মুজাদ্দিদে আলফে সানী (রহ.) এর জীবন ও কর্ম
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৩:৫৩ পিএম, ৬ মার্চ ২০১৯ বুধবার
মহান আল্লাহ তায়ালা দীন ইসলামকে হেফাজতের জন্য যুগে যুগে সংস্কারক প্রেরণ করেন, যিনি দীন ইসলামকে যাবতীয় কুসংস্কার থেকে মুক্ত করে প্রকৃত আদর্শের উপর পূনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
রাসুল (সা.) ও এক হাদীসে এ বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা এ উম্মতের (কল্যাণে) প্রত্যেক শতাব্দীতে এমন এক ব্যক্তিকে পাঠাবেন, যিনি তাদের দীনকে সংস্কার করবেন।’ (আবু দাউদ-৪২৯১) তারই ধারাবাহিকতায় আগমন ঘটে শাইখ আহমদ সিরহিন্দি (রাহ.) এর। তিনি ছিলেন মুজাদ্দিদে আলফে সানী।
মুজাদ্দিদ অর্থ হচ্ছে সংস্কারক। আলফ মানে হাজার আর সানী অর্থ হচ্ছে দ্বিতীয়। অতএব, মুজাদ্দিদে আলফে সানী অর্থ হচ্ছে দ্বিতীয় সহস্রাব্দের মুজাদ্দিদ বা সংস্কারক। শাইখ আহমদ সিরহিন্দি (রাহ.) ছিলেন দ্বিতীয় হাজার বছরের মুজাদ্দিদ।
তার আগমন কালে উপমহাদেশের ধর্মীয় অবস্থা:
তার জন্মের সময় জালালুদ্দীন আকবর ছিলো ভারতবর্ষের শাসক। আকবরের পিতা হুমায়ূন, আকবরের জন্মের পর থেকে প্রতিপক্ষের আক্রমনে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালিয়ে বেড়িয়েছিলো। তাই ভারতবর্ষের এই ভাবী সম্রাটের লেখা-পড়ার সুযোগ হয়নি। অশিক্ষিত এই ব্যক্তি অতিঅল্প বয়সেই পিতার সিংহাসনে বসে।
সম্রাট নিজে অশিক্ষিত থাকলেও জ্ঞানের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ ছিলো। তাই সে তার দরবারে জ্ঞানী-গুণীদের সমাবেশ ঘটালো। ওই সময় জ্ঞানী বলতে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিরাই ছিলো; যাদেরকে সমাজ আলেম হিসেবে জানত। সাধারণত রাজা-বাদশাদের পাশে দুনিয়াদার আলেমরাই জমা হয়। সম্রাট আকবরের কাছে বিতর্ক ছিলো একটি প্রিয় বিষয়। তাই সম্রাট দরবারী আলেমদের দিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠান করতো। অপরিণামদর্শী দুনিয়াদার ওই আলেমরা শরয়ী বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক করতো।
একজন একটি বিষয় প্রমাণ করেছে তো আরেকজন ওই বিষয়টিকে প্রতিহত করেছে। এর দ্বারা ধীরে ধীরে আকবরের মনে ইসলাম সম্পর্কে সন্দেহ সংশয় বাসা বাঁধতে থাকে। আলেমদের মধ্য থেকে একশ্রেণীর প্ররোচনায় প্রথমে সে নিজেকে মুজতাহিদ দাবী করে এবং বলে নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর নবুওয়াতের সীমা ছিলো একহাজার বছর পর্যন্ত। এখন নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। এখন থেকে চলবে সম্রাটে আকবরের দীনে ইলাহী। এভাবে সে দীন ইসলামকে রহিত করে, দীনে ইলাহী নামে নতুন ধর্মের প্রবর্তন করে।