মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫   বৈশাখ ৯ ১৪৩২   ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
৩৩৭

দাওয়াত দেয়া ও গ্রহণের আদব

প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯  

দাওয়াতের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদিসের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। দাওয়াত কবুল করা মুসলমানের হক হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে।

দাওয়াত কবুলের জন্য শর্ত:

এক্ষেত্রেও কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। যে দাওয়াতে গেলে গুনা লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সে দাওয়াত কবুল করা সুন্নত নয়। কেননা সুন্নতের ওপর আমল করতে গিয়ে কবীরা গুনাহতে লিপ্ত হওয়া যাবে না। বিয়ের কার্ডে লেখা থাকে ‘সুন্নাতে ওলীমা’। ভালো কথা, ওলীমা তো অবশ্যই সুন্নত। কিন্তু কোন ধরণের ওলীমা সুন্নত? মূলত: সুন্নত তরীকার ওলীমাই সুন্নত। যে ওলীমায় নারী-পুরুষ অবাধ চলাফেরা হয়, পর্দা লংঘন হয়, সেই ওলীমা কখনই সুন্নত নয়।

আত্মসমর্পণ আর কত দিন?

এসব কিছু কেন হচ্ছে? কারণ আমরা বিভিন্ন প্রথা ও গুনাহের সামনে নেতিয়ে পড়েছি। ফলে অন্যায়, অপরাধ, অবৈধতা ও অশ্লীলতা সমাজে ছাড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহর কোনো বান্দা যদি বেঁকে বসতেন এবং নিজ সম্প্রদায়কে সাফ সাফ বলে দিতেন যে, দাওয়াতের নামে যদি অন্যায় ও অশ্লীলতা হয়, তাহলে এ ধরণের দাওয়াতে আমি নেই। এ জাতীয় কথা বলার মত লোক থাকলে এসব সামাজিক প্রথা ও অন্যায় এতটুকু অবশ্যই ছড়াত না। কিন্তু বর্তমানে তো মানুষ উল্টো পথে চলছে।

যদি বলা হয়, যে দাওয়াতে শালীনতা ও পর্দা নেই, সে দাওয়াতে যেও না। উত্তর দেবে, না গেলে সমাজে আমার নাক কাটা যাবে। আমি বলি, গুনাহমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে যদি তোমার নাক কাটা যায়, তাহলে যেতে দাও। এ কাটাকে তুমি সাধুবাদ জানাও। কারণ এই ‘কর্তন’ আল্লাহর জন্য হয়েছে বিধায় এটি পবিত্র। অতএব বলে দাও, আমাদেরকে দাওয়াত দিতে হলে নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক পৃথক ব্যবস্থা করতে হবে। পর্দা বিধান নিরাপদ থাকবে এ নিশ্চয়তা দিতে হবে। অন্যথায় আমরা যাব না। এরপরেও যদি তারা তোমার কথা না মানে, তাহলে যে ব্যক্তি তোমার কথার গুরুত্ব দেয়নি, তুমি তার দাওয়াতের গুরুত্ব দেবে কেন?

এ ধরণের কিছু সৎসাহসী লোক তৈরি হওয়া উচিত। কিন্তু তৈরি তো হচ্ছে না, বরং যে মানুষটি দ্বীনের ওপর চলতে যথেষ্ট আগ্রহী, সেও চক্ষু লজ্জার কারণে বলতে পারে না। সে ভয় করে যে, আমি যদি বেঁকে বসি, আমাকে সেকেলে ও পশ্চাদমুখী মনে করবে। এভাবে আর কতদিন চলবে অবক্ষয়ের এ স্রোত? কত দিন তুমি এসব অন্যায় কাজের অনুকুলে থাকবে? তোমাদের নীরব ভূমিকার কারণে অপরাধীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আর যুবতীরা নাকের ডগায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। পশ্চিমা সভ্যতার অভিশাপ গোটা সমাজকে পিষে ফেলছে। এভাবে তো আর চলতে দেয়া যায় না। তাই পদক্ষেপ নাও। প্রতিজ্ঞা কর, গুনাহের সয়লাব যেখানে, আমরা নেই সেখানে।

প্রয়োজন শুধু সৎ সাহসের:

অনেক সময় মনে করা হয়, অনুষ্ঠানাদিতে পর্দানশীন থাকে দু’একজন। তাই আলাদা আয়োজন এক অতিরিক্ত ঝামেলা। মনে রাখবেন, ঝামেলা মনে করলে ঝামেলা। অন্যথায় এটা খুব একটা সমস্যার কিছু নয়। প্রয়োজন শুধু সৎ সাহসের এবং সৎ চিন্তার।

দাওয়াত কবুল করার শরয়ি বিধান:

শরীয়তের বিধান হলো, দাওয়াতে গেলে যদি গুনাহে লিপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে সেই দাওয়াতে যাওয়া জায়েয নেই। আশঙ্কা না থাকলে সে দাওয়াতে অংশগ্রহণ করার অবকাশ আছে। যদি মনে করা হয়, দাওয়াতের সুবাদে কিছু অশ্লীলতা চলবেই, তবে আমি নিজেকে নিরাপদ রাখতে পারব, তাহলেও অংশগ্রহণের অবকাশ আছে। কিন্তু যারা সমাজের নেতৃস্থানীয় অথবা যাদের প্রতি সমাজ তাকিয়ে থাকে, তাদের জন্য এ জাতীয় দাওয়াতে অংশগ্রহণ মোটেও জায়েয হবে না। এ হলো, দাওয়াত কবুল করার মূলনীতি। এ নীতি মতেই চলতে হবে।

দাওয়াতের জন্য নফল রোজা ভঙ্গ করা:

আলোচ্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যাকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে তিনি যদি রোজাদার হন এবং রোজার কারণে খাবার খেতে না পারেন, তাহলে মেজবানের জন্য দোয়া করবেন। এর আলোকে ফুকাহায়ে কেরাম লিখেছেন, কোনো ব্যক্তি যদি নফল রোজা অবস্থায় নিমন্ত্রিত হয়, তাহলে নিমন্ত্রণ কবুল করার লক্ষ্যে তথা এক মুসলমানের অন্তর খুশি করার লক্ষ্যে নফল রোজা ভাঙ্গতে চাইলে তার অনুমতি আছে। পরবর্তীতে এর কাযা করে নেবে। আর রোজা ভাঙ্গতে না চাইলে অন্তত মেজবানের জন্য দোয়া করবে।

যে মেহমানকে দাওয়াত দেয়া হয়নি তার বিধান:

عن ابى مسعود البدرى رضى الله عنه قال: دعا رجل النبى صلى الله عليه وسلم لطعام صنعه له خامس خمسة، فتبعهم رجل، فلما بلغ الباب قال النبى صلى الله عليه وسلم إن هذا تبعنا فان شئت ان تأذن وإن شئت رجع، قال : بل أذن له يا رسول الله

‘হজরত আবু মাসউদ বদরী (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দাওয়াত দিয়েছিল। তাঁর সঙ্গে আরো চার জন ছিল। ওই যামানায় কোনো লৌকিকতা ছিল না বিধায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক সময় নিজের সঙ্গে আরো দু’একজন নিয়ে নিতেন। এখানে লোকটি দাওয়াত দিয়েছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামসহ মোট পাঁচজনকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দাওয়াত খাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলেন, পথিমধ্যে আরেকজন যোগ হয়ে গেল। আজকাল যেমনিভাবে কোনো বুযুর্গকে দাওয়াত দেয়া হলে সঙ্গে আরো দু’একজন আসেন। যখন তিনি মেজবানের বাড়িতে পৌঁছলেন, মেজবানকে উদ্দেশ্য করে বললেন, এ ভদ্রলোক আমাদের সঙ্গে চলে এসেছে। তুমি চাইলে তাকে মেহমান হওয়ার অনুমতি দিতে পার। অন্যথায় সে ফেরত চলে যাবে। মেজবান বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তাকে ভেতরে আসার অনুমতি দিলাম।’ (বুখারী, হাদীস নং- ১৯৩৯, মুসলিম, হাদীস নং- ৩৭৯৭)

ওই ব্যক্তি চোর ও ডাকাত:

এ হাদীসের মাঝে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে শিক্ষাটি রয়েছে, তা হলো কারো বাড়িতে দাওয়াত খেতে গেলে যদি তোমার সঙ্গে এমন ব্যক্তিও যায়, যার দাওয়াত নেই, তাহলে প্রথমে মেজবানের অনুমতি নিয়ে নেবে, তারপর দাওয়াত খাবে। কেননা এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি বিনা দাওয়াতে চলে আসে, সে যেন চোর হয়ে আসল আর ডাকাত বনে চলে গেল।

মেজবানের অধিকার:

মূলত: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত শিক্ষার মাধ্যমে একটি মূলনীতির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। যে মূলনীতিটি আমাদের কাছে অবহেলিত। আমাদের ধারণা হলো, আতিথ্যের সব মেজবানের ওপর মেহমানের পাওনা। মেহমানের আতিথেয়তা করা এবং যথাযথ কদর করা মেজবানের কর্তব্য। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসের মাধ্যমে এ শিক্ষা দিয়েছেন, যেমনিভাবে মেহমানের অধিকার আছে, অনুরূপভাবে মেজবানেরও অধিকার রয়েছে। মেহমান মেজবানকে অযথা কষ্ট দিতে পারবে না। যেমন মেহমান নিজের সঙ্গে এমন লোক নিতে পারবে না, যার দাওয়াত নেই। হ্যাঁ, মেহমানের যদি নিশ্চিত বিশ্বাস থাকে যে, লোকটিকে নিয়ে গেলে মেজবান অসন্তুষ্ট হবেন না, বরং সন্তুষ্টই হবেন, তাহলে ভিন্ন কথা। এরূপ ক্ষেত্রে তাকে সঙ্গে নিতে পারবে।

পূর্ব থেকে অবগত করে রাখবে:

মেজবানের আরেকটি হক হলো, মেহমান হতে চাইলে মেজবানকে আগেই জানিয়ে দেবে। কমপক্ষে এমন সময় হতে হবে, যেন খানা-পিনার ব্যবস্থা করতে অসুবিধা না হয়। ঠিক খানার মুহুর্তে উপস্থিত হলে মেজবান তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাবেন। সুতরাং অসময়ে মেহমান হওয়া উচিত নয়। এটা মেহমানের ওপর মেজবানের হক। মেহমান অনুমতি ছাড়া রোজা রাখবে না:

এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মেজবানকে অবহিত করা ছাড়া কোনো মেহমানের জন্য জায়েয নেই যে, নফল রোজা রাখবে। কেননা অবহিত না করলে মেজবান সমস্যায় পড়ে যাবে। মেহমানের জন্য বাজার খরচ, রান্না-বান্না ও যাবতীয় খরচ যা হয়েছে সবই বিফলে যাবে। ফলে মেজবান দুঃখ পাবে। তাই এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

খাওয়ার সময় মেহমানের উপস্থিত থাকা উচিত:

মনে করুন, মেজবানের বাসায় খানার জন্য নির্দিষ্ট একটা সময় আছে। অথচ মেহমান তখন কোথাও চলে গেল। এতে মেজবান কষ্ট পায়। মেহমানের খোঁজে মেজবান উদ্বিগ্ন হয়, নির্দিষ্ট সময়ের ব্যাঘাত ঘটে, না খেয়ে মেহমানের জন্য বসে থাকতে হয়। এতসব বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় হলো, মেহমান যথাসময়ে উপস্থিত থাকবে। কোনো কারণে বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে আগেই জানিয়ে দেবে।

মেজবানকে কষ্ট দেয়া কবীরা গুনাহ:

শুধু নামাজ, রোজা, জিকির ও তাসবীহর নাম দ্বীন নয়। দ্বীন অনেক বিস্তৃত। এসব বিষয়ও দ্বীনের অংশ। অথচ আমরা মনে করি, এগুলো দ্বীন বহির্ভূত। বড় বড় দ্বীনদার ব্যক্তি ইসলামের সামাজিক শিষ্টাচারের ব্যাপারে একেবারে অজ্ঞ। যার কারণে তারাও অনায়াসে গুনাহে লিপ্ত হয়ে থাকেন। মনে রাখবেন, আদবের তোয়াক্কা না করলে মেজবান কষ্ট পাবেন।

আর কথায় বা কাজে এক মুসলমানকে আরেক মুসলমানের কষ্ট দেয়া কবীরা গুনাহ। যেমনিভাবে মদপান করা, চুরি করা, যিনা করা কবীরা গুনাহ। সুতরাং আচরণের মাধ্যমে যদি মেজবানকে কষ্ট দেয়া হয়, তাহলে এটাও তো মুসলমানকে কষ্ট দেয়া হলো। এবং এটাও কবীরা গুনাহ।

মহান রাব্বিুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে উক্ত বিষয়ে সঠিক আমল করার তাওফীক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন।

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর