বুধবার   ২০ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৫ ১৪৩১   ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মারা গেলেন অভিনেতা চিন্ময় রায়

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১১:০৯ এএম, ১৮ মার্চ ২০১৯ সোমবার

কখনো ভাবেননি অভিনয় জগতে পা রাখবেন। ঘনিষ্ঠ মহলে এমনটাই বলেছিলেন চিন্ময় রায়। তবে ম্যাট্রিকে থার্ড ডিভিশনে পাশ করা সেই আপাতনিরীহ চেহারার মানুষটিই কখন যেন বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম সারির কমেডিয়ান হয়ে উঠলেন। রোববার মারা গেলেন সেই অভিনেতা চিন্ময়। বয়স হয়েছিল ৭৯।

সল্টলেকে নিজের ফ্ল্যাটে রোববার রাত ১০টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। তার পরিবার সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন চিন্ময়বাবু। বছরখানেক আগে নিজের ফ্ল্যাটের নীচ থেকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সে সময়ই তার মাথা, হাত ও পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে। তারপর থেকেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে বার্ধক্যজনিত কারণেও ভুগছিলেন চিন্ময়বাবু। আজ তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে পরিবার।

চিন্ময়বাবুর জন্ম বাংলাদেশের কুমিল্লায়। ১৯৪০ সালের ১৬ জানুয়ারি। রুপালি পর্দায় কমেডিয়ান হিসেবে জনপ্রিয় হলেও অভিনয় জগতে চিন্ময়বাবুর শুরুটা হয়েছিল থিয়েটারের মঞ্চে। নান্দীকারের মতো গ্রুপ থিয়েটারের দলে। তবে এক সময় সে দলও ছেড়ে দেন তিনি। চিন্ময়বাবু পরে বলেছিলেন, সেটাই ছিল আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।

 

এরপর অভিনয় শুরু রুপালি পর্দায়। প্রথম ছবি ‘গল্প হলেও সত্যি’। তপন সিংহের পরিচালনায় প্রথম ছবিতেই নজর কাড়লেন। এরপর আর থেমে থাকেননি। ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ধন্যি মেয়ে’, ‘চারমূর্তি’,‘মৌচাক ’,‘হাটে বাজারে’, ‘ঠগিণী’,‘ফুলেশ্বরী’, ‘সূবর্ণ গোলক’, ‘ওগো বধূ সুন্দরী’— একের পর ছবিতে তিনি মাতিয়েছেন বাঙালি দর্শককে।

তথাকথিত সাদামাটা চেহারা সত্ত্বেও নিজের অভিনয় প্রতিভায় রুপালি পর্দায় নায়কদের পাশে রীতিমতো নজর কেড়েছেন। নবদ্বীপ হালদার, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় বা তুলসী চক্রবর্তীর মতো কিংবদন্তি অভিনেতাদের পর বাংলা ছবিতে কমেডিয়ানের ভূমিকায় রবি ঘোষ বা অনুপকুমারের সঙ্গে পাল্লাও দিয়েছেন সমানে সমানে। তার প্রয়াণে বাংলা চলচ্চিত্রের এক অধ্যায়ের যেন সমাপ্তি ঘটল।