। এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে কম জনবহুল দেশের মাঝে এটি দ্বিতীয় জনসংখ্যা প্রায় ১০,০৮৪ জন। নাউরু ফসফেট খনিজে সমৃদ্ধ। ওশেনিয়া অঞ্চলের এই দেশকে অনেকে অস্ট্রেলিয়ার কোনো দ্বীপ বলেই মনে করতেন। তবে নাউরু কিন্তু স্বাধীন একটি দেশ। রাজধানী বিহীন একটি দেশ এটি। ১৯০৭ সাল থেকে এখানকার অর্থনীতির প্রধান আয় আসে ফসফেট খনিজ আকরিক আহরণের মাধ্যমে। তবে বর্তমানে খনিজ ফসফেট প্রায় শেষ হয়ে এসেছে আর এ কারণের বেকারত্বের হার দিন দিন বেড়ে চলেছে। মাত্র ১০ শতাংশ জনগণকে চাকরি দিয়েছে সরকার বাকি সবাই প্রায় বেকার। দেশটি ছোট হলেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে শীর্ষ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি স্থূলকায় মানুষের দেশ হিসেবেও প্রথমেই আসে এই নাউরুর নাম।
৪. টুভ্যালু (Tuvalu)
আয়তন : ২৬ বর্গ কিলোমিটার। ৫ টি প্রবাল প্রাচীর এবং ৪টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত মাত্র ২৬ বর্গ কিলোমিটারের বিশ্বের চতুর্থ ক্ষুদ্রতম এই দেশটিকে স্বাধীন দেশ হিসেবে অনেকে মানতেই চায় না। টুভ্যালু বিশ্বের নিচু দেশগুলোর মাঝে একটি৷ সর্বোচ্চ চূড়াটি টি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪.৫ মিটার উচ্চতায় অবস্হিত। দেশটির আকার এবং অবস্থান বিশ্বের অন্য দেশের দৃষ্টি থেকে দেশটিকে লুকিয়ে রাখে। বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুযায়ী বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দ্বীপটি ভবিষ্যতে ডুবে যেতে পারে। জাতিসংঘের ১৮৯ তম সদস্য দেশ টুভ্যালু। ১৯৭৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করা দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১০৬৪০ জন এর মতো। এখানে আয়ের বড় অংশ আসে ব্যবসা থেকে। অর্থনৈতিকভাবে প্রায় সবাই এখানে স্বচ্ছল। সাজানো গোছানো, ছিমছাম দেশটি পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষ দিকেই থাকে সবসময়।
৫. সান মারিনো ( San Marino)
আয়তন: ৬১ বর্গ কিলোমিটার। ৬১ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত দেশটি ইউরোপের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ। এই ক্ষুদ্র দেশটি চারপাশ থেকেই ইতালি দিয়ে ঘেরা। শান্তিপ্রিয় দেশ সান মারিনো বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো সার্বভৌম রাষ্ট্র। ৩০১ খৃষ্টাব্দে মারিনো নামে এক ব্যক্তি এবং তার সঙ্গে থাকা কিছু লোক এই স্থানটি খুঁজে পান। ৩৩,২৮৫ জন জনসংখ্যার এই দেশটিতে জনসংখ্যার চেয়ে গাড়ির পরিমাণ বেশি। জিডিপি অনুযায়ী দেশটি বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মাঝে একটি। দেশটির অর্থনৈতিক খাত মূলত পর্যটন, ব্যাংকিং এবং টেক্সটাইল নির্ভর। সান মারিনোর মাউন্ট তিতানো পর্যটকদের মুগ্ধ করে। এটি একটি Single landlocked country (একক স্থলবেষ্টিত দেশ)।
৬. লিখটেনস্টাইন ( Liechtenstein)
আয়তন: ১৬০ বর্গ কিলোমিটার। অস্ট্রিয়া এবং সুইজারল্যান্ডের মাঝে অবস্থিত ছোট্ট দেশটি মাত্র ১৬০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। সমগ্র বিশ্বের একমাত্র দেশ যেটি পুরোটাই আল্পসের উপর অবস্হিত। মাত্র ৩৭,৩৪০ জন লোকের জনসংখ্যার এই দেশটি আকারে ছোট হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বের সর্বোচ্চ জিডিপি রয়েছে এখানে। বেকারত্বের হার প্রায় নাই বলেই চলে মাত্র ১.৫ শতাংশ। বেশিরভাগ অধিবাসীরা রোমান ক্যাথলিক এবং সরকার রাজতন্ত্র আকারে গঠিত। লিখটেনস্টাইন মূলত জার্মান ভাষাভাষীর দেশ। কথিত আছে, বর্তমান সময়ের ঐতিহাসিক তথ্য, পূর্বাভাস, পরিসংখ্যান, চার্ট এবং অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাকি এই ক্ষুদ্র দেশ থেকেই আমদানি করে। দেশটির বেশিরভাগই পাহাড়। বসবাসের সমতল ভূমি খুবই কম। পাহাড়ে ছোট ছোট শহর গড়ে তোলা হয়েছে। প্রচুর আলপাইন গাছ রয়েছে এখানে। এটি ইউরোপের একমাত্র double landlocked country বা দ্বি স্তরীয় স্থলবেষ্টিত দেশ (যে সমস্ত দেশ শুধুমাত্র স্থলবেষ্টিত, কোন সমূদ্রসীমা নেই উপরন্তু এদের চারপাশে যে দেশগুলো আছে তাদেরও কোন সমূদ্রসীমা নেই)।
৭. মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ ( Marshall Islands)
আয়তন: ১৮১ বর্গ কিলোমিটার। মাত্র ১৮১ বর্গকিলোমিটারের দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। হাজার খানেক দ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠা দেশটির মাত্র ২৪টি দ্বীপ বসবাসের উপযোগী। ৫৩,০৬৬ জন জনসংখ্যার এই দেশ আমেরিকার রোষানলের শিকার হয়েছে বহুবার। ১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত আমেরিকা ৬৭ বার পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় এই দ্বীপে। ১৯৮৩ সালে ‘কম্প্যাক্ট ফ্রি অ্যাসোসিয়েশন’ চুক্তির মাধ্যমে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জকে একটি সার্বভৌম জাতি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দেশটির মুদ্রা হিসেবেও আমেরিকান ডলার ব্যবহার করা হয়। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও সংবিধানে সামরিক বাহিনী বা সেনাবাহিনী নেই। স্বচ্ছ নীল পানি এবং স্কুভা ডাইভিং এর জন্য পৃথিবী বিখ্যাত জায়গা এই দ্বীপ রাষ্ট্রটি। ১৬০ প্রজাতির কোরাল এবং ৮০০ প্রজাতির মাছের দেখা পাওয়া যায় এখানে।
৮. সেন্ট কিটস এবং নেভিস (Saint kitts and Nevis)
আয়তন: ২৬১ বর্গ কিলোমিটার। অষ্টম স্থানে থাকা ২৬১ বর্গ কিলোমিটারের দেশটি ক্যারিবিয়ান সাগরের দুইটি দ্বীপ। ১৯৪৮ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাস সর্বপ্রথম এখানে ভ্রমণ করেন৷ ইউরোপিয়ানরা সর্ব প্রথম এই দ্বীপপুঞ্জই দখল করেছিলো। ব্রিটিশ এবং ফরাসিরা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দেশটি শাসন করে এবং একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে দীর্ঘকাল চেষ্টার পর ১৭১৩ সালে ব্রিটিশরা উপনিবেশ গড়ে। অবশেষে ১৯৮৩ সালে যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হয়। মানচিত্রের দিকে তাকালে দেখা যাবে সেন্ট কিটস এবং নেভিস পশ্চিম গোলার্ধের একেবারে কোনায় অবস্থিত। ওয়েস্ট ইন্ডিস বা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ার মাতৃভূমি বলেই স্বীকৃত এই দেশটি। ছোট্ট এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৫৪,৮২১ জন। দেশটির অর্থনীতির বুনিয়াদ হিসেবে তাদের অল্প পরিসরে নিজস্ব উৎপাদন ব্যবস্থা বা কারখানা রয়েছে। এ ছাড়া বেশিরভাগ মানুষই সমুদ্র সম্পদ নির্ভর।
৯. মালদ্বীপ (Maldives)
আয়তন: ২৯৮ বর্গ কিলোমিটার। ভারত মহাসাগরে অবস্থিত হাজার খানেক দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ জনসংখ্যা, আয়তন সবদিক থেকেই এশিয়া মহাদেশের সবথেকে ছোট দেশ এবং সমগ্র বিশ্বে ৯ম স্থানে রয়েছে। এখানে প্রায় ১০৯০টির মতো দ্বীপ থাকলেও বসবাসযোগ্য মাত্র ২০০টি দ্বীপে জনসংখ্যা প্রায় ৪,২৭৭৫৬ জন। ছবির মতো অপূর্ব সুন্দর এই দেশটির আয়তন মাত্র ২৯৮ বর্গ কিলোমিটার৷ খৃষ্টপূর্ব ৫ম শতকে মালদ্বীপ অধিষ্ঠিত হয়৷ পর্তুগিজ, ডাচ এবং ব্রিটিশরা যথাক্রমে ষোড়শ, সপ্তদশ এবং উনবিংশ শতাব্দীতে মালদ্বীপ শাসন করে। অবশেষে ১৯৬৫ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। মালদ্বীপ বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মালদ্বীপের সর্বোচ্চ উচ্চতা মাত্র দুই দশমিক তিন মিটার এবং গড় উচ্চতা এক দশমিক পাঁচ মিটার। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে মালদ্বীপের পুরোপুরি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবুও পর্যটক আকর্ষণের জন্য যেন পসরা সাজিয়ে বসে আছে দেশটি। প্রতিবছর সেখানকার সাদা বালির সমুদ্র সৈকতের টানে ভিড় করেন লাখো ভ্রমণপিপাসু। এমনকি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মালদ্বীপের মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি।
১০. মাল্টা (Malta)
আয়তন: ৩১৬ বর্গ কিলোমিটার। আয়তনের দিক থেকে দশ নম্বরে থাকা রিপাবলিক অব মাল্টা মূলত ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত সাতটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। তবে তিনটি দ্বীপকে (মাল্টা, গজো, কমিনো) ঘিরেই বসতি গড়ে উঠেছে বসতি। এই দ্বীপ তিনটি মাল্টার সবচেয়ে বড় দ্বীপ হিসেবেও পরিচিত। ৩১৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ক্ষুদ্র দেশটিতে জনসংখ্যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ যা দেশটিকে বিশ্বের ঘনবসতি পূর্ণ দেশ গুলোর মাঝে একটিতে পরিণত করেছে। ছোট হলেও দেশটির ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য রয়েছে যথেষ্ট। পাওলা শহরে অবস্থিত প্রাগৈতিহাসিক স্থাপনা গুলোর মাঝে অন্যতম “হাইপোজিয়াম” যা ৫০০০ বছর পুরনো ভূগর্ভস্থ একটি স্থাপনা। এছাড়াও সাতটি প্রাগৈতিহাসিক মন্দির রয়েছে। ১৯৬৪ সালে মাল্টা যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। বর্তমানে পর্যটন শিল্পই দেশটির প্রধান আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করে। এর উষ্ণ আবহাওয়া, অসংখ্য বিনোদন স্পট, অসাধারণ স্থাপত্যকলা এবং ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যসহ নানা ঐতিহাসিক স্থাপনার কারণে পর্যটকদের কাছে দেশটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান।