রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৭ ১৪৩২   ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

ফিরে দেখা : ডেভিড হেয়ার

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৫:৩৮ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রোববার

বাংলায় ইংরেজী শিক্ষা প্রবর্তনের অন্যতম পথিকৃৎ ডেভিড হেয়ার ১৭৭৫ সালের আজকের এই দিনে (১৭ ফেব্রুয়ারি) স্কটল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। ঘড়ি নির্মাতা হিসেবে নিজের ভাগ্য গড়ার উদ্দেশ্যে তিনি ভারতে আসেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বাংলার সাধারণ মানুষের কল্যাণ সাধনে নিজেকে উৎসর্গ করেন।

তাঁর বাবা ছিলেন একজন ঘড়ি তৈরির কারিগর। ১৮০০ সালে হেয়ার কলকাতা আসেন এবং ঘড়ি তৈরি ও মেরামত করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন। উপার্জিত অর্থ নিয়ে তিনি দেশে ফিরে না গিয়ে বাংলায় স্থায়ী নিবাস স্থাপন করেন এবং বাকি জীবন তিনি এদেশের দুস্থ মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করেন।

১৮১৭ সালে কলকাতায়  হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা ছিল সমাজহিতৈষী হিসেবে ডেভিড হেয়ারের প্রথম উলে­খযোগ্য উদ্যোগ। একই বছর হেয়ার ইংরেজি এবং বাংলা পুস্তক মুদ্রণ ও প্রকাশনার জন্য ‘কলিকাতা স্কুল বুক সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করেন। কলকাতায় মেয়েদের জন্য বেশ কিছু অনানুষ্ঠানিক স্কুল স্থাপন করে হেয়ার নারীশিক্ষার পক্ষে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলেন। 

 

রাজা রামমোহন রায় এবং  ডিরোজিওর সঙ্গে ডেভিড হেয়ারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।  ইয়ং বেঙ্গলের একজন মিত্র হিসেবে হেয়ার তাদের সংগঠন ‘Society for the Promotion of General Knowledge (১৮৩৮)-এর পৃষ্ঠপোষক হন। নিষ্ঠুর শ্রম আইনের বিরুদ্ধে হেয়ার জনমত গড়ে তোলেন।

নতুন নতুন স্কুল এবং অন্যান্য জ্ঞানচর্চামূলক  প্রতিষ্ঠানের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য প্রদানের কারণে হেয়ার শেষ পর্যন্ত ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি ছিলেন দেশীয় এবং  অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের মধ্যে যোগসূত্র স্বরূপ। এ কারণে ব্রিটিশ সরকার হেয়ারকে কলকাতার শেরিফ পদের জন্য যোগ্য ব্যক্তি বলে মনে করে এবং ১৮৪০ সালে মাসিক ১০০০ রূপি বেতনে  উক্ত পদে নিয়োগ দিয়ে তাঁর ঋণমুক্তির ব্যবস্থা করে।

হেয়ার আকস্মিকভাবে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে ১৮৪২ সালের ১ জুন মারা যান। কলকাতাবাসীরা জনসাধারণের অনুদানে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণ করে।