একই মাসে দুই নবীর জন্মদিন নিয়ে কিছু কথা
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮
আজকাল হিজরি মাস রবিউল আউয়াল ও ঈসায়ি মাস ডিসেম্বর প্রায় একইসঙ্গে অতিবাহিত হয়। কিছু কারণে এ দুই মাস যথাক্রমে মুসলমান ও খ্রিস্টান উভয় জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সিরাত লেখকদের প্রায় ঐকমত্য সিদ্ধান্ত হলো, আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই রবিউল আউয়াল মাসে জন্গ্রহণ করে জগতটাকে আলোকিত করেছিলেন। এই মাসে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর ওপর ওহি অবতরণের সূচনা হয়েছিল। সর্বশেষ তিনি এই মাসে আপন মাওলার সান্নিধ্যে পাড়ি জমান। অন্যদিকে খ্রিস্টান ঐতিহাসিকদের অনুমান নির্ভর মন্তব্য হলো, হজরত ঈসা আলাইহিস সালাম এই ডিসেম্বর মাসে দুনিয়ায় শুভাগমন করেছিলেন।
এবার পরবর্তী আলোচনায় যাওয়ার আগে বলে রাখি যে বিশেষ কোনো সময়, বিশেষ কোনো ঘটনা বা বিশেষ কারো কোনো কিছু স্মরণীয় করে রাখার ক্ষেত্রে ইসলামের পৃথক দৃষ্টিভঙ্গি আছে। হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম কর্তৃক স্বীয় ছেলে হজরত ইসমাঈল আলাইহিস সালামকে জবাই করার ঘটনাকে ইসলাম ধর্মে স্মরণীয় করে রাখা হয়েছে পশু কোরবানির বিধানের মাধ্যমে। হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম কর্তৃক কাবা ঘরের পুনঃনির্মাণ, শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ ইত্যাকার বিষয়গুলো স্মরণীয় রাখা হয়েছে হজের বিভিন্ন হুকুমের মাধ্যমে। শিশু ইসমাঈলের জন্য পানির অনুসন্ধানে সাফা ও মারওয়ার মধ্যে বিবি হাজেরার দৌঁড়ানোকে স্মরণীয় করে রাখা হয়েছে সাফা ও মারওয়ার মধ্যে 'সাঈ' করার বিধানের মাধ্যমে। হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর জাতি সাগর পাড়ি দিয়ে অভিশপ্ত ফেরাউন থেকে মুক্তি পাওয়ার দিনকে স্মরণীয় রাখা হয়েছে ওই দিন রোজা রাখার মাধ্যমে। তবে এ ক্ষেত্রেও যেন মুসলমানরা বিজাতীয় সংস্কৃতি অনুসরণের ধাঁধায় না পড়ে, সেজন্য আশুরা বা মহররম মাসের ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ কিংবা ১১ তারিখেও রোজা রাখার কথা বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, 'তোমরা আশুরা দিবসে রোজা রাখো। তবে ইহুদিদের বিরুদ্ধাচরণ করে এর আগের দিন অথবা পরের দিনও রোজা রাখবে।' (মুসনাদে আহমাদ : ১/৬৩৯, হাদিস, হাদিস : ২১৫৪)
যা-ইহোক, এসব দৃষ্টান্ত থেকে প্রতিভাত হয়, ইসলাম বিশেষ কাউকে অথবা বিশেষ কোনো মুহূর্ত স্মরণ করার জন্যে নিছক আনুষ্ঠানিকতা পছন্দ করে না। বরং বিশিষ্ট ব্যক্তি কিংবা বিশেষ ওই সময় থেকে শিক্ষার উপকরণ সংগ্রহের মাধ্যমে তা স্মরণ করার পথ দেখিয়েছে। যাতে এর আলোকে মানুষ নিজ প্রতিপালকের আরো বেশি নৈকট্য লাভ করতে পারে, নিজের ভেতরে থাকা শয়তানি প্রবৃত্তি ধ্বংস করতে পারে। নতুবা স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা, আমোদ-প্রমোদ ও ফুর্তি-আড্ডা স্মরণীয় ব্যক্তি বা ঘটনার শিক্ষা থেকেই শুধু দূর করবে না, বরং নিজেকে আরো অন্ধকারে ঠেলে দিবে।
এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষ করার মতো, ইসলামে খুশি ও আনন্দের জন্য যে দুই ঈদ মুসলমানদের প্রদান করা হয়েছে, তাও নিছক আনন্দের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের ব্যবস্থাস্বরূপ প্রত্যেক ঈদে দুই রাকআত বিশেষ নামাজের বিধান রয়েছে।
ইসলামি শরিয়তের এই পবিত্র দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর নিজের জন্মদিন ও আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ওহি প্রাপ্তির সূচনাদিন_এই মোবারক দুই দিনের স্মরণে ও শুকরিয়াস্বরূপ প্রতি সোমবার রোজা রাখতেন। হজরত আবু কাতাদা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সোমবার রোজা রাখার কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, 'ওই দিন আমি জন্মগ্রহণ করেছিলাম এবং ওই দিন আমার ওপর সর্বপ্রথম ওহি অবতীর্ণ হয়েছিল।' (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১২৬)
উল্লিখিত বর্ণনার আলোকে জানা যায়, মহানবী (সা.)-এর জন্ম সোমবার হয়েছিল। কিন্তু রবিউল আউয়ালের কয় তারিখ? তা অনিশ্চিত। সহিহ বুখারির ব্যাখ্যাতা আল্লামা কুতবুদ্দিন কাসতালানি (রহ.) বলেন, অধিকাংশ হাদিসবিদের মতে মহানবী (সা.)-এর জন্ম তারিখ আট রবিউল আউয়াল। (আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া : ১/১৪০) আরো অনেকে বহু মন্তব্য করেছেন। অবশ্য ১২ তারিখের মতটা অত্যধিক প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। পক্ষান্তরে একই মাসের ১২ তারিখ যে মহানবী (সা.) ইন্তিকাল করেছেন, এ বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই।
এই গুরুত্বপূর্ণ মাসে মহানবী (সা.)-এর স্নেহ ও সাহচর্যধন্য সাহাবায়ে কেরাম জন্মদিবস কিংবা মৃত্যদিবস উপলক্ষ পালন করতেন না। তা ছাড়া মহানবী (সা.) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভিন্নভাবে উম্মতকে বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুসরণ থেকে বারণ করেছেন। বিশেষ করে খ্রিস্টানরা হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের ভালোবাসা প্রকাশে বাড়াবাড়ি করেছে, প্রিয় নবী তাঁর উম্মতকে এ বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, 'তোমরা আমাকে নিয়ে বাড়াবাড়ি কোরো না, যেমন খ্রিস্টানরা ঈসা ইবনে মারিয়ামকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করেছে।' (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৪৪৫)
তাহলে এবার দেখুন, খ্রিস্টানরা তাদের নবীর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনে যত বাড়াবাড়ি করেছে তন্মধ্যে একটা হলো ক্রিসমাস ডে। এ দিন তারা হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মদিবস পালন করে। এই প্রথা কিন্তু হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের যুগে ছিল না। তাঁর সাহাবিগণের যুগে ছিল না। এরপরও ছিল না। এটি আবিষ্কৃত হয়েছে কয়েক শতাব্দী পর, চতুর্থ শতাব্দী খ্রিস্টাব্দে। (দি এ্যলমানাক ফর প্যাসটোরাল লিটারজি, পৃ. ২৯, উইকিপিডিয়া)
যখন এই ক্রিসমাস ডে পালন করা শুরু হয়েছিল, তখন শুধু নিয়ম এই ছিল যে গির্জায় পাদ্রীরা হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্ম ও জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করতেন। পরে দেখা গেল, এতে জনসাধারণের তেমন আগ্রহ নেই। ফলে এর সঙ্গে মিউজিক যুক্ত করা হলো। তারপর এটাকে আরো উপভোগ্য করে গড়ে তুলার স্বার্থে এতে নারীদের ড্যান্স সংযুক্ত করা হলো। এভাবে ধীরে ধীরে এটা নিছক একটা আনন্দ-উন্মাদনার দিনে রূপান্তরিত হয়। নবী ঈসা আলাইহিস সালামের জীবনালোচনার স্থলে নাচ-গান, মদ-জুয়া, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা ইত্যাদির বাজার গরম হয়। ফলে নবআবিষ্কৃত এই কাজেরও যে মৌলিক উদ্দেশ্য ছিল, তা ব্যাহত হয়।
সুতরাং উৎসব পালন ও আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে রবিউল আউয়াল বরণ শুধু যে অনর্থক তা-ই নয়, এটি আমাদের নবীর সুন্নাহ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ারও কারণ।
পরিশেষে বলতে চাই, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সিরাত তথা তাঁর শিক্ষা ও আদর্শের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও ভালোবাসা, বাস্তব জীবনে তাঁর অনুসরণ ও অনুশীলনের মাধ্যমেই আলোর সন্ধান পাওয়া সম্ভব। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক : আলোচক, ইকরা টিভি, লন্ডন
- আন্দোলনের ‘অ্যাপ’ চান শাওন
- সিন্ডিকেটের কবজায় আলুর বাজার
- ‘বাইডেন-জেলেনস্কির কারণে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা বাড়ছে’
- তাসকিনের ফাইফারে বিধ্বস্ত উইন্ডিজ, ৩৩৪ করলেই জিতবে বাংলাদেশ
- বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার ইসকন নেতা চিন্ময়
- ঘোষণা দিয়ে বেপরোয়া তাণ্ডব
- ট্রান্সজেন্ডার সেনাদের বাদ দেবেন ট্রাম্প
- শাহবাগে লোক জড়ো করা সেই মোস্তাফা আমীন আটক
- জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহের ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
- বাংলাদেশেও চাপে পড়তে পারেন আদানি
- দীর্ঘ ১৬ বছর পর বাবাকে খুঁজে পেলেন মার্কিন নারী
- সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিন তৈরি, বিশ্বকে নতুন বার্তা চীনের
- আইসিসির বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের হুমকি মার্কিন সিনেটরের
- অন্য কোনো দেশে আশ্রয় না পেলে কী করতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা?
- ভারতে মসজিদের স্থানে মন্দির দাবি, পুলিশের গুলিতে নিহত ৩ মুসল্লি
- পড়তে ভুলে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা?
- বিশ্বে যেভাবে ‘নির্যাতিত’ হচ্ছেন পুরুষরা
- দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ
- পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি
- আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য?
- কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার
- সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা
- ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাবে রাশিয়া
- পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে
- এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে
- পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে
- ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র তাপসসহ ৩০ জনের নামে মামলা
- রমজানে কঠিন সংকটের শঙ্কা
- জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি মুছে ফেললো ল্যাবরেটরি স্কুল, সোশ্যাল
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনে নতুন কমিটি ঘোষণা
- মালিতে অতর্কিত হামলায় ওয়াগনারের ৫০ সৈন্য নিহত
- আজকের সংখ্যা ৮৪৪
- যে শর্তে ইসরাইলে হামলা বন্ধের ঘোষণা দিল হিজবুল্লাহ
- রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও তার পরামর্শক পর্ষদ
- আরব লীগের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকা থেকে হিজবুল্লাহর নাম বাদ
- শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার সীমিত করছে নিউইয়র্ক
- যে কারণে নিউ ইয়র্কে চাকরি ছেড়েছেন ৫ লাখ মানুষ
- আজকের সংখ্যা আজকাল ৮৩৬
- কাল পবিত্র হজ
ঈদ রোববার - নিউইয়র্কে বাংলাদেশি খুনের ঘটনায় ন্যায়বিচার নিয়ে সংশয়ে পরিবার
- যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি যুবকের বিরুদ্ধে ‘বেঞ্চ ওয়ারেন্ট’
- নিপুণের পেছনে বড় শক্তি আছে: ডিপজল
- পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ
- মুত্তালিব বিশ্বাসকে সংবর্ধনা
- নিউইয়র্ক মাতালেন মমতাজ
- পর্তুগালে বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য দুঃসংবাদ
- হজে যেতে পারেননি বহু প্রবাসী
- আজকের আজকাল সংখ্যা ৮৩১
- বিয়ে হলেও বিয়ের প্রিমিয়ার হবে না
- আনন্দ-বেদনায় কানাডা প্রবাসীদের ঈদ উদযাপন
- দুনিয়ার সর্বোত্তম সম্পদ নেককার স্ত্রী
- পাঁচ অবস্থার আগে পাঁচ অবস্থার মূল্যায়ন করুন
- শিয়া সুন্নী দ্বন্দ্বের আদ্যোপান্ত
- স্বামী-স্ত্রী সর্বোচ্চ কতদিন কথা না বলে থাকা জায়েয?
- কবরে কি নবীজীর ছবি দেখিয়ে প্রশ্নোত্তর করা হবে?
- হিজামার স্বাস্থ্য উপকারিতা
- জীবনে সুখী হওয়ার পাঁচ পরামর্শ
- মুসলিম হিসেবে মৃত্যু লাভের দোয়া
- বিশ্ব ইজতেমা শুরু
- কোরআন-হাদিসের আলোকে কবর জিয়ারতের দোয়া
- পরিচ্ছন্নতা ও সুস্বাস্থ্য সম্পর্কে নবীজির ১০ বাণী
- পথ চলার আদব!
- নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায়
- কাকরাইল মসজিদে বিদেশিদের মালামাল আটকে রেখেছে সাদবিরোধীরা
- ১৫ নভেম্বর থেকে হজের নিবন্ধন শুরু