সোমবার   ১৪ এপ্রিল ২০২৫   চৈত্র ৩০ ১৪৩১   ১৫ শাওয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
মার্কিন যুদ্ধবিমানের ওপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মার্কিন কংগ্রেসে বিল উত্থাপন ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন কফিতে মশগুল ব্রিটেনে পলাতক সাবেক মন্ত্রীরা! নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধে বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে ভূমিকম্পে ১৭০ প্রিয়জন হারালেন এক ইমাম ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত ট্রাম্প কি আসলেই তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন লিবিয়ায় অপহৃত ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার দুদিনে নিহত ১৩, চট্টগ্রামের জাঙ্গালিয়া যেভাবে মরণফাঁদ হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থপাচার তদন্তে ব্রিটিশ এমপিদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভেনিজুয়েলার তেল-গ্যাস কিনলেই শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের সাভারে চলন্ত বাসে আবার ডাকাতি, চালক ও সহকারী আটক ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ উসকানিতে প্রভাবিত না হতে বললেন সেনাপ্রধান রেড ফ্ল্যাগ সতর্কতার আওতায় ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এনসিপি নেতা হান্নানের পথসভায় হামলা, আহত ‘অর্ধশতাধিক’ নির্বাচনী ট্রেনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্র্রঙ্কসের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সাবওয়ে ট্রেনে সন্তান প্রসব নিউইয়র্কে আইস পুলিশের বিশাল অফিস উদ্বোধন মেয়রের মামলা প্রত্যাহারে প্রসিকিউটরের পদত্যাগ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশদাতা জন্ম নাগরিকত্ব বাতিল আদেশ আটকে দিল আদালতে নিউইয়র্কে ডিমের ডজন ১২ ডলার নিউইয়র্কে ভালোবাসা দিবস উৎযাপন আমেরিকান বাংলাদেশী টেক কোয়ালিশন’র আত্মপ্রকাশ জামালপুর সমিতির সভাপতি সিদ্দিক ও সম্পাদক জাস্টিস শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশিদের অস্ত্রোপচার বাতিলে কলকাতাজুড়ে হাসপাতালে হাহাকার দি‌ল্লি যাওয়া ছাড়াই পাওয়া যাবে মে‌ক্সি‌কান ভিসা বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন কেউ আপনার স্ত্রীকে ‘হট’ বললে সেটা কি ভালো লাগে, প্রশ্ন সানার পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে পাচারকারীরা বেপরোয়া ছিল শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে সোনার দাম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য কতটুকু সত্য? দিনে মাত্র একবেলা খাচ্ছে গাজার অনেক মানুষ পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে বদলে দেয়া হয় মেট্রোরেলের নিয়োগবিধি যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে দৈনিক ১৩৯ কোটি টাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর চার খাতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হাথুরুসিংহের অপকর্ম ধামাচাপা দেন পাপন ‘ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ আমেরিকার জন্য বিশাল হুমকি হবে’ নীরবে সরবে চাঁদাবাজি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ছাড়াই গুগল ম্যাপ ব্যবহারের উপায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বাইডেনের ভাড়া ফাঁকিবাজদের ধরতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরীকে গুলি করে মরদেহ নিয়ে গেল বিএসএফ ভিসা ফি ছাড়াই এবার পাকিস্তান যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফি আটক সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল সফরে ২৬ ব্যাংক এমডি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সাবেক সেনাপ্রধান ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা দিনের বেলায় মরুভূমির চেয়েও উত্তপ্ত চাঁদ ডেঙ্গুতে একদিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭ ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে ২৬৭ প্রবাসী বাংলাদেশি অক্টোবরের মধ্যেই ‘আন্দোলনের ফসল’ ঘরে তুলতে চায় বিএনপি শর্তসাপেক্ষে নিউইয়র্কে মসজিদে আজানের অনুমতি বাংলাদেশ থেকে বিনা খরচে মালয়েশিয়া গেলেন ৩১ কর্মী খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর নির্দেশ জার্মানে পাঁচ বছর বাস করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব বিএনপি-জাপা বৈঠক সিঙ্গাপুরে বাইডেন প্রশাসনকে হাসিনার কড়া বার্তা এবার হাসিনার পাশে রাশিয়া বঙ্গ সম্মেলনের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্টুডেন্ট লোন মওকুফ প্রস্তাব বাতিল বাংলাদেশিদের ওপর উপর্যুপরি হামলা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা: শেখ হাসিনা তামিমের অবসর অভিযোগের তীর পাপনের দিকে নিউইয়র্কে এখন চোরের উপদ্রুব যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে হাতিরঝিলের ক্ষতি হবেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি, পাঁচ দিনে নিহত ৩৫ যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে বাখমুত থেকে পিছু হটেছে সেনারা, স্বীকার করল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণ ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হবে না, দাবি আবহাওয়া অধিদপ্তরের সুদানে যুদ্ধে সাড়ে ৪ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ পারস্য উপসাগরে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে সারা দেশে ভোগান্তি রুশ হামলা সামলে ফের বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে যাচ্ছে ইউক্রেন রিজার্ভ সংকট, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকারের দুর্বল নীতিও দায়ী পূজার ‘জিন’ একা দেখতে পারলেই মিলবে লাখ টাকা! সিরিয়ায় আর্টিলারি হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল বাইডেন না দাঁড়ালে প্রার্থী হবেন কে নাইজেরিয়ায় ৭৪ জনকে গুলি করে হত্যা ভারতে বাড়ছে করোনা, বিধিনিষেধ জারি তিন রাজ্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন লুলা যে কোনো দিন খুলবে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল দেশে করোনার নতুন ধরন, সতর্কতা বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি মর্মান্তিক, মেয়েটিকে ১২ কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি! স্ট্যামফোর্ড-আশাসহ ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বর্ষবরণে বায়ু-শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যে ধাক্কা কোনো ভুল মানুষকে পাশে রাখতে চাই না বাসস্থানের চরম সংকটে নিউইয়র্কবাসী ট্রাকসেল লাইনে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত একাকার! ছুটি ৬ মাসের বেশি হলে কুয়েতের ভিসা বাতিল ১০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত চুক্তিতে বিয়ে করে ইউরোপে পাড়ি আইফোন ১৪ প্রোর ক্যামেরায় নতুন দুই সমস্যা পায়ের কিছু অংশ কাটা হলো গায়ক আকবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ডলার নারী ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম
১৭

ব্যয়-দুর্নীতি কমিয়ে বিদ্যুতে ভর্তুকি সামালের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০২৫  

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত হিসেবে বিদ্যুতে ভর্তুকি তুলে দেওয়ার চাপের পাশাপাশি প্রতিবছর এ খাতে বিপুল পরিমাণ লোকসানের কারণে সরকারের আর্থিক চাপ বাড়ছে। এই চাপ সামলাতে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করলেও অন্তর্বর্তী সরকার সে পথে না গিয়ে অযাচিত ব্যয় কমিয়ে ও দুর্নীতির লাগাম টেনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এর অংশ হিসেবে পুরনো, অদক্ষ ও ব্যয়বহুল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ ও সিস্টেমলস কমানো, ক্যাপাসিটি চার্জ কমানো, কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সস্তা জ্বালানিকে অগ্রাধিকার দেওয়া, পিডিবি ও অন্যান্য সংস্থাগুলোর অভ্যন্তরীণ ব্যয় হ্রাস, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, সব ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হওয়াসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৬৮২ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়েকটি রেন্টাল, কুইক রেন্টাল এবং আইপিপি কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি করা হবে। এতে এক অর্থবছরে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে আশা করছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।

বিশেষজ্ঞ ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। এতে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়লেও প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাবে চাহিদামতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। আবার প্রাথমিক জ্বালানির সংস্থান নিশ্চিত না করে চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে এসব কেন্দ্রের মাত্রাতিরিক্ত ক্যাপাসিটি চার্জ এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মূলত বিদ্যুৎ খাতে অযৌক্তিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ব্যয়বহুল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ এবং বিনা দরপত্রে কাজ দেওয়ার কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গিয়ে এ খাতে লোকসান এবং ভর্তুকি বাড়তে থাকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। ভর্তুকির লাগাম টানতে দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করেছে বিগত সরকার। এমনকি এক বছরে তিনবার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিরও রেকর্ড আছে। বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দামও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়।

এদিকে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে ডলারে চুক্তি এবং টাকার অবমূল্যায়নের কারণেও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) লোকসান অনেক বেড়ে গেছে। ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ডলারের দাম ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয়ে। দেশীয় মুদ্রা টাকায় বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করতে বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে তাগিদ দিয়ে এলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

আওয়ামী লীগ সরকার দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পরও গত অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ৩৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে দিয়েছে, যার একটি অংশ এসেছে বিশেষ বন্ড থেকে। চলতি অর্থবছরে ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও সংশোধিত বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে মোট ভর্তুকি বরাদ্দ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকা।

আইএমএফের সঙ্গে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তির আওতায় ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি ধাপে ধাপে তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার।

ভর্তুকি কমানোর লক্ষ্যে শেখ হাসিনা সরকার প্রতি তিন মাস অন্তর বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। তবে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত ৮ মাসে এখন পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়নি।

সম্প্রতি আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে এসে ঋণ দেওয়ার শর্ত হিসেবে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য প্রয়োজনে গ্রাহক পর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধির পরামর্শ দিলেও সরকারের পক্ষ থেকে তা নাকচ করে দেওয়া হয়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, ‘অনেক চাপ সত্ত্বেও আমরা বিদ্যুতের দাম বাড়াইনি। এই মুহূর্তে দাম বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেই। নিকট ভবিষ্যতেও বিদ্যুতের দাম বাড়বে না। সরকার অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা এবং খাতভিত্তিক সংস্কারের মাধ্যমে ভর্তুকি কমাতে চায়। এক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হওয়া, কেনাকাটায় স্বচ্ছতাসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে যেগুলোর চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে এবং নতুন করে চুক্তি নবায়নের করার প্রস্তাব আসছে, তার কোনোটিই নবায়ন করা হচ্ছে না বলে জানান ফাওজুল কবির। ৫ আগস্টের আগে যেসব চুক্তি নবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য একটি চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়েছে, যেখানে ইউনিটপ্রতি ট্যারিফ নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ টাকা ৪ পয়সা। সব কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এই রেট বেঞ্চমার্ক হিসেবে কাজ করবে।

উৎপাদন ব্যয় কমাতে অন্যান্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশাপাশি গ্যাস ও তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের শুল্ক পুনর্নির্ধারণের কাজ চলছে। পাশাপাশি, স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (আইপিপি) জন্য ক্যাপাসিটি চার্জসহ শুল্ক কাঠামো পর্যালোচনার লক্ষ্যে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন সব দপ্তরের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

বৈঠকে বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির কারণে বিভিন্ন গ্রাহক পর্যায় ও শিল্পে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ফলে খরচ কমানোর দিকেই মনোযোগী হতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিলাসিতা পরিহার করে বিদ্যুৎ গ্রাহক সেবা বৃদ্ধি ও সম্পর্ক উন্নয়ন করার পাশাপাশি এ খাতে দুর্নীতি কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে অন্যান্য যেসব ব্যয় রয়েছে সেগুলো কমানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এখন থেকে খরচ কে কতটা কমাতে সক্ষম হয়েছে তার ভিত্তিতে সংস্থা বা কোম্পানিগুলোকে মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিদ্যুৎ খাতের ব্যয় সংকোচনের জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) দায়িত্ব দিতে হবে। যাদের পয়সা দিয়ে এই খাত চলে সেই ভোক্তা এবং বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য অংশীজন নিয়ে বিইআরসি একটি কমিটি গঠন করে দিলে তারাই  দেখিয়ে দেবে কীভাবে কোন খাতে অযাচিত ব্যয় ও অপচয় কমানো যায়। কিন্তু তা না করে আমলাদের কথামতো চিঠি চালাচালি করে এই ব্যয় কমানো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে অপচয়, চুরি, লুণ্ঠনমূলক ব্যয় কমানো গেলে ভর্তুকি বাড়ানো নয়, বরং কমিয়ে দেওয়া শতভাগ সম্ভব।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রতি ইউনিটে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ ছিল ৬ টাকা ৬১ পয়সা এবং পাইকারি বিক্রির দর ছিল ৫ টাকা ১৩ পয়সা। ফলে প্রতি ইউনিটে পিডিবির ১ টাকা ৪৮ পয়সা লোকসান ছিল। চলতি অর্থবছরে গড় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২.৩১ টাকা। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য ৭ টাকা ৪ পয়সা। অর্থাৎ এক ইউনিটে ক্ষতি হচ্ছে ৫ টাকা ২৭ পয়সা।

২০০৯ সালে বিদ্যুতের খুচরা দাম ছিল ইউনিটপ্রতি ৩ টাকা ৭৩ পয়সা। গত ১৫ বছরে প্রতি ইউনিটের খুচরা দাম বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা ২৫ পয়সা। দাম বাড়িয়েও লোকসান কমেনি। তাই ভর্তুকির মাধ্যমে এই লোকসান সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরে ভর্তুকি বেড়ে হয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকা।

প্রতিবছর ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থের বড় অংশ ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতেই চলে যায়। বিদ্যুৎ না কিনলেও চুক্তি অনুসারে যে অর্থ দিতে হয় উৎপাদন কেন্দ্র মালিককে, তা ক্যাপাসিটি চার্জ নামে পরিচিত। বর্তমানে চাহিদার চেয়ে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫৪ শতাংশ বেশি। অতিরিক্ত সক্ষমতার কারণে বিদ্যুৎ না কিনেও বিদ্যুৎ বিভাগকে প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হয় ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধে। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের পকেটে গেছে।

এদিকে চাহিদার অতিরিক্ত সক্ষমতার বিদ্যুৎ এখন বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত অর্থবছরের শেষে রিজার্ভ মার্জিন, ক্যাপাসিটি ও সর্বোচ্চ চাহিদার মধ্যে পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৬২১ মেগাওয়াট। বার্ষিক চাহিদা বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হলেও প্রকৃত প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার তুলনায় কম হয়েছে।

আদর্শ রিজার্ভ মার্জিন ২০ শতাংশ হলেও বর্তমানে বাংলাদেশে এটি প্রায় ৪১ শতাংশ, যা বিনিয়োগের সুযোগ ব্যয় বাড়িয়ে তুলছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি ৬.৫ শতাংশের নিচে নামলে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম পুনর্নির্ধারণ করা হবে।

 

সাপ্তাহিক আজকাল
সাপ্তাহিক আজকাল
এই বিভাগের আরো খবর