বুধবার   ২০ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৫ ১৪৩১   ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সিনেমাগুলো ছিল অভিশপ্ত, ঘটেছিল ভয়াবহ ঘটনা

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৩:৪৯ পিএম, ১৬ মার্চ ২০১৯ শনিবার

আজ পর্যন্ত আমরা অনেক ছিনেমা দেখেছি। যেখানে সাধারণত দৃশ্যের আউটপুট মানে যেটা প্রদর্শন করা হয় তাই আমরা দেখি। এটি তৈরি সম্বন্ধে অবগত থাকি না বা প্রয়োজনও পড়ে না। কিন্তু আজ আমাদের এই আলোচনায় এমন কিছু ছিনেমা সম্পর্কে জানবো যেগুলো তৈরির সময় সকলের অনুমান হয় যে এগুলো অভিশপ্ত। 

সুপারম্যান: আপনারা সবাই সুপারম্যানকে কোনো কার্টুন বা হলিউড সিনেমাতে অবশ্যই দেখেছেন। অনেকের তো প্রিয় সুপারহিরোই হল সুপারম্যান। কিন্তু আপনারা কি জানেন সুপারম্যান সিনেমাটি হলিউডের সব থেকে অপায়া মুভি বা অভিশপ্ত মুভি মানা হয়? কারণ এই মুভির সঙ্গে জড়িয়ে থকা ফ্যাক্টগুলো জানলে আপনি সত্যিই অবাক না হয়ে থাওকে পারবেন না। এই সিনেমাটির সঙ্গে আজ পর্যন্ত যারাই জড়িত রয়েছে তাদের সবার সঙ্গে কোনো না কোনো অদ্ভুত ঘটনা অবশ্যই হয়েছে। 

সুপারম্যান এর উপর প্রথম কার্টুন বানান এ এলিসার এবং ম্যাক্স এলিসার। তারা এই কার্টুনটি তৈরি করার পরেই তারা তাদের চাকরি হারায়। সুপারম্যানের উপর বানানো প্রথম লাইভ অ্যাকশন সিনেমা যিনি সুপারম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি তার সিনেমা জীবন শুধু এটা বলেই ত্যাগ করে দেয় যে, সুপারম্যান এর চরিত্রে অভিনয় করার পরে অন্য কোনো চরিত্রে অভিনয় করতে চান না। এরপর সে মানসিক রোগে আক্রান্ত হয় এবং অবশেষে তিনি প্রয়োজনের বেশি ঘুমের ওষুধ খাওয়ার ফলে তার মৃত্যু ঘটে। কিছু এরকম ঘটনা ঘটে সুপারম্যান সিনেমার নেট সিরিজে যিনি সুপারম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তিনি তার হোটেল রুমে দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করেন। 

 

আরেক জন অভিনেতা বেল বল্ডন তার সঙ্গী ছিলেন তিনি বলেন, জর্জ রিচ এই চরিত্রে অভিনয় করার পর থেকেই শান্ত থাকতে শুরু করেন আর একা থাকতে ভীষণ পছন্দ করতেন এবং তার ধারণা হয়ে গেছিল সে তার নিজের জীবনকে অযথাই নষ্ট করে চলেছে। সুপারম্যানের অভিশাপ এর পরবর্তী শিকার ছিল লি গুগলি। এই ব্রিটিশ বাচ্চাটি সুপারম্যানের ছোটবেলাকার চরিত্রে অভিনয় করেছিল। কিন্তু মাত্র ১৬ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তার। 

১৯৭৮ থেকে ১৯৯৫ সালে আসা সুপারম্যান এর চারটি সিনেমাতেই ক্রিস্টাল কুইস সুপারম্যান এর অভিনয় করেন এবং তার সঙ্গে ঘোড়ায় চড়ার সময় একটি রহস্যময় অ্যাক্সিডেন্ট ঘটে যা থেকে পরে তার পিঠের বেশ কিছু হাড় ভেঙে যায় এবং তার গলার নিচের দিকের পুরো শরীর প্যারালাইস হয়ে যায়। আর এই অ্যাক্সিডেন্ট নয় বছর পর তার মৃত্যু ঘটে। ভেরিফাই ম্যাগাজিনের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ২০০৬ সালের বাজেটের সুপারম্যান মুভিতে সুপারম্যান এর চরিত্রের জন্য অনেক সুনামধন্য অভিনেতাদের বাছা হয়েছিল কিন্তু এদের মধ্যে কেউ এই চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হয়নি। কারণ পুরো হলিউড সুপারম্যানের এই সিনেমাটিকে অভিশপ্তইভাবে। 

দ্যা পজিশন: এটি একটি ছোট্ট মেয়ের গল্প। যে একটি আর্টসেল থেকে একটি এন্টিক বক্স কিনে বাড়িতে নিয়ে আসছিল। আর যখন সে এই বাক্সটি খুলে তখন ঐ বাক্সের মধ্যে থেকে ভিবাক নামে একটি খারাপ আত্মা বেরিয়ে আসে এবং ওই মেয়েটির শরীরে প্রবেশ করে। আর তারপরেই একের পর এক অদ্ভুত ঘটনা শুরু হয়। এই সিনেমাটি ২০০০ সালে রিলিজ করে এবং এর মুখ্য চরিত্রে ছিল ওই এন্টিক বক্সটি। এই বক্সটিকে  অভিশপ্ত হিসেবে জানা যায়। আর সবার ধারণা ছিল যে এই বাক্স যার কাছেই থাকবে তার সাথে কিছু না কিছু ভয়ংকর বা অদ্ভুত ঘটনা ঘটবেই। যখন এই সিনেমাটি তৈরি শুরু হয় তখন যে মিউজিয়ামটিতে আসল বাক্সটি রাখা ছিল সেখানকার মালিক এই সিনেমার প্রস্তুতকারকদের বলে যে যদি তারা চায় তাহলে আসল বাক্সটিকে তারা সিনেমায় ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু সিনেমা প্রস্তুতকারকরা বলেন যে, তারা চান না এই অভিশপ্ত বক্সটির ব্যবহারের কারণে তাদের সিনেমার কোনো ক্ষতি হোক বা খারাপ শক্তির কোন প্রভাব পড়ুক। 

 

 

এই বক্সটিকে ব্যবহার করতে অস্বীকার করার পর থেকেই সিনেমার কাস্ট এবং সেটে অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে শুরু করে। শুটিংয়ে ব্যবহারকারী সব লাইট গুলিতেই বারবার বিস্ফোরণ হতো। যার কারণে শুটিং থামিয়ে দিতে হতো। কিন্তু এই লাইট এর বিস্ফোরণ হওয়ার কারণ কেউ জানতে পারেনি। এছাড়া অনেক কারণ যার ফলে সিনেমার শুটিং বারবার থেমে যেত, যেমন যন্ত্রপাতি আগুনে পুড়ে যাওয়া ইত্যাদি। সিনেমাটির অভিনেতা মর্গান একটি ইন্টারভিউতে বলেন যে শুটিংয়ের সময় তার অনেকবার মনে হয়েছে যে ওখানে কোন অদৃশ্য ব্যক্তি ছায়া রয়েছে এবং শুটিংয়ের সেটের মধ্যেও মাঝে মাঝে একটি ভয়ঙ্কর চেহারা দেখা যেত, যাকে তিনি চিনতে পারত না। সিনেমাটি শেষ হওয়ার কিছুদিন পরেই সিনেমাটির স্টোরেজ ঘরে আগুন লেগে যায় এবং সিনেমাটিতে ব্যবহৃত সমস্ত জিনিস আগুনে পুড়ে যায়। যার মধ্যে বাক্সটিও ছিলো আর এই আগুন লাগার কারণটি আজও রহস্যময় হয়ে রয়েছে। 

দ্যা ওমেন: ১৯৭৬ সালে তৈরি করা দ্যা ওমেন সিনেমাটিকেও অভিশপ্ত সিনেমা হিসেবে মানা হয়। এই সিনেমাটি মূল অভিনেতা গ্রেকারি পার্ক এবং স্ক্রিপ্ট রাইটার ডেভিড সাইলজান ইউকে যাবার জন্য দু'জনই বিভিন্ন জায়গা থেকে প্লেনে ওঠে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত তাদের দুইটি প্লেনই ভয়ানকভাবে বিদ্যুৎ পরে ধ্বংস হয়ে যায় এবং প্লেনের পাইলটসহ সকলেই মারা যায়। এছাড়াও সিনেমাটির শুটিং সময় আরো এক দুর্ঘটনা ঘটে যার ফলে সিনেমাটির কিছু ক্রু মেম্বার দের গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। আর এই দুর্ঘটনাগুলো এখানেই থেমে থাকে না। সিনেমাটির ডাইরেক্টর বিচারড টুনার নিজের গ্রুপ মেম্বারদের সঙ্গে কোথাও একটা যাওয়ার জন্য একটি চার্টার প্লেন বুক করতে যান কিন্তু প্লেন কোম্পানির কাছে তখন কোন  চার্টার প্লেন এভেলেবেল ছিল না। তাই প্লেন কোম্পানি তাকে আরেকটি দিন অপেক্ষা করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু আবার রিচারড যে  প্লেনটি কে বুক করতে চেয়েছিল ঐ প্লেনটি  সেদিন একটি গাড়ির সাথে ক্রাস করে। কিন্তু ভাববার বিষয় এই যে প্লেনটি যে গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগায় সেই গাড়িতে বসেছিলেন পাইলটের পরিবারের সদস্যরা। 

 

জন রিচারড সন যিনি ছিলেন এই সিনেমাটির স্পেসাল ইফেক্ট সুপারভাইজার ছিলেন, তিনি তার গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে বেলজিয়াম যাচ্ছিলো আর তখন তাদের গাড়িটির সাথে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। যার ফলে রিচারড সন এর গার্লফ্রেন্ডের মাথা শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায়। আর ঠিক সেই রকমই একটি ঘটনা এই সিনেমাতেও ছিল। আজকের আলোচনা এখানেই শেষ। তবে  অনেকেই মনে করে এই ফ্যাক্ট গুলো শুধুমাত্র প্রচারে আসার জন্যই ব্যবহার করা হয়েছিল আবার অনেকেই মনে করে এগুলো গল্প। কারণ এইগুলো ভয়ানক সিনেমাকে প্রচারে আসতে সাহায্য করে।