সোমবার   ০৭ এপ্রিল ২০২৫   চৈত্র ২৪ ১৪৩১   ০৮ শাওয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
১৫

বাংলাদেশে ‘র’-এর কার্যক্রম পূর্ণমাত্রায় অব্যাহত রয়েছে

প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০২৫  

ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ভারতে যে মাত্রায় আনন্দের উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল, এখন বোধহয় আর নেই। ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার পর ভারত বিষয়ে ট্রাম্পের নানাবিধ গতিবিধি ভারত ও তার নাগরিকদের আশাভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত প্রথম ধাক্কাটা খেয়েছে ট্রাম্প যেদিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী শতাধিক ভারতীয় নাগরিককে হাতকড়া পরিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে। দ্বিতীয় ধাক্কাটি ছিল, মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পের কাছ থেকে প্রত্যাশিত উত্তর না পাওয়ায়। তাদের প্রত্যাশা ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের তথাকথিত হিন্দু নির্যাতনের নিন্দা করে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে হুঁশিয়ারি দেবে। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। ট্রাম্প প্রশ্নটি আমলে না নিয়ে সচেতনভাবেই এড়িয়ে গেছেন। তবে সর্বশেষ যে ঘটনায় ভারতের নাক কাটা গেছে তা হলো, মার্কিন সরকারের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাসংক্রান্ত কমিশনের প্রতিবেদনে ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং’ যা ‘র’ নামে পরিচিত; এই সংস্থাটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করার কারণে। ওই প্রতিবেদনে ট্রাম্পের বন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়েও বেশ কয়েকটি নিগেটিভ মন্তব্য করা হয়েছে।

২০২৩ সালে মার্কিন নাগরিক খালিস্তানি নেতা গুরুপতবন্ত সিংপান্নুকে হত্যার ষড়যন্ত্রে ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর জড়িত থাকার কারণে এ সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও ভারত তখন জানিয়েছিল ওই ঘটনায় ভারত সরকারের কোনো যোগ ছিল না। তবে এ হত্যা ষড়যন্ত্রে ‘র’ জড়িত নয় এমন কোনো দাবি ভারত তখন করেনি। এ ঘটনা প্রকাশের পর দেখা গেল ভারত সরকার (সম্ভবত তদন্ত শেষে) ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিকাশ যাদব নামের ‘র’-এর এক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করে। তবে এ হত্যা ষড়যন্ত্রে সরকার জড়িত ছিল না বলে ভারত যে দাবি করেছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এর কারণ, ১৯৬৮ সালে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে পুনর্গঠিত করে যখন ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস বা ‘র’ প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন এ সংস্থাটিকে একটি সাংবিধানিক উইং হিসাবে কেবিনেট সেক্রেটারিয়েটের অধীন ন্যস্ত করা হয়। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ সংস্থাটি সরাসরি সরকারপ্রধানের অনুমতিক্রমেই তাদের সব কার্যক্রম পরিচালিত করে আসছে। সংস্থাটি এমনই ক্ষমতাপ্রাপ্ত যে, তাদের যে কোনো কার্যকলাপের জন্য তারা ভারতীয় পার্লামেন্টের কাছেও কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নয়। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে এমন একটি স্পর্শকাতর (পান্নু হত্যা ষড়যন্ত্র) ঘটনার সঙ্গে ভারত সরকারের যোগ নেই বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ভারত অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রতিবাদ করেছে।

আন্তঃরাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘র’-এর জড়িত থাকার অভিযোগ নতুন নয়। ২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডায় খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার অভিযোগ আছে ভারতের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার ভার্মাসহ একাধিক ভারতীয় কূটনীতিককে ‘সন্দেহভাজন ব্যক্তি’ হিসাবে চিহ্নিত করে কানাডা থেকে বহিষ্কার করা হয়। তা ছাড়াও ওই একই বছর ৩৮ দিনের ব্যাধানে ‘র’-এর বিরুদ্ধে আরও দুটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালের ৬ মে পাকিস্তানের লাহোরে গুলি করে হত্যা করা হয় খালিস্তানপন্থি কমান্ডো ফোর্সের প্রধান পরেন্জিৎ সিংপানজোয়ারকে। এরপর ১৪ জুন ব্রিটেনের একটি হাসপাতালে খালিস্তান লিবারেশন ফোর্সের প্রধান অবতার সিং খান্ডার রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে। অভিযোগ, ভাড়াটিয়া গুন্ডা লাগিয়ে হিন্দি ফিল্ম স্টাইলে ‘র’ এই হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটিয়েছে।

চব্বিশের ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা হঠাৎ করেই যেন পালটে যায়। এজন্য তারা মোটেই প্রস্তুত ছিল না। তারপর থেকেই ভারত সরকারের সব মেশিনারিজই বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারের ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে ভারতের ‘র’ পূর্ণমাত্রায় তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো, বাংলাদেশের তথাকথিত সুশীল সমাজের কিছু ব্যক্তি, মুখচেনা কিছু সাংবাদিক, কলামিস্ট, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও রাজনৈতিক দলের ভেতর পুনরায় ‘র’-এর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। অতীতের মতোই এই শ্রেণির ব্যক্তিরা ‘র’-এর পারপাস সার্ভ করে যাচ্ছেন। বলা যায়, এসব ব্যক্তি পুরোপুরি ‘ভারতীয় মাউথপিস’ হিসাবে কাজ করছেন। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ‘র’ কিংবা ভারত যা বলতে চায়, এসব ব্যক্তির মাধ্যমে তারা তাই বলিয়ে নিচ্ছে। ‘র’ তাদের এ কাজ আদায়ের জন্য নানাবিধ বরাদ্দ ও প্রলোভন দেখিয়ে থাকে। অন্যান্য অনেক সুবিধা দেওয়া ছাড়াও অর্থ প্রদান, বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া কিংবা সম্মাসূচক খেতাব প্রদানের মাধ্যমে তাদের পক্ষে কাজ করিয়ে থাকেন। মূলধারার গণমাধ্যম, ব্যক্তিগত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, টেলিভিশনের টক শো কিংবা রাজনীতির ময়দানে তাকালেই আমরা ‘র’ তথা ভারতের পারপাস সার্ভ করছেন এমন ব্যক্তিদের সহজেই চিহ্নিত করতে পারি।

শেখ হাসিনার আমলে এতদিন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে বহুবিধ সুবিধা ভোগ করে আসছিল, ভারত বর্তমানে সে পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সর্বজনগৃহীত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসই তাদের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এ কারণে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকার পরিবর্তনের জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি অধ্যাপক ইউনূসকে টার্গেট করে তাদের প্রোপাগান্ডা এমনভাবে সক্রিয় করেছে, যাতে দেশে ও দেশের বাইরে তার গ্রহণযোগ্যতার সংকট দেখা দেয়। অধ্যাপক ইউনূসের অধীন বাংলাদেশে ধর্মীয় চরমপন্থার উত্থান ঘটেছে, বহির্বিশ্বে এমন একটি ধারণা দেওয়ারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। সাম্প্রতিক প্রকাশিত নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটি তাদের প্রোপাগান্ডারই অংশ কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার।

ভারত তাদের হৃতস্বার্থ পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে, বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে কিনা, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। অতিসম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সশস্ত্র ক্যাডার সদস্যের ফেসবুক ওয়াল থেকে জানা গেছে, বিভিন্ন ধরনের প্রায় কয়েক হাজার কার্টন লিথ্যাল এমিউনিশন ডেলিভারি পেয়েছে তারা। ফেসবুকে যে ছবি দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা যায়, এমিউনিশন হলো স্টার বা এমিউনিশন প্যাকেটের ওপর স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে ‘Ammunition Factory Khadki’ এবং আপাতদৃষ্টিতে এমিউনিশনগুলো 12.7x99 ক্যালিবার বলেই মনে হচ্ছে; যা ভারী মেশিনগানে ব্যবহার হয়। খাদকি অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি হলো ভারতের একটি অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান; যা সে দেশের সরকারি ও বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য সফিস্টিকেটেড স্মল আর্মস ও এমিউনিশন তৈরি করে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তপ্ত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে অস্ত্র দেওয়া শুরু হয়েছে কিনা, বাংলাদেশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব যাচাই করতে হবে। অতীতে এ ভারতই কিন্তু তথাকথিত শান্তিবাহিনী সংগঠন করে ১৯৭৫-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়েছে। অতীতের রেকর্ড বলে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সরকার পরিবর্তনে কিংবা তাদের স্বার্থে আঘাত পড়লেই রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ভারত প্রচুর অর্থ ব্যয় করে থাকে।

ভারত মনে করে, অধ্যাপক ইউনূস যতদিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকবেন, ততদিন আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন এবং ভারতের স্বার্থ উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। অতএব যত দ্রুত সম্ভব অধ্যাপক ইউনূসকে সরিয়ে দেওয়া যায়, ভারতের জন্য ততই মঙ্গল। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে চক্রান্ত করেছিল ভারত। মুইজ্জুকে অভিশংসনের লক্ষ্যে মালদ্বীপের ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় ৪০ এমপিকে ঘুসের প্রস্তাব দেয় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’। তবে যথেষ্ট সমর্থন না পাওয়ায় মুইজ্জুকে অভিশংসনের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। সরকার, বিরোধী দল, সামরিক বাহিনী এবং পুলিশকে ৬০ লাখ ডলার ঘুস দেওয়ার পরিকল্পনা করে ভারত। বাংলাদেশেও যে তারা মোটা অঙ্কের অর্থ ঢালছে না, তা কে জানে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারত হয়তো অন্য অপশনও খোলা রাখতে পারে। এ মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অধ্যাপক ইউনূসের নিরাপত্তা। এ ক্ষেত্রে তার জীবননাশের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিণামের কথা চিন্তা করেই অধ্যাপক ইউনূসের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোকে অধিক সতর্ক থাকতে হবে।

একটি বিষয় উল্লেখ করে লেখাটি শেষ করতে চাই। বাংলাদেশ নিয়ে ভারত যত বেশি ভুল-তথ্য পরিবেশন ও প্রোপাগান্ডা চালায়, বাংলাদেশের জনগণ তত বেশি ভারতীয় চক্রান্ত সম্পর্কে সচেতন হওয়ার সুযোগ পায়। সেদিক থেকে বলা যায়, ‘র’ বাংলাদেশের কিছু মুখচেনা ব্যক্তিকে ক্রয় করতে সক্ষম হলেও সাধারণ মানুষ কিন্তু ভারতের চক্রান্তমূলক আচরণের বিরোধিতায় সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন অবসানের পর জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা হেলায় হারালে চলবে না। মনে রাখতে হবে, কোনো ব্যক্তি, দল কিংবা কোনো বহিঃশক্তি নয়, বাংলাদেশের জনগণ যা চাইবে, তা-ই হবে। এদেশের জনগণের কথাই যেন শেষ কথা হয়।

একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, কলাম লেখক

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর