যেভাবে মিডিয়া জগতে প্রীতি জিনতা
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০১:১৩ পিএম, ২১ মার্চ ২০১৯ বৃহস্পতিবার
প্রীতি জিনতা। এক সঙ্গে অনেক গুণ তার। গানের জগতের সম্রাজ্ঞী খ্যাত লতা মুঙ্গেশকরের কণ্ঠে গাওয়া ‘জিয়া জালে’তে তার গ্ল্যামারাস উপস্থিতি কিংবা ‘তেরে লিয়ে’ গানে নন গ্ল্যামারাস উপস্থিতি, সব রুপেই তিনি দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন বিভিন্ন সময়। এছাড়াও ‘ক্যায়া কেহনা’র প্রিয়াতে যেমন অভিনয়ে দর্শক মন জয় করেছেন, তেমনি ন্যায়না হয়ে ‘কাল হো না হো’তেও মাতিয়েছেন। একের পর এক জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বেশ শক্তভাবে। সৌন্দর্য্যের অনন্য এই নায়িকার গালে টোল পড়া হাসি ভারতীয় উপমহাদেশে বেশ বিখ্যাত।
আজ ডেইলি বাংলাদেশের পাঠকদের জানাবো এই নায়িকার জানা অজানা নানা অধ্যায়। প্রীতি জিনতা। তার বাবা ছিলেন একজন আর্মি অফিসার। একটি দূর্ঘটনায় তিনি মারা যান আর ওই সময় তার মা শয্যাশায়ী হলে জীবনের মোড় ঘুরে যায়। এরপর বান্ধবীর জন্মদিনে তার টোল পড়া হাসিতে মুগ্ধ হয়ে তাকে মডেলিং করার অফার করেছিলেন এক বিজ্ঞাপন নির্মাতা। সেই থেকে শুরু মিডিয়া জগতে তার পথচলা।
বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের পর তিনি মডেলিং-এ চরম জনপ্রিয়তা পান। এরপর প্রীতি নাম লেখালেন সিনেমায়। প্রীতির প্রথম চুক্তিবদ্ধ সিনেমা ‘ক্যায়া কেহনা’, তবে ১৯৯৮ সালে প্রথম মুক্তি পায় বিখ্যাত নির্মাতা মনি রত্নমের ‘দিল সে’, এই ছবিতে পার্শ্ব চরিত্র হলেও নজর কেড়েছিলেন প্রীতি জিনতা।
একই বছর নায়িকার মুক্তি পাওয়া সুপারহিট ছবি আব্বাস- মাস্তানের ‘সোলজার’। ববি দেওলের জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ হলেও এই ছবিতে তিনি ছিলেন ছবির অন্যতম আকর্ষণীয় দিক। এরই মাঝে অভিনয় করলেন দুটি দক্ষিনী সিনেমায়, পাশাপাশি মুক্তি পায় ‘সংঘর্ষ’ ও ‘দিল্লাগি সিনেমা’। তার প্রথম চুক্তিবদ্ধ সিনেমা ‘ক্যায়া কেহনা’ মুক্তি পায় ২০০০ সালে, এই ছবিতে তার চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় যেমন প্রশংসিত হয়েছিল, তেমনি ছবিটিও হয়েছিল বাণিজ্যিক সফল।
এরপর নায়িকার মুক্তি পাওয়া ‘হার দিল জো প্যায়ার করেগা’, ‘মিশন কাশ্মীর’, ‘চোরি চোরি চুপকে চুপকে’, ‘ইয়ে রিশতা হ্যায় পেয়ার কা’র পর বলিউডের প্রথা ভাঙার সিনেমা ‘দিল চ্যাহতা হ্যায়’তেও ছিলেন প্রধান নায়িকা। প্রীতির বাণিজ্যিক সফল সিনেমা ‘দিল হ্যায় তুমহারা’য় ছিল তার উজ্জ্বল উপস্থিতি।
এই ছবির মাধ্যমে নিজেকে সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত করার সুবর্ণ সময় এসেছিল ২০০৩ সালে। এরপর ‘কোয়ি মিল গ্যায়া’ ও ‘কাল হো না হো’র মত সাড়া জাগানোর সিনেমার নায়িকা হয়ে তিনি পেয়েছিলেন বছরের সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ফিল্মফেয়ার এ্যাওয়ার্ড। পরবর্তী বছরে যশ চোপড়ার ‘বীর- জারা’তে অভিনয় করে নিজেকে এগিয়ে নিয়েছিলেন আরো এক ধাপ। আধুনিক নায়িকা হিসেবে পরিচিত হলেও এই ছবিতে এসেছেন সম্পূর্ণ ভিন্নরুপে।
এছাড়া তার ক্যারিয়ারে রয়েছে ‘দ্য হিরো’, ‘আরমান’, ‘লক্ষ্য’, ‘সালাম নমস্তে’, ‘কাভি আলবিদা না ক্যাহনা’, ‘ঝুম বারাবার ঝুম’র মত আলোচিত বা সফল সিনেমা। ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘দ্য লাস্ট লিয়র’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন প্রীতি।
যখন সময় এলো নিজেকে নিজের ছাড়িয়ে যাবার, ঠিক তখনই তিনি ম্লান হয়ে গেলেন। ‘জানেমান’, ‘হার পাল’, ‘হিরোজ’সহ একাধিক ছবি নাম লিখালো ফ্লপের খাতায়, সিনেমা জগতগত থেকে অনিয়মিত হয়ে পড়লেন তিনি। ব্যস্ত হয়ে গেলেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মাঠে।
কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের কর্নধার প্রীতি জিনতা। বেশ কয়েক বছর বিরতি দিয়ে ‘ইশক ইন প্যারিস’ ও ‘হ্যাপি এন্ডিং’ ছবি করেছেন। তবে কোনোটাই তাকে আলোচনায় আনেনি। মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘ভাইয়াজি সুপারহিট’।
তবে বলিউডে আবার সফল প্রত্যাবর্তন ঘটছে পুরনো নায়িকাদের। হয়ত এর মাধ্যমে একদিন ফিরে আসবেন প্রীতি জিনতাও।
চলচ্চিত্র জীবনের বাইরে তিনি নিজেকে জড়িয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে। তবে ব্যক্তিজীবনে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বিয়ে করেছেন জেনে গুডেনাফকে। রুপালি পর্দার জীবনটা আপাতত খুব রঙিণ না হলেও সময়টা খারাপ যাচ্ছেনা প্রীতির। এরই মধ্যে কাটিয়ে ফেলেছেন জীবনের ৪৪টি বসন্ত। বর্তমানে এভাবে চলছে প্রীতির জীবন যাপন।