খাঁচায় পাখি পোষা কি জায়েয?
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৩:৪২ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৯ শুক্রবার
প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। আমি এক বন্ধু থেকে বাজরিগার পাখি (অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা অতিথি পাখি) গিফট পাই। পরে শুনি পাখিকে এভাবে বন্দি রেখে কষ্ট দেয়া উচিত না। এক্ষেত্রে প্রকৃত বিধান কি? এভাবে পাখি পোষা জায়েয আছে কি নেই? যেহেতু বিদেশী পাখি, তাই ছেড়ে দিলে অন্যান্য পাখির দ্বারা ক্ষতি হওয়াসহ আরও সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন আমার কি করা উচিত? আল্লাহর নামে কি ছেড়ে দিব নাকি এভাবেই বন্দী রাখব যাতে ওরা বেঁচে থাকে।
উত্তর : ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
খাঁচায় পাখি পোষা জায়েয। তবে সর্বাবস্থায় পাখি খোলা আকাশে ছেড়ে দেওয়াই ভালো কাজ। খাঁচায় রাখলে শর্ত হল তাকে কোন কষ্ট দেয়া যাবে না এবং তার খাবারের ব্যাপারে পূর্ণ যত্নবান হতে হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না। হযরত ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে,
رَسُولَ اللهِ ﷺ، قَالَ: عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِي هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ، فَدَخَلَتْ فِيهَا النَّارَ، لاَ هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَسَقَتْهَا، إِذْ حَبَسَتْهَا، وَلاَ هِيَ تَرَكَتْهَا تَأكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সে তাকে বেঁধে রেখেছিল এবং অবশেষে সে মারা গিয়েছিল, পরিণতিতে মহিলা তারই কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করল। সে যখন তাকে বেঁধে রেখেছিল, তখন তাকে আহার ও পানি দিত না এবং তাকে ছেড়েও দিত না যে, সে কীট-পতঙ্গ ধরে খাবে।” (বুখারী: ২৩৬৫, ৩৩১৮, ৩৪৮২, মুসলিম: ২২৪২, দারেমী: ২৮১৪)
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার এখন কি করা উচিত, এর জবাবে আমরা বলবো, কোন উপযুক্ত বাগানে ছেড়ে দেওয়া উত্তম। তবে আপনি যদি মনে করেন ছেড়ে দিলে প্রকৃতই পাখিটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাহলে পাখির অধিকারের প্রতি লক্ষ্য রেখে লালন পালন করতে পারেন। এতে কোন শরঈ নিষেধাজ্ঞা নেই।
একজন শিশু সাহাবী সম্পর্কে পাখি প্রতিপালনের কথা সহিহ হাদিসে পাওয়া যায়। আল্লাহর রাসুল যা থেকে নিষেধ করেননি। হাদিস শরীফে এসেছে,
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ ﷺ أَحْسَنَ النَّاسِ خُلُقًا، وَكَانَ لِي أَخٌ يُقَالُ لَهُ أَبُو عُمَيْرٍ ـ قَالَ أَحْسِبُهُ فَطِيمٌ ـ وَكَانَ إِذَا جَاءَ قَالَ “ يَا أَبَا عُمَيْرٍ مَا فَعَلَ النُّغَيْرُ ”. نُغَرٌ كَانَ يَلْعَبُ بِهِ،
আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, নবীজি (সা.) সর্বাধিক সদাচারী ছিলেন। আমার এক ভাই ছিল; ‘তাকে আবূ উমায়ের’ বলে ডাকা হতো। আমার ধারণা যে, সে তখন মায়ের দুধ খেতো না। যখনই সে নবীজির নিকট আসতো, তিনি বলতেন, হে আবূ ‘উমায়ের! কী করছে তোমার নুগায়র? সে নুগায়র পাখিটা নিয়ে খেলা করতো। (বুখারী: ৬১২৯, মুসলিম: ২১৫০)