কথায় কাজে মিল-অমিল; প্রয়োজন আত্মার পরিশুদ্ধি
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৪:৪১ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার
ইসলাম কথা ও কাজের অমিল সম্পর্কে সতর্ক করেছে। বলা এক রকম আর অন্যরকম করা হবে – ইসলামে এ বড় নিন্দনীয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
أَتَأۡمُرُونَ ٱلنَّاسَ بِٱلۡبِرِّ وَتَنسَوۡنَ أَنفُسَكُمۡ وَأَنتُمۡ تَتۡلُونَ ٱلۡكِتَٰبَۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ
‘তোমরা কি মানুষকে ভাল কাজের আদেশ দিচ্ছ আর নিজদেরকে ভুলে যাচ্ছ? অথচ তোমরা কিতাব তিলাওয়াত করো। তোমরা কি বুঝ না?’ -সূরা বাকারা, আয়াত : ৪৪
উপরন্তু আল্লাহ তাআলা ওই সব লোকের সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণকে বৈধ করে দিয়েছেন, যারা সেই নিন্দনীয় পদ্ধতি এবং ঘৃণ্য আচরণ অবলম্বন করে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفۡعَلُونَ كَبُرَ مَقۡتًا عِندَ ٱللَّهِ أَن تَقُولُواْ مَا لَا تَفۡعَلُونَ
‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা তা কেন বলো, যা তোমরা করো না? তোমরা যা করো না, তা বলা আল্লাহর নিকট বড়ই ক্রোধের বিষয়।’ -সূরা আস-সাফ : ০২-০৩
দীনদার শ্রেণীর জন্য সবচে বিপজ্জনক বিষয় হলো, সৎ কাজের আদেশ করা অথচ নিজে না করা। ভালো কাজের প্রতি আহ্বান করা অথচ নিজে তা ভুলে থাকা। পার্থিব উদ্দেশ্যে ও প্রবৃত্তির স্বার্থে কুরআনের শব্দগুলোকে যথাস্থান থেকে পরিবর্তন-পরিবর্ধন করা এবং অকাট্য প্রমাণসমূহের উদ্দেশ্যমূলক ব্যাখ্যা তালাশ করা। এতে শুধু দাঈ ও ধার্মিকরাই সন্দেহপূর্ণ হয়ে যান না; তাদের দীনদারী ও দাওয়াতও সংশয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এতে করে দীনের ওপর মানুষের আস্থায় চিড় ধরে যেমন আস্থাহীন হয়ে পড়েন ওই দীনদার ব্যক্তি।
কারণ, শব্দ যদি বিশ্বাসের আধার তথা অন্তর থেকে উৎসারিত হয় না হয়, তবে তা উচ্চারিত হয় শুষ্ক ও প্রাণহীন অবস্থায়। যার কোনো আবেদন থাকে না। মানুষ কোনো কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে না যাবৎ তার কথা কাজে অনূদিত হয়। তার বাক্য উচ্চারণ কর্মের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়। তাইতো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বলা হয়েছে : (রাসূলকে দেখতে চাও, তবে কুরআন দেখ। কারণ,) ‘কুরআনই তার চরিত্র।’ -সহিহ মুসলিম : ৭৪৬
কথা ও কাজ এবং আকীদা ও আচরণের মধ্যে মিল সৃষ্টির জন্য দরকার আত্মশুদ্ধির অনুশীলন। আর তা হয় আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক গড়া এবং তাঁর সাহায্য ও তাওফীক প্রার্থনার মাধ্যমে। জীবনের ময়দান এবং বাস্তবতার টানাপোড়েন প্রায়শই মানুষকে স্বভাবজাত দুর্বলতা ও সর্বত্র ছড়িয়ে পড়া মন্দের উপাদানের কারণে অন্যের আহ্বান করা পথ থেকে দূরে নিয়ে যায়। তবে সর্বদা কুরআনকে আঁকড়ে ধরা এবং সালাত ও সবরের মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার মাঝে রয়েছে সুরক্ষিত প্রাচীর। এটি তার বাহককে জটিলতার গহ্বর এবং অপদস্ততার খাদ থেকে রক্ষা করে। ইরশাদ হয়েছে :
إِنَّ هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانَ يَهۡدِي لِلَّتِي هِيَ أَقۡوَمُ وَيُبَشِّرُ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٱلَّذِينَ يَعۡمَلُونَ ٱلصَّٰلِحَٰتِ أَنَّ لَهُمۡ أَجۡرٗا كَبِيرٗا
‘নিশ্চয় এ কুরআন এমন একটি পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল এবং যে মুমিনগণ নেক আমল করে তাদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।’ -সূরা বনী ইসরাইল : ০৯