জুমার দিনের যত ফজিলত
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৬:৩১ পিএম, ১৩ মার্চ ২০১৯ বুধবার
আমলের দিক থেকে মহান আল্লাহ তায়ালা যেসব দিনকে ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করেছেন এর অন্যতম হলো জুমার দিন।
এ দিনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক আহকাম ও ঐতিহাসিক নানা ঘটনা। সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ।
কোরআন-হাদিসের বিভিন্ন ব্যাখ্যা দ্বারা এই দিনের মর্যাদার কথা জানা যায়।
প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) বলেছেন, নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।( ইবনে মাজাহ)।
অন্য হাদিসে আছে, যেসব দিনে সূর্য উদিত হয়েছে এরমধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন। জুমার দিনকে মুসলমানদের ঈদের দিন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
জুমার ফজিলত সম্পর্কে প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ ( সা.) বলেছেন, এক জুমা থেকে অপর জুমা উভয়ের মাঝের (গোনাহের জন্য) কাফ্ফারা হয়ে যায়, যদি কবিরা গোনাহের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়ে থাকে। (মুসলিম)।
রাসূলুল্লাহ (সা.) অন্য হাদিসে বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করে সকাল সকাল মসজিদে আসবে এবং ইমামের নিকটবর্তী হবে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনবে ও চুপ থাকবে তার জুমার সালাতে আসার প্রত্যেক পদক্ষেপে এক বছরের নামাজ ও রোজা পালনের সওয়াব হবে। (তিরমিজি)
জুমার দিনের কিছু আমল:
(১) জুমার দিন গোসল করা। যাদের ওপর ফরজ তাদের জন্য এ দিনে গোসল করাকে রাসুল সা. ওয়াজিব বলেছেন।
(২) জুমার নামাজের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা।
(৩) মিস্ওয়াক করা।
(৪) উত্তম পোশাক পরিধান করে সাধ্যমতো সাজসজ্জা করা।
(৫) মুসল্লিদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা।
(৬) মনোযোগ সহকারে খুত্বা শোনা এবং খুত্বা চলাকালীন চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব।
(৭) আগে থেকেই মসজিদে যাওয়া।
(৮) সম্ভব হলে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
(৯) জুমার দিন ও জুমার রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।
(১০) নিজের সবকিছু চেয়ে এ দিন বেশি বেশি দোয়া করা।
(১১) কেউ মসজিদে কথা বললে ‘চুপ করুন‘ এতোটুকুও না বলা।
(১২) মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন না খাওয়া ও ধূমপান না করা।
(১৩) খুত্বার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। কোনো ব্যক্তি যদি জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হয়, কিন্তু ইচ্ছা করেই জুমার নামাজে ইমাম থেকে দূরে বসে, তবে সে দেরীতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
(১৪) এতোটুকু জোরে আওয়াজ করে কোনো কিছু না পড়া, যাতে অন্যের ইবাদত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে।
জুমার আজানের আগেই সব কর্মব্যস্ততা ত্যাগ করে জুমার নামাজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে মসজিদে গমন করা মুসলমানদের ঈমানি দায়িত্ব।
জুমার নামাজ সম্পর্কে প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) আরো বলেছেন, যে ব্যক্তি বিনা কারণে তিন জুমার নামাজে যাওয়ায় অবহেলা করে সে যেন ইসলামকে অবজ্ঞা করল এবং তার হৃদয়ে মরিচা পড়ে যায়।
দু:খের বিষয় বর্তমানে জুমার আজানের পরও মসজিদগুলো ফাঁকা থাকে। খুৎবার শেষ পর্যায়ে তড়িঘড়ি করে মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করে যা ধর্মীয় দৃষ্টিতে অপছন্দনীয়।
জুমা দিবসে মুসলমান ধনী-দরিদ্র, উচু-নীচু, ছোট-বড় সকলে একই কাতারে দাঁড়িয়ে জুমার নামাজ আদায় করে। কেননা মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র জুমার নামাজ আমাদের উপর অপরিহার্য করেছেন।
মহান আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা: হে ঈমানদারগণ! যখন জুমার দিন নামাজের জন্য তোমাদের আহ্বান করা হয় তখন তোমরা বেচাকেনা ত্যাগ করে তাড়াতাড়ি আল্লাহকে স্মরণ করতে উপস্থিত হও। যখন সালাত বা নামাজ শেষ হয় তখন তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড়। (সূরা জুমা: ৯)।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সালাতুল জুমা বা জুমার নামাজ আদায়ের জন্য আহবান করেছেন।
প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.)- এর বাণী, যে ব্যক্তি অলসতা করে পর পর তিন জুমা উপস্থিত হবে না আল্লাহ তায়ালা তাঁর অন্তরে মোহর লাগিয়ে দেবেন।