দায় কাউকে না কাউকে নিতেই হবে: হাইকোর্ট
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:০৮ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার
রাজধানীর চকবাজারের আগুনের ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত উল্লেখ করে আদালত বলেছেন, এটাকে দুর্ঘটনা বলা যাবে না, এটা অবহেলা। এর দায় কাউকে না কাউকে নিতেই হবে। একজন দায়িত্বশীল আরেকজনের উপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন, এটা ঠিক না। আমাদের অর্থনীতি অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা দেশের ভাব মর্যদা নষ্ট করে দিচ্ছে।
চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ, কেমিক্যাল অপসারণসহ কয়েক দফা নির্দেশনা চেয়ে করা পৃথক তিনটি রিটের শুনানি করে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এসব কথা বলেন।
শুনানির শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সময় আবেদন করেন। পরে রিটের শুনানি মুলতবি করেন আদালত। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সরকার খুব আন্তরিক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় আদালত বলেন, নিমতলীর ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির যে সুপারিশ ছিল, সেগুলোর বাস্তবায়ন হলে চকবাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটতো না। সরকার এই ঘটনার বিষয়ে খুবই আন্তরিক। এ সময় আদালত বলেন, আন্তরিক হলে লাভ নেই। মানুষতো চলে গেছে। কাজ তো করতে হবে।
আদালত আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই চকবাজারের ঘটনা তদরকি করেছেন। এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বলেন, ওনি তো একা দেশ চালাতে পারবেন না। সুপারিশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনেরও দায়িত্ব রয়েছে। আদালত বলেন, ওই সব এলাকার বাড়ির মালিকরা তিনগুণ বেশিতে গোডাউন ভাড়া দেন। আর নিজেরা থাকেন গুলশানে। মারা যায় গরিব মানুষ। সিটি কর্পোরেশন দেখেও না দেখার ভান করে। যারা রাস্তায় মারা গেল তাদের কী দোষ?
আদালত আরো বলেন, পত্রিকায় দেখেছি, সুপারিশ বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এটা বাস্তবায়ন করা তাদের দায়িত্ব ছিল। আমরা জানি না তারা কেনো পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা। পদক্ষেপ না নিলে ধরে নিতে হবে তাদের অবহেলা ছিল।
এদিকে নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়ন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নুর মোহাম্মদ আলী ও খন্দকার মো. সায়েদুল কাউছার এবং জেড আই খান পান্না রোববার আলাদা দুটি আবেদন করেন।
এছাড়া কেমিক্যালের গোডাউন ও কারখানা এবং ব্যবসার উদ্দেশ্যে মজুদ করা গ্যাস সিলিন্ডার অপসারণের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, রুল জারির আরজি জানিয়ে বংশালের বাসিন্দা মো. জাবেদ মিয়া আরেকটি রিট আবেদন করেন। আর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আরেকটি রিট আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
নুর মোহাম্মদ আলী ও খন্দকার মো. সায়েদুল কাউছার, ইউনুছ আলী আকন্দ ও মো. জাবেদ মিয়ার করা তিনটি রিট বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চে শুনানি হচ্ছে।