মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভ্রূণতত্ত্বে কুরআনের সঙ্গে মিলে গেলো গবেষণা

নিউজ ডেস্ক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৪:২১ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

কয়েক বছর পূর্বে কিছু আরব গবেষক কুরআনে বর্ণিত ভ্রূণতত্ত্ব সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। একই সাথে তারা কুরআনের সূরা নাহলের ৪৩নং আয়াতটি অনুসরণ করেন, যাতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ “অতএব জ্ঞানীদের কাছে জিজ্ঞাসা করো, যদি তোমাদের জানা না থাকে” (সূরা নাহল : ৪৩)

গবেষক দল কুরআনে বর্ণিত ভ্রূণতত্ত্ব সম্পর্কিত সকল আয়াত একত্রিত করে ইংরেজিতে এর অনুবাদ ড. কেইথ মুরের কাছে প্রেরণ করেন। ড. কেইথ মুর ছিলেন কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান। তিনি মূলত ভ্রূণতত্ত্ব বিষয়ের অধ্যাপক ছিলেন। সে সময়ে তিনি ভ্রূণতত্ত্ব বিষয়ক গবেষকদের মধ্যে অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

তাকে অনুরোধ করা হয়, কুরআনে বর্ণিত ভ্রূণতত্ত্ব সংক্রান্ত আয়াতগুলো সম্পর্কে তার মতামত প্রকাশ করতে।

তার কাছে উপস্থাপিত কুরআনের আয়াতগুলো সতর্কতার সাথে পরীক্ষা করার পর তিনি বলেন, আধুনিক ভ্রূণতত্ত্বের আবিষ্কার অনুযায়ী কুরআনের অধিকাংশ আয়াতেরই মিল রয়েছে এবং তাদের মধ্যে কোন প্রকার সংঘর্ষ নেই।

 

তবে কুরআনের কিছু আয়াত রয়েছে, যার সম্পর্কে আধুনিক ভ্রূণতত্ত্বে কোন প্রকার ধারণা নেই। ফলে তার সত্যতা সম্পর্কে তিনি কোন মন্তব্য করতে পারছেন না।

এমনই একটি আয়াত হল,

اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ . خَلَقَ الْإِنسَانَ مِنْ عَلَقٍ

“পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন, সৃষ্টি করেছেন মানুষকে রক্তপিন্ড থেকে।” (সূরা আলাক, আয়াত: ১-২) 

কুরআনে উল্লিখিত ‘আলাক’ শব্দটির অর্থ রক্তপিন্ডের পাশাপাশি জোঁকের মত ঝুলন্ত বস্তুকেও নির্দেশ করে। ড. কেইথ মুরের ধারণা ছিল না, মাতৃগর্ভের একটি ভ্রূণ দেখতে ঝুলন্ত জোঁকের মত হয় কিনা। বিষয়টি পরীক্ষা করার জন্য ভ্রণ সম্পর্কে তিনি সতর্কতার সাথে গবেষণা শুরু করলেন। শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে তিনি মাতৃগর্ভের ভ্রূণকে পর্যবেক্ষণ করেন এবং জোঁকের গঠনের সাথে তার তুলনা করেন। উভয়ের মধ্যে আশ্চর্য সামঞ্জস্য পেয়ে তিনি বিস্মিত হন।

একইভাবে তিনি ভ্রূণতত্ত্ব সম্পর্কে কুরআনে বর্ণিত তারা অজানা বিভিন্ন তথ্য নিয়ে গবেষণা করেন। ভ্রূণতত্ত্ব সম্পর্কে আটটি নতুন বিষয় সমাধানে তিনি কুরআন ও হাদীসের তথ্য ব্যবহার করেন।

ভ্রূণতত্ত্ব সম্পর্কে কুরআনের আয়াতসমূহ নিয়ে গবেষণার পর তিনি বলেন, “ত্রিশ বছর পূর্বেও যদি আমাকে এ সকল বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হত, আমি হয়তো তার অর্ধেকও উত্তর করতে পারতাম না।”

ভ্রূণতত্ত্ব সম্পর্কে ড. মুর এরপূর্বে “The Developing Human” নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। কুরআন থেকে নতুন তথ্য আবিষ্কারের পর ১৯৮২ সালে তিনি গ্রন্থটির তৃতীয় সংস্করণ রচনা করেন। গ্রন্থটি চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়নের একটি শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত হয়। বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়ে গ্রন্থটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চিকিৎসাশাস্ত্র শিক্ষার প্রথম বর্ষের পাঠ্যপুস্তক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।