ইসলামে পোশাকের মূলনীতি কী?
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০২:৩৩ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৯ শুক্রবার
মুসলিম নারী-পুরুষের পোশাক কি হবে, বা কোন ধরণের পোশাক ইসলামিক আর কোন ধরণের পোশাক অনৈসলামিক বা সাধারণ মানুষের নিত্য ব্যবহৃত পোশাক শার্ট-প্যান্ট কি অমুসলিমদের পোশাক কি না, এমন নানা প্রশ্ন আমাদের থাকে।
আসলে ইসলামী শরীয়ত নারী-পুরুষের পোশাক কেমন হবে এর কিছু মূলনীতি নির্ধারণ করে দিয়েছে। এগুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে যে কোন ধরণের পোশাক পরিধান করা জায়েয। নিম্নে মূলনীতিগুলো উল্লেখ হল-
১। পোশাক অমুসলিমদের ধর্মীয় পোশাকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ ও সাধারণভাবে ফাসেকদের পোশাকের মত না হওয়া।
২। পুরুষদের জন্য মহিলা সদৃশ এবং মহিলাদের জন্য পুরুষ সদৃশ কাপড় পরিধান না করা।
৩। পোশাক এমন খাটো, পাতলা বা টাইটফিটিং না হওয়া যাতে যে সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঢেকে রাখা ওয়াজিব সেগুলো প্রকাশ পায় বা আকৃতি ফুটে উঠে।
৪। পুরুষদের জন্য পুরোপুরি রেশমের (সিল্ক) কাপড় পরিধান না করা।
৫। পুরুষদের জন্য জামা, পায়জামা, লুঙ্গি, জুব্বা, চাদরসহ সকল প্রকার পোশাক টাখনুর উপরে রাখা।
৬। নিজ আর্থিক সামর্থ্য থেকে বেশী দামের কাপড় পরিধান না করা।
৭। সম্পদশালী হওয়ার পরেও এমন নিম্নমানের পোশাক পরিধান না করা যাতে মানুষ তাকে অসহায় গরীব মনে করে।
৮। অহংকার, রিয়া বা লৌকিকতার উদ্দেশ্য কাপড় পরিধান না করা।
৯। পোশাক পরিস্কার-পরিছন্ন রাখা।
১০। পুরুষের জন্য নিসফে ছাক অর্থাৎ পায়ের গোছার অর্ধ পর্যন্ত, সর্বনিম্ন পায়ের টাখনু পর্যন্ত লম্বা হওয়া সুন্নাত।
১১। সাদা রং এর কাপড় পরিধান করা মুস্তাহাব। তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাঝে মধ্যে কালো, সবুজ ইত্যাদি রংয়ের কাপড়ও ব্যবহার করেছেন। তাই মাঝে মধ্যে সাদা ছাড়াও অন্যান্য রংয়ের কাপড় পরিধান করা মুস্তাহাব। তবে পুরুষদের জন্য জাফরান, কুসুম-লাল ও নিরেট লাল রংয়ের কাপড় পরিধান না করা চাই।
উপরোক্ত মূলনীতিগুলো বজায় রেখে যে কোন পোশাক পরিধান করলে তা সুন্নাতী ও শরীয়াত সম্মত পোশাক বলে গণ্য হবে। আর শার্ট-প্যান্ট অমুসলিমদের পোশাক নয়। কেননা এটা অমুসলিমদের ধর্মীয় পোশাকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়। তবে এটা ফাসেকদের পোশাক হবে যদি উপরোক্ত মূলনীতির বাইরে চলে যায়। যেমন টাইট-ফিটিং হওয়া, ফ্যাশনেবল হওয়া বা কোন নায়ক-নায়িকার অনুকরণে বিশেষ ডিজাইনের হওয়া ইত্যাদি।
সূত্র : সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৫৪২৬; সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং ৪০৬৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১৯০৪; সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৫৩৪৬; রদ্দুল মুহতার ৯/৫০৫ (যাকারিয়া)