মদ্যপানকে আল্লাহ এক আদেশেই কেন নিষিদ্ধ করলেন না?
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৪:২৩ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
কোন বস্তু গ্রহণের ক্ষেত্রে আল্লাহ আমাদের উপর দুই ধরণের আদেশ প্রদান করেছেন। একটি হল হালাল তথা গ্রহণযোগ্য এবং অপরটি হল হারাম অর্থাৎ নিষিদ্ধ। আল্লাহ তার জ্ঞানের ভিত্তিতেই আমাদের জন্য এই হালাল-হারামের বিধান করেছেন। ছোট বাচ্চাদেরকে পিতা-মাতা অনেক কাজ করতে বা অনেক কাজ করা থেকে বিরত থাকতে বলে। শিশুরা এর কারণ বুঝতে নাও পারে, কিন্তু পিতা-মাতা তাদের জ্ঞানের ভিত্তিতে তাদের সন্তানের কল্যাণের জন্য এই আদেশ প্রদান করে।
আল্লাহও ঠিক তেমনিভাবে আমাদের জন্য করণীয় এবং নিষিদ্ধের বিধান দান করেছেন। আমরা তা বুঝতে না পারলেও আমাদের কল্যাণের জন্যই তিনি আমাদের তা দান করেছেন।
বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে আমাদের জানা আছে মদ আমাদের জন্য বিশেষ করে আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর। পাশাপাশি মানসিক সমস্যা এবং এর থেকে সৃষ্ট সামজিক সমস্যার মধ্যেও মদপানকারী পতিত হতে পারে। তাছাড়া মদপানকারী হত্যা, ধর্ষণের মত অপরাধ সহজেই করতে পারে।
কিন্তু মদপানে অভ্যস্ত ব্যক্তি একেবারে হঠাৎ করেই মদ পান থেকে বিরত হতে পারে না। রাসূল (সা.) এর সময়ে আরবের লোকেরা প্রচুর মদপান করতো। একদম হঠাৎ করেই তা বন্ধ করে না দিয়ে আল্লাহ ধীরে ধীরে প্রথমে তাদেরকে মদপানে নিরুৎসাহিত করা, পরবর্তীতে মদ পান করে নামাযে আসতে নিষেধাজ্ঞা এবং শেষ পর্যন্ত মদপানে চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।
প্রথমত সূরা বাকারার ২১৯ নং আয়াত অবতীর্ণ হয় যাতে বলা হয়,
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا...
“তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে, তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়।” –সূরা বাকারা : ২১৯
পরবর্তীতে সূরা নিসার ৪৩ নং আয়াতে মদ পান করার পর নামায আদায়ে নিষেধ করা হয়। আয়াতটিতে বলা হয়,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنتُمْ سُكَارَىٰ حَتَّىٰ تَعْلَمُوا مَا تَقُولُونَ
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্থ থাকো, তখন নামাযের ধারে-কাছেও যেওনা, যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছো...” –সূরা নিসা : ৪৩
সর্বশেষ সূরা মায়েদার ৯০ নং আয়াতে মদপানে চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বলা হয়,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
“ওহে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কাজ ছাড়া কিছু নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাকো যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।” –সূরা মায়েদা : ৯০