মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১   ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শয়তান পৃথিবীর প্রথম বর্ণবাদী

নিউজ ডেস্ক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৪:২৭ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বর্ণবাদের প্রবক্তা হল ইবলিস। ইবলিসই প্রথম ব্যক্তি, যে তার অহেতুক বর্ণবাদের অহংকার থেকে আল্লাহর আদেশ মানতে অস্বীকার করেছিল। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,

وَلَقَدْ خَلَقْنَاكُمْ ثُمَّ صَوَّرْنَاكُمْ ثُمَّ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ لَمْ يَكُن مِّنَ السَّاجِدِينَ. قَالَ مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ ۖ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِّنْهُ خَلَقْتَنِي مِن نَّارٍ وَخَلَقْتَهُ مِن طِينٍ

“আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি অতঃপর তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছি, অতঃপর ফেরেশতাদেরকে বললাম, তোমরা আদমকে সিজদা করো। তারা সকলে সিজদা করলো কেবল ইবলিস ব্যতীত। সে সিজদা করলো না। আল্লাহ বললেন, আমি যখন তোমাকে আদেশ করেছি তখন কোন জিনিস তোমাকে সিজদা করা হতে নিষেধ করলো? ইবলিস বলল, আমি তাঁর থেকে উত্তম; আমাকে আপনি আগুণ থেকে সৃষ্টি করেছেন আর তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদামাটি থেকে।” – সূরা আ’রাফ: ১১-১২

উপরোক্ত আয়াতদ্বয়ে আমরা দেখতে পাই যে, আল্লাহ যখন তার নিকট উপস্থিত সকলকে মাটির তৈরি প্রথম মানুষ আদমকে সেজদার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন, তখন ইবলিশ তার সৃষ্টির দিকে লক্ষ্য রেখে আদমকে সেজদা করতে অস্বীকার করেছিল। সে আল্লাহর কাছে বলেছিল, যেহেতু আমি আগুনের তৈরি এবং আদম তৈরি কাদামাটি থেকে, সুতরাং আমি আদমের থেকে উত্তম।

কোন বিশেষ জাতের ভিত্তিতে কেউই উত্তম বা অধম হিসেবে নির্ধারিত নয়। বরং মানুষের মর্যাদা নির্ধারিত হয় তার অন্তরের তাকওয়া বা আল্লাহর ভীতি তথা আনুগত্যের মাধ্যমে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ

হে লোক সকল! নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একটি মাত্র নারী ও পুরুষ হতে এবং তোমাদেরকে বিন্যস্ত করেছি বিভিন্ন দল ও গোত্রে, যাতে করে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পারো। নিশ্চয়ই তোমাদের অধিক মর্যাদাশীল সেই, যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়াবান। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু জানেন, সবকিছুর খবর তাঁর আছে।” – সূরা হুজুরাত: ১৩

এটি সম্পূর্ণভাবে ন্যায়বিচারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কেননা তাকওয়া যে কেউই অর্জন করতে পারে। আপনার বর্ণ যাই হোক না কেন, যে দেশেই আপনি জন্ম গ্রহণ করে থাকেন না কেন অথবা আপনি নারী কিংবা পুরুষ যা-ই হোন, আপনিও তাকওয়া অর্জন করতে পারেন। এ জিনিস কেউ কুক্ষিগত করে নিজের পরিসরে সীমাবদ্ধ করে ফেলতে পারে না।

এই বিষয়টিই ইবলিস তথা শয়তান বুঝতে পারেনি। তার ফলে সে নিজের মিথ্যা অহংকারে আল্লাহর আদেশ অমান্য করে আল্লাহর আনুগত্য থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে সে চিরতরে আল্লাহর অভিশাপের পাত্রে পরিণত হয়।

আল্লাহ আমাদের বর্ণবাদের মিথ্যা অহংকার থেকে মুক্ত রেখে তাকওয়া অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমীন।